সুপ্তির শখ

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

স্কুলে এসে সুপ্তি ব্যাগ থেকে বের করল জিনিসটা। ঘরে বের করেনি এই ভয়ে যদি মা বা বাবার চোখে পড়ে তাহলে কী হবে! বান্ধবীদের সাথে গিয়ে দোকান থেকে কিনেছে। জমানো টাকা থেকে খরচ করা। প্রত্যেক মেয়ে কিছু টাকা জমা রাখে। হেঁটে বাসায় ফিরবে, রিকশাভাড়াটা জমা রাখবে। দরদাম করে জিনিস কিনবে, কিছু টাকা জমা রাখবে। কেউ টাকা দিল কোনো উপলক্ষে, টাকাটা খরচ না করে রেখে দেওয়ার চেষ্টা করবে।

সুপ্তিও টাকা জমায়। বাবা প্রতিদিন ১০ টাকা করে দেন। কখনো কখনো মাকে কচলিয়ে ফুসলিয়ে পাঁচ বা দশ টাকা নেয়। ঘর থেকে টিফিন নিয়ে যায়। নাশতার টাকাটা বেঁচে যায়। জমতে জমতে সুপ্তির যে টাকা জমা হলো, তা একদম কম না। বাড়িতে লেসফিতা বিক্রেতা এলে সুপ্তি কানের দুল নেবে, চুলের ক্লিপ নেবে, হাতের আংটি নেবে, এটা–সেটা কত কী! কিন্তু দাম দিতে হবে মাকে। মা যদি বলেন, ‘আজকে তোমার থেকে দাও সুপু।’ সুপ্তি বলবে, ‘তাহলে লাগবে না কিছু মা, ফেরত দিয়ে দাও!’ থম থম করে সব দিয়ে দেবে মাকে। মা মেয়ের রাগ দেখে হাসেন। মেয়ে আসলে মায়ের মতো হয়েছে। মা–ও ছিলেন এমনটা!

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

বাবা টাকা দেওয়ার সময় মা বলবেন, ‘প্রতিদিন দিতে হয় টাকা! আজকে দিয়ো না।’

সুপু টাকা নেওয়ার পর চোখ ছোট করে বলবে, ‘আমার বাবা তোমার মতো না মা!’ তারপর হনহন করে বের হয়ে যাবে ঘর থেকে স্কুলের পথে। বাইরে বান্ধবী দাঁড়িয়ে।

স্কুলে গিয়ে ব্যাগ থেকে সুপ্তি হাতের ব্রেসলেট বের করল। খুব সুন্দর একটা ব্রেসলেট। সোনালি রঙের। হাতে পরল। মুগ্ধ হয়ে দেখল। এমন সময় ঢং ঢং করে ক্লাসের ঘণ্টা পড়ল। সুপ্তি তাড়াতাড়ি ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখল। মেয়েদের কত শখ যে থাকে!

*ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম থেকে