লিখিত পরীক্ষা দিয়ে বিয়ে–৪র্থ পর্ব

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
‘আগামীকাল আমি শামীম ভাই এবং ওনার মা–বাবার সঙ্গে আপনার আর পিয়ার বিয়ে নিয়ে আলোচনা করব। দোয়া করবেন, যেন ঘটক হিসেবে জীবনের একমাত্র কেসে সাকসেসফুল হতে পারি।’

একটু আগে বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে লিমাকে বিদায় দেওয়া হলো। না, শামীম ভাই যখন লিমাকে নিয়ে চলে গেলেন, তখন আমি কষ্ট পাইনি বা কান্না করিনি। তবে রিমা যথেষ্ট কান্না করেছে। ওর মতো হাসিখুশি একটা মেয়ে যে এভাবে বাচ্চাদের মতো কাঁদবে, সেটা আমি বুঝতে পারিনি।

গত পাঁচ দিন, দিনের একটা লম্বা সময় আমি রিমার সঙ্গে সঙ্গে থেকেছি। খুব কাছ থেকেই মেয়েটির পাগলামি দেখেছি। সে খুবই অসাধারণ একটি মেয়ে, যার মধ্যে রয়েছে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধ আর ভালোবাসা।

আমি বিদায় নেওয়ার জন্য রিমার কাছে গেলাম। ও চোখ মুছে আমার দিকে তাকাল। আমি স্মিত হেসে বললাম, তো রিমা ম্যাডাম, আমার পাঁচ দিনের পরীক্ষা তো শেষ। এখন কি আমি যেতে পারি?

আমাকে অবাক করে দিয়ে রিমা বলল, আমি কি আপনাকে একটা হাগ করতে পারি?
বলেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই রিমা আমাকে জড়িয়ে ধরল। তারপর শক্ত করে ধরে হু হু করে ডুকরে কেঁদে উঠল। আমি মূর্তির মতো শক্ত হয়ে রইলাম। আমার এখন কী করা উচিত, বুঝতে পারছি না। আমারও কি ওকে জড়িয়ে ধরা উচিত? আসলে আমার মা আর বোনের বাইরে এই প্রথম কোনো মেয়ে আমাকে হাগ করল। আবেগের ঝড় উঠল মনে। যে ঝড়ে চোখ দুটো ভিজে উঠল। রিমা কীভাবে টের পেল জানি না, আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল, মাইগড, আপনিও আমার মতো লিমা আপার জন্য কাঁদছেন? বলেছিলাম না, আপনি ঠিকই কষ্ট পাবেন। দেখলেন, আপনার ধারণা ভুল। আপনি আসলে গন্ডার নয়।

একবার মনে হলো বলি, আমি লিমার জন্য কাঁদছি না। তুমি কাঁদছ বলে আমিও কাঁদছি। কিন্তু কথাটা শুনতে বেশি ন্যাকামো মনে হতে পারে, তাই বললাম না।
রিমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় আসার পর রিমার একটা ইংরেজি টেক্সট পেলাম। রিমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা আমেরিকায়। সে বাংলা বলতে পারলেও লিখতে ও পড়তে পারে না।

‘আগামীকাল আমি শামীম ভাই এবং ওনার মা–বাবার সঙ্গে আপনার আর পিয়ার বিয়ে নিয়ে আলোচনা করব। দোয়া করবেন, যেন ঘটক হিসেবে জীবনের একমাত্র কেসে সাকসেসফুল হতে পারি।’

অলংকরণ: আরাফাত করিম

আমি ভেবেছিলাম রিমা হয়তো পিয়া ও আমাকে নিয়ে মজা করছে। কিন্তু রিমার এই মেসেজ পড়ে বুঝলাম বিষয়টি আর মজার পর্যায়ে নেই। না, এটাকে আর বাড়তে দেওয়া যায় না। এই সমস্যার একটা সমাধান দরকার। আমি দুলাভাই আর আপাকে নিয়ে আমার রুমে জরুরি বৈঠকে বসলাম। যদিও জানি, দুলাভাইয়ের কাছে থেকে আমার সমস্যার সঠিক সমাধান পাব না। তবু বসলাম, যদি অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো কোনো সমাধান পাওয়া যায়, সে আশায়।

দুলাভাই কাগজ–কলম নিয়ে বসলেন। তিনি আমার সমস্যাগুলো শুনলেন এবং কাগজে কিছু নোট টুকলেন। আমার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর দুলাভাই বললেন, তোমার সমস্যা তো অনেক জটিল। তবে ডোন্ট ওরি। তুমি সমস্যা সমাধানের জন্য উপযুক্ত লোকের কাছেই এসেছ।
দুলাভাই এবার আপার দিকে তাকিয়ে বললেন, বাসায় কি কলা আছে? না থাকলে ব্যবস্থা করো। কারণ, কলা ছাড়া কাজ হবে না।

আপা কলা আনতে চলে গেলেন। আমি অবাক হয়ে বললাম, দুলাভাই, আমার সমস্যার সমাধান কি কলার মাধ্যমে করবেন? আপনি কি আমাকে কলাপড়া দেবেন?

দুলাভাই আমার কথার কোনো উত্তর দিলেন না। উনি এখন গভীর চিন্তায় মগ্ন। এ মুহূর্তে দুলাভাইয়ের চেহারা দেখলে যে কারোরই মনে হবে, এই লোক দুনিয়ার সবচেয়ে বড় চিন্তাবিদ। আপা কলা নিয়ে রুমে ঢুকলেন। দুলাভাই আপার হাত থেকে কলা নিয়ে ছিলে খাওয়া শুরু করলেন। আমি অবাক হয়ে দুলাভাইকে বললাম, দুলাভাই, আমি তো ভাবলাম কলাপড়া দিয়ে আপনি আমার সমস্যার সমাধান করবেন। অথচ এখন দেখছি আপনি নিজেই কলা ছিলে খাওয়া শুরু করেছেন!
কলা দিয়ে আবার কী করব? আমি কি কবিরাজ? আসলে হঠাৎ কলা খেতে ইচ্ছা হলো, তাই। আচ্ছা, তোমাকে একটা প্রশ্ন করি, তুমি কাকে পছন্দ করো? রিমাকে নাকি পিয়াকে?
দুজনকেই।
ইমু, তোমার তো চরিত্রে আসলেই সমস্যা আছে।

দুলাভাই, আপনি ভুল বুঝছেন। আমি পছন্দ বলতে অন্য কিছু মিন করিনি। রিমার সঙ্গে গত পাঁচ-ছয় দিন কথা বলার পর বুঝলাম, ও অসাধারণ ভালো এবং প্রাণোচ্ছল একটা মেয়ে। আর পিয়া মেয়েটিও খুবই সহজ–সরল একটা ভালো মেয়ে। তাই বললাম দুজনকেই পছন্দ করি।

দুলাভাই এবার কাগজে কলম দিয়ে হিজিবিজি কী সব আঁকাআঁকি করলেন। কিছু হিসাব করলেন। তারপর বললেন, আচ্ছা, রিমা কি তোমাকে বলেছে সে তোমাকে পছন্দ করে?
না, তা বলেনি। আসলে ওকে নিয়ে আমি কিছুটা কনফিউজড। মাঝেমধ্যে মেয়েটির আচরণ দেখে মনে হয় মেয়েটি আমাকে পছন্দ করে। আবার পরক্ষণেই দেখি, সে পিয়াকে বিভিন্ন অজুহাতে আমার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি আসলে শিওর নই সে কী চায়।

তুমি ওকে সরাসরি জিজ্ঞেস করলেই তো পারো।

সেটা সম্ভব নয়। কারণ, আমি ওকে নিয়ে যা ভাবছি, হয়তো ওর মনে ওসবের কিছুই নেই। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের কথা বলতে গেলে দুজনেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যাব। একটা মেয়ে একটা ছেলের সঙ্গে মুক্তভাবে মিশলেই সেটাকে প্রেম ভাবাটা আসলেই অন্যায়।
তুমি কি পিয়াকে বিয়ে করতে চাও?
না।
তাহলে পিয়াকে সে কথাটা বলে দাও।

সেটাও সম্ভব নয়। রিমার ফাজলামির কারণে পিয়া অলরেডি আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। আমার পক্ষে এমন ভালো মনের একজন মানুষের স্বপ্ন ভেঙে কষ্ট দেওয়া সম্ভব নয়।

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

দুলাভাই কী যেন একটু চিন্তা করলেন, তারপর কাগজে আবার হিজিবিজি কিছু আঁকলেন। একটু হিসাব করলেন। তারপর বললেন, এক কাজ করো, তুমি দুজনকেই বিয়ে করে ফেল।

এই সময় আপা ভুরু কুঁচকে দুলাভাইকে বললেন, দুইটা কলা খেয়ে এতক্ষণ কাগজে এত কিছু লিখে, এত গবেষণা করে, এত হিসাব-নিকাশ করে, তুমি ওরে দুই বিয়ের কুবুদ্ধি দিচ্ছ? এই কুবুদ্ধি দিতে কি এত গবেষণা করতে হয়? আচ্ছা, বলতে পারো তুমি সব সময় মানুষকে কুবুদ্ধি দাও কেন?

