জীবনের রং–২
জিম...। শব্দটা এখনো হচ্ছে। রাত পেরিয়ে ভোর হল না কি। মনে হচ্ছে হাঁস চই চই করছে। চোখ দুটি মেলতে ইচ্ছে হলেও খোলা যাচ্ছে না। চোখ মেলতে বুঝি এতো শক্তি লাগে! আমার পাশে কি কেউ কথা বলছে? না কি স্বপ্ন দেখছি। দিলু মিয়া ঘুমের ঘোরে ভাবছে। পাশে আছে রেহেনা, নিশি ও দিলারা। দিলুর একটু নড়েচড়ে ওঠে। দিলারা দিলুর মাথার কাছে যায়। গালেও ব্যান্ডেজ করা। দিলু তাকাতে চেষ্টা করে। রেহেনা বলে,
‘ভাইয়া উঠে দেখো, কারা এসেছে।’
দিলু মিয়া এখন সবকিছু স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু কথা বলতে পারছে না। সে দুজনকে দেখতে পাচ্ছে—রেহেনা ও নিশিকে। দিলারা মাথার কাছে থাকার জন্য মাথা ঘুরিয়ে দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু দিলু এটা বুঝতে পারছে এখানে আর একজন আছে। সে চোখ বুজে ফেলে।
‘কেমন আছেন?’
দিলারা সামনে এসে বলে। দিলু মিয়া তাকিয়ে হাসে। একগুচ্ছ গোলাপ দিলু মিয়াকে দেয়। একটু কষ্ট হলেও দিলু মিয়া গোলাপগুলো নিজের হাতেই গ্রহণ করে।
‘দিলারা এসেছে আমাকে দেখতে।’
এটা ভাবতে দিলুর ভালো লাগছে। সে এখন কী করবে বুঝতে পারছে না। শারীরিক দুর্বলতা তাকে নরম করে দিয়েছে। দিলু মিয়া একবার দিলারার গলার দিকে তাকাল। কিন্তু ওড়না দিয়ে দিলারা যেভাবে গলাটা ঢেকে রেখেছে, এতে গলাতে হার পরেছে কি না, বোঝা যাচ্ছে না। দিলু মিয়ার চাহনি দেখে নিশি বলে,
‘কী ব্যাপার দিলু ভাই, দিলারার দিকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে কী দেখেন?’
দিলু মিয়া হেসে উঠল। দিলারা নিশিকে ধমক দিয়ে দিলুর কাছে এসে বলে,
‘কী হলো?’
‘তোমার ওড়নাটা একটু সরাও না।’
‘কী!’
দিলারা হকচকিয়ে উঠে। দাঁত কটমট করে। দিলু ইশারা করে। দিলারা বলে,
‘আরে গাধা, এটা হাসপাতাল। এটা পেয়ারাবাগান না।’
দিলু ভাবে, ‘কী বোঝাতে চাইলাম, আর কী বুঝল।’ নিশি দিলারার দিকে তাকিয়ে হাসে। দিলারা কিছুটা লজ্জাবোধ করে। দিলু মিয়া তখন একটু আওয়াজ করে বলে,
‘দিলারা তোমার গলা থেকে ওড়নাটা সরাও, আমি তোমার গলাটা দেখতে চাই।’
রেহেনা, নিশি এবং দিলারাও অবাক হয়। দিলারা এখন বুঝতে পারছে, ওড়না সরানোর কথা কেন বলেছিল। দিলারা গলাটা পুরো ফাঁকা করে দিলুকে দেখায়। দিলু মিয়া দিলারার গলাতে তার দেওয়া হার দেখে ভীষণ খুশি হয়। অতি আনন্দে চোখ ছলছল করে।
দিলারা দিলুর চাহনি দেখে সে মিটমিট করে হাসে।
দিলু শুয়া থেকে উঠতে চাইছে। হাতের ওপর ভর করে মাথাটা একটু ওপরে তুলতে গিয়ে আবার শুয়ে পড়ে। রেহেনা বলে,
‘ভাইয়া কী হয়েছে। আমাকে বলো?’
