সুপ্তির নাশতা

অলংকরণ: আরাফাত করিম

চা বানাতে গিয়ে সুপ্তির ডান হাত ছ্যাঁকা খাইছে। রুটি বানাতে গিয়ে পাইছে আঙুলে ব্যথা। তরকারি গরম করতে গিয়ে বাঁ হাত পুড়ছে। ব্যাথাও টনটন করছে। নিজে থেকে যে কাজ করতে এসেছে এমন না। বাবা বলেছিলেন মাকে কাজে একটু সাহায্য করতে পারো না সুপু? মা ঠোঁট বাঁকিয়ে বলেছেন সাহায্য! তোমার মেয়ে করবে? মেয়ে হইছে তোমার মতো শক্ত। আমি কাজ করতে করতে মরে গেলেও তোমার মেয়ে কাজে হাত লাগাবে না।

সুপ্তি টিভি দেখছিল। মা ও বাবার কথা শুনে চোখ ঘুচিয়ে ফেলল। কোনো কিছু বলল না। মাকে তেমন সাহায্য করে না এটা সত্য। মাঝেমধ্যে ‘তিতা চা’ বানায়। চিনি দিতে দিতে চা আবার শরবত হয়ে যায়। চা ঠিক চায়ের মতো হয় না। ভাত–তরকারি সে তেমন রান্না করতে পারে না। একবার ভাত রান্না করতে গিয়ে ভাত জাউ বানিয়ে ফেলল। আরেকটু চিনি মেশালে মিষ্টান্ন হয়ে যায় এমন দশা! আরেকবার ভাত কিছু গলে গেল, কিছু শক্ত থেকে গেল। তরকারি রান্না করতে গিয়ে এমন ঝাল দিল যে খেয়ে দুই মিনিট জিব বের করে রাখতে হয়। মা খেয়ে বলছেন ভালো হইছে! বাবা বলছেন ভালো হইছে! তারপর দুজনই চিনি খাইছেন।

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই–মেইল: [email protected]  

মা ঘুম থেকে উঠে দেখলেন সুপ্তি চা করেছে, রুটি বানিয়েছে, তরকারি গরম করেছে। মা বললেন, দেখছ সুপু, রান্না করা কত কষ্টের! তুমি আর তোমার বাবা তা বোঝো না। বাবা টুথপেস্ট এনে মেয়ের হাতে লাগিয়ে দিলেন। সকালটা পারিবারিক ভালোবাসায় মুখর হলো। অবশ্য নাশতাটা তেমন মজার হবে কি না, কে জানে! বেশ কয়েকটা রুটি পুড়ে কালো হয়ে গেছে!  

*ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম