আপনার ভোট হয়তো বদলে দেবে পৃথিবী

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসফাইল ছবি: রয়টার্স ও এএফপি

আমেরিকার ইলেকশনের মাত্র আর কয়েকটা দিন আছে। এ বছরের ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ, আমরা ২০১৬ সালের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। কেন বলছি, ব্যাপারটা একটু খুলে বলি।

গত ১৫ বছর যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি, ওনারা সম–অধিকারে বিশ্বাসী মোটাদাগে। মানে রেসিস্ট লোক নেই সেটা নয়, কিন্তু ওদের নিয়মকানুন এতটাই কড়া, এই মনোভাব দেখালে চাকরি থাকবে না, এমনটাই বলা আছে। আর নারী–পুরুষ সমান কারণ, যেকোনো সাবস্পেশালিটিতে মেয়েরা ছেলেদের সমান সমান, ভাসকুলার সার্জারি ডিপার্টমেন্টে মেয়ে বেশি। ১৫ বছর সেলিব্রেশনে সারা দিনব্যাপী ওরা একটা হোটেলে অনুষ্ঠান করেছে। মেয়েদের স্ট্যান্ডিং ওভেশন দেওয়া হয়েছে। কারণ, ওদের মতে মেয়েদের বেশি কষ্ট করতে হয়েছে এটুকু পথ পেরোতে। সেই ক্যালিফোর্নিয়াতেও মেয়ে বলে, বিদেশি বলে ২০১৬ সালের পরপর কেউ কেউ ছোট করতে চেয়েছেন, সেটা চোখে পড়ার মতো।

ট্রাম্প নারীদের অসম্মান করেন, জাতিবর্ণ–নির্বিশেষে নারীদের ঘৃণা করেন, ছোট করেন। বিদেশিদের (উনার মতে মাত্র, আদতে আমেরিকা মেল্টিং পট, সুতরাং কে বিদেশি সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ) আবর্জনা বলেছেন এবারের ক্যাম্পেনে। অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্প এলে ট্যাক্স ব্রেক পাওয়া যাবে। এটা ভুল ধারণা। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের ট্যাক্স ৩৫-৪০ পার্সনেট ধরাবাঁধা। আপনি অতিরিক্ত বড়লোক না হলে ট্যাক্স ব্রেক পাওয়া স্বপ্নমাত্র।

এবার আসছি গাজা প্রসঙ্গে। জো বাইডেন যাচ্ছেন তাই ভাবে ইসরায়েলকে সাপোর্ট করে এসেছেন। কিন্তু কমলা হ্যারিস ইসরায়েলকে সাপোর্ট করার পাশাপাশি সিজ ফায়ার, জরুরি ত্রাণ বিতরণ , প্যালেস্টাইনে ইনফ্রাস্ট্রাকচার গঠনেও সাহায্য করবেন। আপনার আমার ট্যাক্সের টাকা শুধু ইসরায়েলে যাক আর অসহায় প্যালেস্টাইনি শিশু, নারী আর মানুষগুলোকে মেরে ফেলতে সহায়ক হোক, এটাই আপনি চান? ট্রাম্পের জামাই ইসরায়েলি, তাঁর চোখের পর্দা নেই, সেটা চার বছরের শাসনামলে আমরা দেখেছি। চাই না সেটার পুনরাবৃত্তি হোক।

ছবি: লেখক
ছবি: লেখকের পাঠানো

সর্বশেষ নিজের খুব পারসোনাল অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি। আমার খুব কাছের বান্ধবী আমেরিকান–চায়নিজ। ওর হাবি সাদা ও কমলা হ্যারিসের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করেছে একসময়। কিছুদিন আগে এক লোক আমার বান্ধবীকে চায়না থেকে কবে এসেছে, চায়নার ভাষা ছাড়া আর কী কী পারে, বাসায় স্টিকি রাইস খায় না বাসমতী–জাতীয়—অনেক কথা বলে ছোট করতে চেয়েছিল। বান্ধবী তার হাবিকে বলাতে সে বলেছিল, ‘সব সাদা মেইল লোকের পক্ষ হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি বউ।’ এমনকি নিজের মেয়ে হওয়ার আগে আগে বান্ধবীকে বলেছিল, ‘সব কষ্ট তো তুমি করছ বউ, আমাদের মেয়ের নাম তোমার লাস্ট নেইম হলেও আমার আপত্তি নেই।’ এটা তো তাঁর পরিবারের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ। কোন এক সময় কেউ একজন আমার নামে অনেক বাজে কথা বলেছিল। শুনে মন খারাপ করেছি। ক্রিসমাসের পার্টিতে বান্ধবীর হাবির সঙ্গে দেখা। বললাম, ‘তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলবে আর? কত বড় প্রসিকিউটর তুমি।’ সে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ‘কিছু সৎ, কর্মঠ, আলোকিত ডাক্তার ছাড়া পুরো রুমে আর কাউকে তো দেখছি না আমি। কার কথা বলছ ফারহানা? কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় নেই, আছে তাঁর হায়ার করা একজন প্রসিকিউটরের সঙ্গে যিনি একজন আলোকিত মানুষ।’

আরও পড়ুন

প্লিজ প্লিজ, ভোট দিন কমলা হ্যারিসকে। পুরো দুনিয়ার ভাগ্য আপনার একটা ভোট বদলে দিতে পারে। আমরা মানুষ হিসেবে মাথা উঁচু করে সৎভাবে বৈষম্যের স্বীকার না হয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন