১.
হাডসন নদীর বুক চিড়ে ফেরিটা এগিয়ে যেতে থাকে। ছাদের ওপর অসংখ্য মানুষের একরকমের হুড়োহুড়ি টের পাওয়া যায়। ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’কে পেছনে রেখে, পাশে রেখে নানা ভঙ্গিতে দূর থেকে ছবি তুলতে চায় সবাই। ফেরি থেকে তোলা ছবিতে স্ট্যাচুর পুরো অবয়ব আর নিজের অবস্থান মিলিয়ে চমৎকার একটা ফ্রেম হয়। সে কারণেই এই সুযোগ সবাই কাজে লাগাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। কেউ কেউ নিজেদের, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে, আবার কেউ শুধুই স্ট্যাচুর ছবি তুলছে, কেউবা ভিডিও করছে। বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ দিচ্ছে বলে মনে হলো। পাশ থেকে তাদের ধারাবিবরণী শোনা যাচ্ছিল।
মামা, এদিকে দাঁড়ান, ওদিকে যান, ছবি তুলে দিই—গোলাপ আমাদের তাড়া দেয়। আমি মগ্ন থাকি প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও বিস্ময় আস্বাদনে। পাশ দিয়ে আরেকটা ফেরি উল্টো দিকে চলে যায়। স্ট্যাচু অব লিবার্টি থেকে ফিরছে তারা। আরেকটি ফেরি যাচ্ছে অন্যদিকে, নিউ জার্সির দিকে কি!
স্ট্যাচুটি নাকি ফ্রান্সের উপহার? অনেকে আবার বলে আমেরিকা চুরি করে নিয়ে এসেছে। কে জানে, হতেও পারে। আমেরিকা তো কত কিছু করে।—গোলাপের মন্তব্য শুনে আমরা হেসে ফেলি। গোলাপও সেই হাসিতে যোগ দেয়।
গোলাপ, মানে গোলাম মোস্তফা গোলাপ নিউইয়র্কে আমাদের গাইড। কোনো কিছুতেই যাতে আমাদের কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে তার সজাগ দৃষ্টি।
ফ্রান্স এটি আমেরিকাকে উপহার হিসেবে দিয়েছে, এটাই তো সবাই জানি।—সেরীন উত্তর দেয়।
আমেরিকায় এত জায়গা থাকতে এই ছোট দ্বীপে কেন স্ট্যাচু বানাতে হলো? ম্যানহাটান, ডাউন টাউন বা অন্য কোনো স্থানেও তো হতে পারত, যেখানে যেতে পানি ডিঙাতে হয় না! প্রশ্নটি মাথায় নিয়ে আমরা ফেরি থেকে নামতে থাকি। মানুষের ভিড় ঠেলে হাঁটতে থাকি ঐতিহাসিক স্ট্যাচু অব লিবার্টির ভেতর–বাহির অন্বেষণে।
আমেরিকার প্রতীক হয়ে ওঠা ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ সঙ্গে ফ্রান্সের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। সেরীনের কথাই ঠিক, মানুষ জানে এবং বিশ্বাস করে স্ট্যাচু অব লিবার্টিটা আমেরিকাকে ফ্রান্স উপহার হিসেবে দিয়েছে। এই কথা সত্য, তবে তার সঙ্গে খানিকটা ‘কিন্তু’ আছে। ‘ফ্রান্স উপহার দিয়েছে’ বললে মনে হতে পারে এটি ফরাসি সরকারের কোনো উপহার। কিন্তু বাস্তবে স্ট্যাচু অব লিবার্টির সঙ্গে রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্সের কিংবা ফরাসি সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। ফরাসি সরকার এর পেছনে কানাকড়িও ব্যয় করেনি। ফরাসি সরকার বা সরকারের কোনো প্রতিনিধি কোনো কিছুতেই সংশ্লিষ্ট ছিলেন না; বরং পুরো কাজটি হয়েছে গণতন্ত্র, সাম্য ও মুক্তচিন্তার কয়েকজন বেসরকারি নাগরিকের চেষ্টায়। প্রকৃতপক্ষে স্ট্যাচু অব লিবার্টির ধারণা এসেছে ফরাসি কয়েকজন চিন্তাবিদের একেবারেই ব্যক্তিগত আড্ডা থেকে।
২.
তাহলে এর সঙ্গে ফ্রান্সের নাম জড়িয়ে গেল কীভাবে?