‘আমি একটু বসতে চাই।’
‘কী বলো, এখন না, আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিই।’
ঠিক এমন সময় নার্স আসে দিলু মিয়াকে ইনজেকশন করতে। দিলু মিয়া এখনো না করে। তারপর দিলারা দিলুর মাথাতে হাত বুলাতে থাকে। দিলারার হাতের স্পর্শে দিলুর কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। সে শুয়ে থাকে। পৃথিবীতে ভালোবাসার মানুষের একটু ছোঁয়াতে মনটা কেন জানি নরম হয়ে যায়। দিলু মিয়া ঘুমের দেশে চলে গেছে। নার্স তার কাজ করে ফিরে যায়।
দিলু মিয়া ঘুমে অচেতন। পাশে থাকা রেহেনা, নিশি ও দিলারা চুপ হয়ে বসে আছে। নিশি বলে,
‘অনেক সময় হয়েছে। রাত আটটা বাজে। বাড়িতে যেতে হবে।’
দিলারা বলল, ‘কিন্তু আমার যে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না!’
‘বাহ কী চমৎকার। আগে তো আসতেই চাইছিলে না, আর এখন যেতে চাচ্ছিস না। দিলারা তুই পারিসও বটে।’
‘দেখ নিশি, দিলারা ভাবিকে কিছু বলবে না বলে দিচ্ছি।’
‘কী? দিলারা তোর ভাবি হয়ে গেল? আমারে কেউ ধর, আমি শেষ।’
নিশির কথাতে রেহেনা হাসছে। নিশিও হাসছে। কিন্তু দিলারা একদম চুপ হয়ে বসে আছে।
নিলু মিয়া দুবাই থেকে বাড়িতে চলে এসেছে। বাবা ঘরে শুয়ে আছে। পাঁচ বছর পর বাড়িতে এসেছে নিলু। রাতের বেলা সবকিছু ঠিকঠাক দেখছে না নিলু। বাবার কাছে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। বাবা ঘুমাচ্ছে বলে ডাক দেয়নি। সৎমা বাবার পাশে বসে পান খাচ্ছে। নিলুর সাথে তেমন কিছু ছিল না। শুধু ছোট্ট একটা ব্যাগ ছাড়া। নিলু দেরি না করে সোজা বরাবর ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম হসপিটালে চলে যায়। তার পূর্বেই হসপিটালের রুম নাম্বার, বেড নাম্বার জেনে নেয় মায়ের কাছ থেকে। সিকিউরিটি কাছ থেকে সব তথ্য নিয়ে নিলুর বেডের কাছে চলে আসে।
দিলুর পাশের বেডে দুটি মেয়ে বসা। তাদের চোখে ঘুম ঘুম ভাব। দিলুর পাশে যে মেয়েটি বসা তাকে সে চেনে না। রেহেনা পাশের বেডে বসে আছে। নিলু মিয়া দিলুকে চিনতে পারছে না। কপালে, গালে, বুকে, পায়ে ছোট ছোট ব্যান্ডেজ করা। সে বুঝতে পারে, এটাই দিলু। কত দিন পরে দিলুকে দেখলাম। চোখে পানি চলে আসে। আহারে ভাইটার এই অবস্থা। নিশি তাকিয়ে দেখে নিলু মিয়াকে। সে ভাবে, ‘কে এই ভদ্রলোক?’
নিশি বলে,
‘কে আপনি?’
