মা ও মেয়ে

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

টিভি একটা, রিমোট একটা, মানুষ তিনজন। চ্যানেল কয়েক ডজন। সুপ্তি, তার মা ও বাবা টিভি দেখার জন্য বসেছেন। মা ও বাবা বসেছেন দুই প্রান্তে। সুপ্তি সোফায় না বসে মায়ের পায়ের পাশে নিচে বসেছে। বাবা বললেন, ‘সুপু, ওপরে উঠে বসো, ঠান্ডা লাগবে। ফ্লোর ঠান্ডা।’ সুপ্তি ওপরে না উঠে আরও কাঁচুমাঁচু হয়ে মায়ের কাছাকাছি হলো। মা তার চুলে বিলি কেটে দিলেন। টিভিতে নাটক চলছিল। বিজ্ঞাপনের ফাঁকে মা সুপ্তির চুলে বিলি কাটতে কাটতে বললেন, ‘চুলের কী অবস্থা! পাখির বাসা। যত্ন নেই কেন, সুপু?’

সুপ্তি বিরক্ত হয়ে বলল, ‘আমার অত সময় নেই, মা! কোন পাখির বাসা, বাবুই না কাক?’

মা বললেন, ‘একদম বাবার মতো হইছ তুমি, সুপু। তোমার বাবাও একটা গোপাল ভাঁড়!’

সুপ্তি বলল, ‘আমার বাবা ভালো। তুমি পচা!’

বাবা হেসে দিলেন খলবল করে। মা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘তাইলে যা, বাবার পাশে গিয়ে বস। আমার ঠ্যাং ধরে আছিস কেন?’

সুপ্তি আরও জোরে মাকে ধরল। খামচিও দিল মায়ের পায়ে। মা অনুভব করলেন, সুপ্তি হাতে নখ বড় রাখছে। এ বয়সে নখ বড় রাখার শখ মেয়েদের জেঁকে বসে। ঠোঁট লিপস্টিকে রাঙানোর ইচ্ছাও জাগে। শরীর চেনার অদ্ভুত বাসনা জেগে ওঠে।

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

সুপ্তি বলল, ‘মা, চা খাব। ক্ষুধা লাগছে।’

মা উঠলেন। সুপ্তিও উঠল। বাবা দেখলেন, একজন মা তাঁর মেয়েকে ভালোবাসার চুম্বকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। কত গল্প করবে মা–মেয়ে। বাবারা তা থেকে বঞ্চিত।

*ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

আরও পড়ুন