টিকটক ও লাইকি ব্যবহারে বাড়াতে হবে সচেতনতা

টিকটক ও লাইকি স্মার্টফোনভিত্তিক বিনোদনমূলক ভিডিও অ্যাপ। এতে ১৫ সেকেন্ড থেকে ২-৩ মিনিট পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে নানা বিষয়ে ভিডিও তৈরি করা যায়।

টিকটকের যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। এটি ২০১৮ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড করা অ্যাপ্লিকেশন ছিল। টিকটক ভিডিও বাংলা, আরবি, ইংরেজি, হিন্দিসহ প্রায় ৪০টি ভাষায় প্রচলিত। অপর দিকে সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিগো টেকনোলজি ২০১৭ সালের জুলাইয়ে তৈরি করে লাইকি। বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ৩৭টি ভাষায় তৈরি করা যায় লাইকি ভিডিও।

টিকটক ও লাইকির লিডারশিপ বোর্ডে থাকা ভিডিও নির্মাতাদের বয়স ২০-২৫ বছর থাকার কথা থাকলেও কম বয়সী ছেলেমেয়ে বা তরুণেরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছেন অ্যাপ দুটি। সহজে ভিডিও তৈরি করা, নতুন কোনো বাস্তবতা যুক্ত করা, জুম, স্ক্রিন ছোট-বড়, ঝাপসা করা ইত্যাদি খুব সহজেই দর্শককে আকৃষ্ট করে তুলছে।

ভার্চ্যুয়ালজগতে জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য সমাজের তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ ও কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে এগুলো ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। সহজে জনপ্রিয়তা, লাখ লাখ ফলোয়ার, পরিচিতি পাওয়ার নেশায় যেকোনো ধরনের ভিডিও তৈরি করছে তারা। হাস্যরস, নাচগান, লিপ সিঙ্ক, সংলাপ ছাড়াও ধূমপান, পর্নোগ্রাফি, যৌনতা প্রচার, মাদক সেবন ইত্যাদি নিত্যনতুন ভিডিও তৈরি করছেন তরুণেরা।

কোভিড-১৯–এর কারণে শিক্ষার্থীরা লকডাউনে বাড়িতে বসে অবসর কাটাচ্ছে। এতে তরুণদের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এসবের মধ্যে নিজেদের যুক্ত করার। এতে তরুণদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিকৃত মস্তিষ্ক। পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিনের বেশির ভাগ সময় তাঁরা ব্যয় করছে এসব অ্যাপ ব্যবহার করে, যা বর্তমান যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ অনেক দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে এই সবকিছু নিষিদ্ধ করার জন্য দ্রুত সরকারিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। সুন্দর, সাবলীল বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক কার্যকলাপে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিকভাবে অভিভাবক ও সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে।
*লেখক: ফারজানা আফরিন, শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়