ঘুঙুর

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

ঘুঙুর চেপে ধরে ঝিমু এক রুম থেকে আরেক রুমে যাচ্ছিল। মা চাপা শব্দ শুনেই বুঝলেন ঘটনা কী। শুধু বললেন, ‘আমার দুষ্টু বুড়ি কী করে, আমি কিন্তু সব দেখছি।’ তখন ঝিমু বিখ্যাত হাসিতে ঘর ভরে তুলল। ধরা খাওয়ার পর বাচ্চারা এ হাসি উপহার দেয়। শিশুদের হাসি অমূল্য উপহার।

ঝিমু দৌড়ে এসে মায়ের কোলে মুখ গুঁজে দিল। খক খক হাসি মুখে লেগেই আছে। মা বললেন, ‘চুপি চুপি কোথায় যায় আমার দুষ্টু মা?’

ঝিমু হাসি থামিয়ে বলে, ‘মা, এটা খুলে দাও।’

আরও পড়ুন

ঘুঙুর খোলার জন্য মাকে শক্ত করে ধরে। মা মেয়েকে কোলে শুইয়ে চোখে কাজল দিতে মগ্ন হয়ে যান। কন্যাশিশুদের শৈশব থেকেই সাজগোজের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। ঝিমু চুপচাপ শুয়ে থাকে মায়ের কোলে। মা তার চোখে কাজল এঁকে দেন। মেয়ের চোখে তাকিয়ে মা মুগ্ধ হন। এ মুগ্ধতার খবর কেউ জানে না। মা–সন্তানের হাজার বছরের এ মুগ্ধতা মানবসভ্যতা কত শক্ত করে টিকিয়ে রেখেছে।

বাবা এসে দেখেন ঝিমু চুপচাপ মায়ের কোলে শুয়ে আছে। বাবা এসে পাশে বসলেন। মা বলে উঠলেন, ‘চুপচাপ আছে। বিরক্ত করিও না।’

বাবা বলেন, ‘কই বিরক্ত করলাম? বসতেও পারব না?’

মা বলেন, ‘তোমার অভ্যাস তো আমি জানি, তাই আগেই বলে রাখলাম।’

বাবা উঠতে উঠতে বললেন, ‘ঝিমু আসায় আমার সব সুখ গেল!’

মা চোখ ছোট করে বললেন, ‘মানে?’

আরও পড়ুন

বাবা যেতে যেতে বললেন, ‘ঝিমু আসার আগে তোমার কোলে কার মাথা থাকত?’

মা ইশারা বুঝতে পেরে বললেন, ‘দূর হও বুড়া!’

বুড়া ডাক শুনতে এত শ্রুতিমধুর লাগে, বাবা তা আগে জানতেন না!

*লেখক: ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম থেকে

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]