সেটাই আসলে চমকপ্রদ এক কাহিনি। স্ট্যাচু অব লিবার্টি নামে একটা ভাস্কর্য বা স্ট্যাচু নির্মাণের ভাবনার জন্ম হয়েছিল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দক্ষিণ পশ্চিমের একটি গ্রামে। ফরাসি ইতিহাসবিদ এদুয়ার দে লাবুলে তাঁর গ্রামের বাড়িতে নৈশভোজে ডেকেছিলেন সমমনা কয়েকজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিকে। উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসান এবং উত্তরপন্থীদের বিজয়কে উদ্যাপন করা, একই সঙ্গে আব্রাহাম লিংকনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা।
বারথোল্ডি বেরিয়ে পড়েন জায়গা খুঁজতে। টাইমস স্কয়ার, ম্যানহাটান নানা জায়গা ঘুরে ঘুরেও সন্তুষ্ট হতে পারেন না। ব্যাটারি পার্কে এসে অনেকটা ক্লান্তি নিয়েই বসে পড়েন সেখানে। ব্যাটারি পার্কটাও তাঁর মাথায় এসেছিল।
সেটা ১৮৬৫ সালের কথা। আমেরিকার রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের মাত্র অবসান ঘটেছে। টানা চার বছরের বৈরিতা ও রক্তক্ষয় শেষে আমেরিকা মুক্তচিন্তা, স্বাধীনতা ও উদার সামাজিক পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে সামনের দিকে এগোনো শুরু করেছে। তার আগে টানা চার বছর চলা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল দাসপ্রথা ও রাজ্যের অধিকার নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব থেকে। দক্ষিণের রাজ্যগুলো (কনফেডারেসি) চেয়েছিল তাদের দাসপ্রথাভিত্তিক জীবনধারা রক্ষা করতে। সে জন্য ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজস্ব রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিল তারা। উত্তরের রাজ্যগুলো এটা মেনে নিতে পারেনি এবং ইউনিয়নকে রক্ষা করতে ও শেষ পর্যন্ত দাসপ্রথার অবসান ঘটাতে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সেই যুদ্ধে ইউনিয়ন (উত্তর) পক্ষ বিজয়ী হয়, যা ১৮৬৫ সালের এপ্রিলে কনফেডারেট জেনারেল রবার্ট ই লির আত্মসমর্পণের মাধ্যমে কার্যকরভাবে শেষ হয়। এই বিজয়ের ফলে আমেরিকার অখণ্ডতা রক্ষা পায়, দাসপ্রথার অবসান ঘটে এবং আব্রাহাম লিংকনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন শক্তি সুসংহত হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই মর্মন্তুদ ঘটনা ঘটে, পরাজিত কনফেডারেটপন্থী আততায়ীর গুলিতে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন নিহত হন।
আমেরিকার গৃহযুদ্ধে মুক্তমনা, উদারপন্থীদের বিজয় এবং আব্রাহাম লিংকনের মৃত্যু—দুটিই ফ্রান্সের উদারপন্থী বুদ্ধিজীবীদের প্রবলভাবে নাড়া দেয়। ফরাসি ইতিহাসবিদ এদুয়ার দে লাবুলে এবং তাঁর সমমনা বুদ্ধিজীবীদের যাঁরা উদারপন্থার পক্ষে সব সময়ই কথা বলে থাকেন, তাঁরা আরও বেশি আলোড়িত হন। সে থেকেই তাঁদের এই নৈশভোজে মিলিত হওয়া।
দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই–মেইল: [email protected]
ফরাসি রাজনীতিতেও তখন ঝোড়ো হাওয়া। তৃতীয় নোপোলিয়ানের রাজত্বে উগ্রপন্থীদের উত্থান মুক্তমনা ও উদারপন্থীদের প্রবল ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। প্রকাশ্যে এসব নিয়ে কথাবার্তা বলাও যেন ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে সেই রাতে খাবার টেবিলে বসে ফরাসি এই বুদ্ধিজীবীরা কী আলাপ করেছিলেন, তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। অনেক বছর পর জানা যায়, সেদিনের সেই সন্ধ্যার নৈশভোজেই আসলে আমেরিকার গণতন্ত্র ও উদারপন্থার স্বীকৃতি হিসেবে ফরাসি জনগণের পক্ষ থেকে একটি উপহার দেওয়ার আলোচনা হয়েছিল। ইতিহাসবিদ এদুয়ার দে লাবুলে প্রস্তাব করেছিলেন, এমন একটি স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের, যেটি কালের পরিক্রমায় মাথা উঁচু করে টিকে থাকবে এবং গণতন্ত্রের মহিমা প্রকাশ করবে। কেবল আমেরিকাই নয়, ফরাসিসহ সারা বিশ্বের গণতন্ত্রমনা উদারপন্থী মানুষের চিন্তার প্রতিবিম্ব হিসেবে টিকে থাকবে। বুদ্ধিজীবীদের সেই নৈশভোজে আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নিয়েছিলেন ভাস্কর ফ্রেডেরিক অগাস্ট বারথোল্ডি। লাবুলের সেই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত বাস্তবে পরিণত করেছিলেন তিনি। কিন্তু সে জন্য তাঁকেও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, অনেক চড়াই–উতরাই পেরোতে হয়েছে।
আমাদের ফেরিটা ঘাটে এসে পৌঁছেছে প্রায়। সামনে তাকিয়ে দেখি বিশাল লাইন।
আবার লাইন কেন?
ওরা ফিরতি ফেরি ধরবে।—গোলাপের জবাব।
তার মানে, আমাদেরও আবার লাইনে দাঁড়াতে হবে।
ফেরি থেকে আমি স্ট্যাচুর দিকে তাকাই। মানুষের দিকে তাকাই। স্ট্যাচুর রংটা কি খানিক ভিন্ন রকম লাগছে এখন? ফেরিটা যখন মাঝামাঝি স্থানে, তখন স্ট্যাচুটাকে মনে হচ্ছিল সমুদ্রের সবুজাভ রং নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর এখন যখন একেবারে কাছাকাছি, তখন মনে হচ্ছে আগের রং আর নেই। এখন যেন প্রাকৃতিক একটা সবুজ রং ধারণ করে আছে, সহজ কথায় আমরা যাকে বলি, একেবারে ‘ন্যাচারাল সবুজ’।
৩.
আমেরিকায় এত জায়গা থাকতে এই ছোট দ্বীপে কেন স্ট্যাচু বানাতে হলো? ম্যানহাটান, ডাউন টাউন বা অন্য কোনো স্থানেও তো হতে পারত, যেখানে যেতে পানি ডিঙাতে হয় না! প্রশ্নটি মাথায় নিয়ে আমরা ফেরি থেকে নামতে থাকি। মানুষের ভিড় ঠেলে হাঁটতে থাকি ঐতিহাসিক স্ট্যাচু অব লিবার্টির ভেতর–বাহির অন্বেষণে।
হাডসন নদীর ভেতর এই দ্বীপের নাম ‘বেডলো’র দ্বীপ বা ‘বেডলো’র আইল্যান্ড। ১৯৫৬ সালে লিবার্টি আইল্যান্ড নাম ধারণের আগপর্যন্ত এটি এই নামেই পরিচিত ছিল। এখানে একটি মিলিটারি বেজ ছিল। আমেরিকায় আসা অভিবাসীদের ‘কোয়ারেন্টাইন স্টেশন’ হিসেবে ব্যবহৃত হতো দ্বীপটি। অর্থাৎ ভাগ্যান্বেষণে পৃথিবীর নানা দেশ থেকে নদীপথে আসা অভিবাসীদের প্রথম এই দ্বীপে এনে রাখা হতো, তারপর নেওয়া হতো পার্শ্ববর্তী এলিস আইল্যান্ডে। এখানে রেখে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হতো কারও ছোঁয়াচে রোগ আছে কি না।
‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ প্রতিষ্ঠার পর এর নাম বদলে যায়, নতুন নাম হয় ‘লিবার্টি আইল্যান্ড’। একই সঙ্গে বদলে যায় এই দ্বীপের গুরুত্বও। এটি এখন কেবল পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রই নয়, সারা দুনিয়ায় আমেরিকার অহংকারে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে এটি বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সম্ভাবনার প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পায়। তো, এই আইল্যান্ডেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি কেন নির্মিত হলো! সে আলোচনায় যাওয়ার আগে আমাদের আবারও খানিকটা ইতিহাসের আয়নায় পেছনে তাকাতে হবে।
সেই যে ফরাসি ইতিহাসবিদ এদুয়ার দে লাবুলের গ্রামের বাড়ির নৈশভোজের কথা বলেছিলাম, যেখানে ফরাসি জনগণের পক্ষ থেকে আমেরিকাকে একটি কালজয়ী উপহার দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেই নৈশভোজের পর থেকেই এ নিয়ে ভাবতে ও কাজ করতে শুরু করেন ভাস্কর ফ্রেডেরিক অগাস্ট বারথোল্ডি। একটি বিশালাকৃতির স্ট্যাচু বানানো হবে, যেটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ দেখতে যাবে, ভাববে—এমন একটা চিন্তা মাথায় নিয়ে তিনি পরিকল্পনা সাজান। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দরকার অর্থের। ফ্রান্সে নানা আয়োজনে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টায় নেমে পড়েন। কিন্তু খুব যে সাড়া পান, তা নয়। লাবুলের একটি চিঠি আর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে থাকা তাঁর বন্ধু, পরিচিতজনদের নাম–ঠিকানা নিয়ে তিনি আমেরিকা পাড়ি জমান। এখানে এসে তিনি মুখোমুখি হন নতুন অভিজ্ঞতার। নিউইয়র্কের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, এমনকি রাজনীতিক, কাউকেই যেন তিনি তাঁর পরিকল্পনার ও স্বপ্নের বিষয়টি বোঝাতে পারছেন না। হতাশ হয়ে তিনি শহর ঘুরতে শুরু করেন। ঘুরতে ঘুরতেই তাঁর মাথায় আসে, শেষ পর্যন্ত যদি অনুমোদন পাওয়া যায়, সাড়া পাওয়া যায়, তাহলে তো একটা জায়গা লাগবে। কোথায় বানানো হবে এই বিশালাকার স্ট্যাচু?
বারথোল্ডি বেরিয়ে পড়েন জায়গা খুঁজতে। টাইমস স্কয়ার, ম্যানহাটান নানা জায়গা ঘুরে ঘুরেও সন্তুষ্ট হতে পারেন না। ব্যাটারি পার্কে এসে অনেকটা ক্লান্তি নিয়েই বসে পড়েন সেখানে। ব্যাটারি পার্কটাও তাঁর মাথায় এসেছিল। নদীর পাড়ে পার্ক, ম্যানহাটানেরই একটা অংশ, কিন্তু কী ভেবে ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। ব্যাটারি পার্কে একটা বেঞ্চে বসে পড়েন তিনি। তাঁর মাথায় তখন জায়গার চিন্তা, চিন্তা তহবিল সংগ্রহের। এখন পর্যন্ত কোথাও তেমন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
বারথোল্ডির চোখ যায় সামনে হাডসন নদীটির দিকে। ব্যাটারি পার্ক থেকে কিছুক্ষণ পরপর বোট ও জাহাজ ছেড়ে যাচ্ছে, আসছে অন্য কোনো জায়গা থেকেও। জাহাজের ভেঁপুর শব্দ আসে হাডসনের বুকে উড়তে থাকা পাখিগুলোর মতোই। ওই দিক দিয়ে আরেকটা জাহাজ চলে যাচ্ছে না? কোথায় যায় এত সব জাহাজ!
বারথোল্ডি খেয়াল করলেন, সব কটি জাহাজের আসা–যাওয়া ওই দ্বীপের পাশ কেটে। পেয়েছি! অজান্তেই মনের ভেতর যেন কেউ চিৎকার করে ওঠে। ‘এটাই হচ্ছে পারফেক্ট স্পট’—বারথোল্ডি ফিসফিস করে বলতে থাকেন।
শহর থেকে বেশি দূরে নয়, আবার জায়গাটি থেকে পুরো শহর দেখা যায়। আর দ্বীপের পাশ দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য জাহাজ যায়, সেই জাহাজে অসংখ্য মানুষ যায়। এখানে স্ট্যাচু হলে প্রতিদিনই এই মানুষ স্ট্যাচু দেখতে দেখতে যাবে। আর জায়গাটি তো কেবল নিউইয়র্ক নয়, আমেরিকার একেবারে প্রবেশপথ, সারা বিশ্ব এসে এই জায়গায় আমেরিকার সামনে দাঁড়ায়।
বারথোল্ডি ঠিক করলেন এখানেই হবে স্ট্যাচু অব লিবার্টি। এখন শুধু আমেরিকার, আমেরিকানদের মন গলানো। নিজেকে বেশ হালকা বোধ করেন বারথোল্ডি।
চলবে...