কথা

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

অফিস থেকে ফেরার পর বাবা ঝিমুকে খুঁজে কোলে নিলেন। সে খাটের এক কোনায় বসে চুপচাপ খেলছিল। বাবা কোলে নিয়েই বুঝলেন, গরমিল হইছে কোথাও। বাবা চুমো দিয়ে বললেন, ‘আমার ছোট মার মুখটা কালো কেন? মা মারছে?’ ঝিমু কিছু না বলে বাবার কাঁধে মাথা এলিয়ে দিল।

বাবা যত আদুরে কথাই বলেন না কেন, ঝিমুর সাড়া নেই। মা মারলে বা বকা দিলে তো ঠোঁট ফুলিয়ে বলার কথা। তেমন কিছু হয়নি। মন খারাপের কারণ আবিষ্কার করতে না পেরে বাবা মায়ের কাছে গেলেন। মা তখন বিকেলের চা–নাশতা তৈরিতে ব্যস্ত। বাবা যখন বললেন, ‘ঝিমুর মুখ কালো কেন? অসুস্থ?’ মা বললেন, ‘জর্দা খেয়ে বমি করছে তিনবার।’ বাবা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘তুমি পান খাওয়াটা কেন ধরলে?’

মা অধিক বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘একটা–দুইটা হঠাৎ খাই। সমস্যা কী? তোমার মেয়ের জ্বালায় ঘরে কিছু রাখাই দায়। কাল টিকটিকির ডিম মুখে দিছে। এখন বলো, টিকটিকির ডিম কেউ খায়?’

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

বাবা ঝিমুকে নিয়ে চলে গেলেন। বিছানায় বসিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘জর্দা খেতে কেমন লাগে মা? তিতা?’

ঝিমু দুষ্টুমার্কা হাসি দিয়ে বলে, ‘না, মিষ্টি মিষ্টি!’

মা পেছনে দাঁড়ানো ছিলেন, তা বাবা খেয়ালই করলেন না। মা বাপবেটির উদ্ভট কথা শুনে রাগে ফায়ার হয়ে বলেন, ‘ভালো করে ছাগলামি শিখাও মেয়েকে!’

অন্য সময় হলে ঝিমু হয়তো জিজ্ঞেস করত, ‘ছাগলামি কী বাবা?’। কিন্তু এখন তা করল না। বাচ্চারা জর্দা খেলে কথা কম বলে, কিশোরী তরুণীরা বেশি বলে।

*ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

আরও পড়ুন