নিশির কথা শোনে দিলারা তাকায়, রেহেনা চিৎকার করে, ‘নিলু ভাইয়া তুমি।’ বলেই নিলুকে জড়িয়ে ধরে।
‘তুমি চলে এসেছো।’
দুই ভাইবোন জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে। এই দৃশ্য দেখছে হাসপাতাল ভর্তি আরও অনেকে। নিশি ও দিলারা অবাক হয়। পৃথিবীতে ভাই–বোনের ভালোবাসা কিংবা মায়ার কাছে হার মানে সবকিছু। নিলু ও রেহেনা চোখের পানি দেখে নিশি দিলারা চোখ ভিজে যায়। নিলু মিয়া রেহেনাকে সান্ত্বনা দেয়। বলে,
‘কাঁদিস না বোন, আমি তো চলে এসেছি। এবার দেখাবে সব ঠিক হয়ে যাবে।’
দিলুর কাছে যায় নিলু মিয়া। কপালে হাত দেয়। রেহেনাকে বলে,
‘দিলুর কী অবস্থা?’
‘এখন অনেকটা ভালো। ঘণ্টা দুয়েক আগে ঘুমের ইনজেকশন করা হয়েছে।’
‘ও আচ্ছা।’
‘তোমাকে দেখে আমার যে কী ভালো লাগছে ভাইয়া।’
‘ভালো তো লাগবেই। তুই আমার একমাত্র আদরের ছোট বোন না! আচ্ছা ওরা কারা? ওনাদের কে তো চিনলাম না!’
‘ওরা আমার বান্ধবী।’
নিলু মিয়া বড় ভাই বলে এ মুহূর্তে সবকিছু বলল না রেহেনা। আসলে নিশি ও দিলারা কেউ রেহেনার বান্ধবী না। কিন্তু রেহেনা পাশের এলাকার মেয়ে বলে তাদের চেনে–জানে। তা ছাড়া দিলারা তো আরও কাছেরই।
রাত ১০টা পেরিয়ে। নিলু মিয়া দিলারা ও নিশিকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। রেহেনা হসপিটালে থেকে যায়। ভোররাতে দিলুর ঘুম ভাঙে। রেহেনা পাশের বেডে ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ দেখে রেহেনার পাশে একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে আছে। কে সে? দিলু মিয়া আওয়াজ করে বলে, ‘এই কে আপনি?’
লোকটা চলে যায়। এখন দেখে রেহেনার পাশে কেউ নেই। দিলু মিয়ার ভেতরে একটা সন্দেহের বাসা বাঁধে। কে সে? না কি সে ভুল কিছু দেখেছে। হাসপাতালের ভেতরে এমন তো কিছু হওয়ার কথা না। দিলু মিয়া হাত নড়াচড়া করে। এ কি, এখন তো সবকিছু ঠিকঠাক আছে। শরীরে শক্তিও আছে। সে উঠতে চাইছে। হাতে ভর করে বেডের ওপর বসে পড়ে দিলু মিয়া। বাহ কী চমৎকার। শরীরে তেমন কোনো ব্যথাও নেই। তার মানে সে কী সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এমনটা ভাবছে দিলু মিয়া। কিন্তু দিলু মিয়া খুব বেশি ক্ষুধার্ত। সে রেহেনাকে ডাক দিতে গিয়ে, থেমে যায়। না ওকে ডাক দেওয়া যাবে না। এমনিতে সে বেশ কয়েক দিন যাবৎ কষ্ট করে চলেছে। বেডের পাশে ড্রয়ারে ওপর চোখ পড়তে দেখে সাদা প্লাস্টিক ব্যাগে খাবার আছে। ব্যাগটা হাত বাড়িয়ে নিতে গিয়ে একটু ব্যথা অনুভব করে। তারপরও ব্যাগটা কাছে এনে কিছু খাবার খায়। খেতে খেতে পেট ভরে ফেলে। কিন্তু পানি খুঁজে পাচ্ছে না। এদিক–সেদিক তাকিয়ে দেখে কোথাও পানির বোতল নেই। এমন সময় দেখে রেহেনা জেগে ওঠে। দিলুর বসে থাকা দেখে রেহেনা অবাক হয়। বলে,
‘ভাইয়া, তুমি বসে আছো।’
‘রেহেনা, পানি খাব।’
রেহেনা বেডের নিচ থেকে বোতল বের করে দিলুকে পানি দেয়। দিলু ঢকঢক করে প্রায় হাফ লিটার পানি পান করে। রেহেনার হাসি মুখ দেখে দিলুও হাসে। ভোরবেলাতে ভাই বোনের হাসিতে পৃথিবীতে নতুন সূর্যের আবির্ভাব হয়। রেহেনার কাছ থেকে জানতে পারে নিলু মিয়া দুবাই থেকে ফিরে এসেছে। শুধু দিলু মিয়ার জন্য।
সকাল বেলা। বাবার পাশে বসে আছে নিলু মিয়া। বড় ছেলে নিলুকে দেখে বাবা অনেক খুশি। মা মনিরা বেগম বলে,
‘কিরে বাবা, কত দিন পরে দেশে এলে, অলঙ্কারটলঙ্কার কিছু আনলে না?’
‘আসলে মা দিলুর কথা শুনে কোনো কিছু মাথাতে কাজ করেনি। তাই কিছুই আনা হয়নি।’
‘ছোট বোনটার জন্যও কিছু আনলে না? ওরে বিয়াশাদি দিতে হবে না।’
‘আচ্ছা মা এটা পরে দেখা যাবে। আগে দিলু সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক।’
নিলু মিয়া ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানতে পারে, এখন চাইলে দিলুকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে। নিলু মিয়া দিলু মিয়াকে বাড়ির কথা বললে, দিলু মিয়া বলে,
আর একটা দিন পরে যাবে সে।
কেন, তোর কি দুর্বল লাগছে দিলু?
না ভাইয়া, তুমি আজকে দিনটা শুধু আমাকে দাও।
আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে ডাক্তারকে বলি, আগামীকাল রিলিজের কথা। আজকে তাহলে রেহেনা বাড়িতে চলে যাক।
না না, রেহেনা থাকুক, তুমি চলে যাও।
নিলু মিয়া বুঝতে পারে, কিছু একটা গণ্ডগোল আছে হয়তো। সেটা সে বুঝতে পারে। সে ডাক্তারের কাছে চলে যায়।
রাত দুইটা পেরিয়ে। হাসপাতালের ভেতরে সবাই ঘুমাচ্ছে। দিলু মিয়া না ঘুমিয়ে ঘুমের অভিনয় করছে। পাশের বেডে রেহেনা ঘুমাচ্ছে। রেহেনা জামাটা ঠিকঠাক নেই। বুকের ওপর থেকে ওড়নাটা সরে গেছে। হাসপাতালের ভেতরে লাইটগুলো নেভানো। ডিম লাইট জ্বালানো আছে। হঠাৎ দেখে দিলু মিয়া রেহেনার জামাটা বুকের ওপর উঠে এসেছে। রেহেনা ঘুমাচ্ছে। দিলু মিয়া চট করে ওঠে, রেহেনার জামাটা ঠিক করে।
চুপচাপ এদিক সেদিক তাকায়। নিচে তাকাতেই দেখে পুরুষের চটি। তার মানে রেহেনার কাছে কেউ এসেছিলো। আস্তে করে দিলু মিয়া রেহেনার বেডের নিচে তাকায়।
সে দেখে বেডের নিচে কেউ একজন আছে। সাথে সাথে দিলু মিয়া তাকে ধরে বের করে কষে কয়েকটি থাপ্পড় দেয়। রেহেনা উঠে বলে,
‘দিলু ভাই কী হয়েছে।’
‘রেহেনা তুই চুপচাপ বসে থাক।’
মাঝরাতে লাইট জ্বলে উঠে। নার্স ও সিকিউরিটি চলে আসে। দিলু মিয়া লোকটাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। লোকটার সাথে মাঝবয়সী একজন নারী ছিল। সে এসে লোকটাকে ধরে। নিলু মিয়া ছুটে আসে। সে আগেই জানত কিছু একটা হবে। তাই নিলু মিয়া বাড়িতে যায়নি। হাসপাতালের সবাই অবাক!
‘কী হয়েছে? কী হয়েছে?’
এমন প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। সিকিউরিটি দিলুকে হুমকি দিয়ে বলে,
‘আপনি এই লোকটার গায়ে হাত তুলতে পারেন না। তাছাড়া সেও একজন রোগী! কেন তুলেছেন বলুন?’
দিলু মিয়া বলে,
‘তার আগে বলুন ১০৪ নাম্বার বেডের রোগী ১০৯ নাম্বার বেডের কাছে কি করছিল?’
‘কী করছিলেন?’
‘ও আমার বোনের কাছে এসেছিল।’
এই কথা শুনে রেহেনার গা শিউরে ওঠে। সবাই বুঝতে পেরে যায়। নিলুও বুঝতে পারে কেন দিলু আজকের রাতটা থাকতে চেয়েছিল।
দিলারার মা দিলারাকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আর লেখাপড়ার প্রয়োজন নেই। এই মেয়ে বংশের মান ইজ্জত ধুলাময়লার সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। আমেনা বলে,
‘মা তুমি আপার সাথে এমন করতাছো কেরে?’
‘তুই চুপ কর! তুইও একটা নডি অইবে আমার বুঝতে বাকি নাই। বোইন তো বোনের মতোই অইবো।’
‘মা তুমি ইতা কী কইতাছো?’
‘তুই জানস না, তোর বোইন দিইল্লার লগে রংঢং করতো হাসপাতালেও গেছেগা। কতো বড় বেত্তমিছ অইছে।’
ঘরের ভেতর থেকে দিলারা বলে,
‘আমি আর দিলু ভাইয়ের সাথে কথা বলব না। তুমি আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ কইর না মা।’
দিলারার মা চোখ বড় বড় করে বলে,
‘একদম চুপ! তোর কথা হুনতে চাই না। ইস্কুল বন্ধ। আর কোনো দিন ইস্কুলে যাইবার কথা কইলে তোরে কাইট্টা টুরহা টুরহা কইরা গাঙে ভাসাইয়া দিমু।'
‘মা আমার, এত পাষাণ হইয়ো না। সামনে আমার পরীক্ষা।’
দিলারার মা দিলারাকে বকাঝকা করতে করতে কান্না করতে থাকে। দিলারা মায়ের চোখের পানি দেখে আর কিছু বলে না।
মেডিকেল থেকে দিলু মিয়া বাড়িতে ফিরেছে। সবকিছু ঠিকঠাক আছে। কিন্তু রেহেনার শুধু মেডিকেলের কথা মনে পড়ছে। যে মানুষটাকে দিলু মিয়া মেরেছে, সে তো দেখতে একেবারে আমার বাবার বয়সী। সে কীভাবে আমার দিকে কুনজর দিতে পারল! ছি, এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। পুরুষ মানুষ এত খারাপ হয়! এখন আমার মনে পড়ছে, ঘুমের ঘোরে আমার কেমন জানি লাগত। শরীরে মধ্যে আলাদা একটা চাপ অনুভব করতাম। কিন্তু আমি যখন সজাগ হতাম, তখন কোনো কিছু দেখতাম না। মাঝেমধ্যে বুকের ওপরে চাপ অনুভব করতাম। একদিন সালোয়ারটা খোলা পেয়েছিলাম। তার মানে এই বুড়ো এসে আমার ঘুমের ঘোরে, সে আমাকে টাচ করতো। ছি ছি ছি...। দিলু ভাইয়া বিষয়টা বুঝতে পেরেছিল। তাই সে আজকের রাতটা থেকে এই বুড়োর ওপর প্রতিশোধ নেয়। চলবে...