এটা কুবুদ্ধি হবে কেন? ইমু যখন দুজনকেই ভালোবাসে…
ওকি তোমাকে বলেছে ও দুজনকেই ভালোবাসে? শোনো, তুমি ওঠো, তোমাকে আর বুদ্ধি দিতে হবে না। এটার যোগ্য তুমি নয়।

আপা দুলাভাইকে একপ্রকার জোর করে রুম থেকে বের করে নিয়ে চলে গেলেন।
পরদিন বিকেলে রিমার ফোন পেলাম। ফোনে রিমা অনেকক্ষণ কাঁদল। রিমার কান্না শুনে খারাপ লাগলেও কান্নার কারণটি জেনে আনন্দ পেলাম। ঘটনা হলো, পিয়ার মা–বাবা পিয়ার সঙ্গে আমার বিয়ের ব্যাপারে অসম্মতি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, বেকার কোনো ছেলের সঙ্গে তাঁদের মেয়ের বিয়ে দেবেন না। আমি মনে মনে পিয়ার মা–বাবাকে ধন্যবাদ দিলাম।

দুই ঘণ্টা পর রিমা আবারও ফোন দিল। এবারও কাঁদল। তবে এবারের কান্নাটা আগের কান্নার চেয়ে অনেক বেশি। আমি বারবার প্রশ্ন করার পরও এবারের কান্নার কারণ কী, সেটা সে আমাকে বলল না।

এরপর বেশ কিছুদিন চলে গেল, রিমার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি নিজে থেকে অনেকবার কল দিয়েছি, কিন্তু প্রতিবারই ফোন বন্ধ পেয়েছি। ঠিক ছয় দিন পর হঠাৎ একদিন মাঝরাতে রিমার একটা টেক্সট পেলাম।

‘আগামীকাল বেলা ১টা ৪০ মিনিটে আমার ফ্লাইট। যদি পারেন, একটু এয়ারপোর্টে আসবেন।’

পরদিন আমি এয়ারপোর্টের ওয়েটিং এরিয়ায় উপস্থিত হয়ে রিমাকে মেসেজ পাঠালাম—‘আমি ওয়েটিং এরিয়ায় বসে আছি।’

ঘণ্টাখানেক পর দেখলাম রিমা ও পিয়ার দুই পরিবার এয়ারপোর্টে ঢুকছে। রিমা ঢুকেই আমাকে এদিক-ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে লাগল। একসময় আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এল। চেহারা দেখে খুবই বিধ্বস্ত মনে হলো ওকে। সেই উচ্ছল মেয়েটির কোনো ছায়াই আমি ওর মধ্যে খুঁজে পেলাম না। পাশের আসনে বসেই রিমা বলল, কেমন আছেন?

ভালো। আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? এত দিন আপনার ফোন বন্ধ ছিল কেন?
রিমা বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। তারপর বলল, আপনাকে অনেক কথা বলার আছে। কিন্তু হাতে সময় নেই। বাবাকে অনেক অনুরোধ করে মাত্র দুই মিনিট সময় পেয়েছি আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্য।

প্রতীকী ছবি

এরপর লুকিয়ে একটা খাম আমার হাতে দিয়ে বলল, এখানে সবকিছু লেখা আছে। এখন খুলবেন না। বাসায় গিয়ে পড়বেন। ভালো থাকবেন বলে রিমা উঠে দাঁড়াল। আমিও দাঁড়ালাম। রিমা ধীরে ধীরে চলে যেতে লাগল। কিছু দূর গিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার তাকাল। তারপর একটা প্রাণহীন মিষ্টি হাসি দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল।

আমি রিমাকে বহনকারী প্লেনটি ফ্লাই না করা পর্যন্ত এয়ারপোর্টেই থাকলাম। বাসায় ফিরে রাত আটটার দিকে রিমার চিঠি নিয়ে বসলাম।

‘ইমু, কেমন আছ? সরি, আমি বাংলা লিখতে পারি না, তাই পিয়াকে দিয়ে লেখাচ্ছি। আমি বলছি, পিয়া লিখছে। ইংরেজিতে লিখতে পারতাম, কিন্তু তুমি বলেছিলে তুমি ইংরেজিতে একটু দুর্বল।

‘আবারও সরি। কারণ, অনুমতি না নিয়ে তোমাকে তুমি করে বলছি।

‘আপুর জন্য পাত্র বাছাই করতে আমেরিকায় বসে প্রথম যেদিন তোমার ছবি দেখেছিলাম, সেদিনই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। প্রথম দেখেই মনে হয়েছিল, এই ছেলেটাকে আমি বহুকাল ধরেই চিনি। মনে হয়েছিল, এই মানুষটা শুধুই আমার। তবে এ কথাটা কাউকে বলতে পারিনি। কারণ, তোমাকে তখন পছন্দ করা হয়েছিল আপুর জন্য।

‘দেশে আসার পর আমার স্টুপিড পরীক্ষার কারণে আপুর সঙ্গে তোমার বিয়েটা ভেঙে গেল, যার কারণে তুমি অনেক অপমানিত হলে। নিজেকে অপরাধী মনে হলো। তাই চেয়েছিলাম পিয়ার মতো একটা ভালো মেয়েকে তোমার জীবনে নিয়ে আসতে। অনেক চেষ্টা করলাম, কিন্তু পিয়ার পরিবার রাজি হলো না। তখন মনে হলো, বিধাতাই হয়তো চাচ্ছেন তোমাকে আর আমাকে এক করতে। যেদিন পিয়ার পরিবার তোমার আর পিয়ার ব্যাপারে না বলল, সেদিনই মা–বাবাকে বললাম আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তারা রাজি হলেন না। প্রথম কারণ, আমার পড়ালেখা এখনো শেষ হয়নি। দ্বিতীয় কারণ, বাবা বললেন, যে ছেলেকে এক মেয়ের জন্য রিজেক্ট করলাম, তার কাছে কেন অন্য মেয়েকে বিয়ে দেব? অনেক কাঁদলাম, অনেক যুদ্ধ করলাম, কেউ রাজি হলো না। তোমাকে জানাব, সেটাও সম্ভব ছিল না। বাবা আমার ফোন নিয়ে গিয়েছিলেন। বলতে পারো আমি অনেকটা গৃহবন্দী। আমি আমার মা–বাবাকে সম্মান করি, তাই এর প্রতিবাদ করিনি। আমাদের আরও কিছুদিন বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল। কিন্তু বাবা আমার কারণে সবাইকে নিয়ে আগেই চলে যাচ্ছেন। লিমা আপা অবশ্য আরও কিছুদিন থাকবেন।

ফাইল ছবি

‘একবার ভেবেছিলাম বাসা থেকে পালাব। তারপর তোমাকে বিয়ে করব। কিন্তু তিনটি কারণে সেটি করিনি।
‘১
‘আমার বয়স সতের বছর নয় মাস। আঠারো বছর হতে আরও তিন মাস বাকি। এই বয়সে পালিয়ে বিয়ে করলে তুমি আইনগতভাবে সমস্যায় পড়বে।
‘২
‘আমার বাবা একরোখা মানুষ। আমি পালালে সে তোমার ও তোমার পরিবারের কাউকেই ছাড়বে না।
‘৩
‘এই ৩ নম্বর কারণটাই সবচেয়ে বড় কারণ। আমি তো তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমি তো এখনো জানিনা তুমি আদৌ আমাকে ভালোবাসো কি না। তুমি আমার ভালোবাসা বোঝো কি না। অবশ্য আমার ভালোবাসা তোমার না বোঝারই কথা। কারণ, তুমি তো নিজেই বলেছ, তুমি গন্ডার। অনুভূতিহীন একজন মানুষ।

‘তুমি যখন এই চিঠি পড়ছ, তখন আমি তোমার থেকে অনেক দূরে, আকাশে প্লেনের ডানায় উড়ছি। তবে আমার মন পড়ে আছে তোমার মনের মাঝে। তুমি কি তা টের পাচ্ছ?

‘তোমাকে যে বলব আমার জন্য অপেক্ষায় থেকো, সেটাও বলতে পারছি না। কারণ, আমি এখনো জানি না তুমি আমাকে ভালোবাসো কি না।
‘একটা কাজ করো। তুমি যদি আমাকে ভালোবাসো এবং তা যদি এখনই আমাকে জানাতে চাও, তাহলে তোমার বাসার ছাদে চলে যাও। তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলো, “রিমা, আমি তোমাকে ভালোবাসি।” আমি প্লেনের জানালায় কান পেতে আছি। তুমি বললে আমি ঠিকই শুনতে পাব।
‘ইতি
‘রিমা।’

রিমার কথামতো আমি ছাদে গেলাম না। কারণ, গিয়ে লাভ নেই। বাড়ির মালিক ছাদে যাওয়ার দরজায় সব সময় তালা দিয়ে রাখেন।

এখন রাত প্রায় বারোটা। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম, দেখলাম জোছনার আলোতে পুরোটা শহর ভেসে যাচ্ছে। কাউকে কিছু না বলে চুপি চুপি বাসা থেকে বের হয়ে পড়লাম। ঠিক করলাম, এখন রমনা পার্কে যাব। তারপর দুলাভাইয়ের দাদার মতো জোছনায় গোসল করব। এরপর ভেজা শরীরে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলব, রিমা আমি তোমাকে ভালোবাসি। দেখি, বিচ্ছু মেয়েটি আসলেই আমার কথা শুনতে পায় কি না।

শেষ।

[email protected]

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন