অন্তর নয়ন
আগস্ট ১৭,
বেলা দেড়টা
প্রথম ঘটনা
সবুজ ঘাস আর গাছগাছালিতে ছাওয়া পার্কের মাঝখান দিয়ে সিমেন্টে মোড়ানো আঁকাবাঁকা পথ। স্কুল শেষে হাঁটার জন্য কয়েক দিন ধরে এখানে আসছে বীথি। প্রতি বুধবার ওদের স্কুল এক ঘণ্টা আগেই ছুটি হয়ে যায়। ভরদুপুর। বোধ করি সে কারণেই পার্কটা একদম সুনসান মনে হচ্ছে। অনেক দূরে বৃষ্টির জমা পানিতে কেউ সার্ফ বোর্ড নিয়ে খেলছে। এখান থেকে এর বেশি কিছু বোঝার উপায় নেই। প্রায় ৪০ একর বিস্তৃত এ পার্কে এখন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন মানুষ! বীথি ভাবল, বুধবারে আর পার্কে আসা ঠিক হবে না।
ও হাঁটছিল সোজা রাস্তায়। পাবলিক টয়লেটগুলো পেরিয়ে এসেই আচমকা ধাক্কা খেয়ে পড়ল মাটিতে, তারপর কয়েক সেকেন্ড সব ফাঁকা! সংবিত ফিরতেই যখন বুঝল সে পার্কের রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে আছে, প্রথমে ভীষণ লজ্জা পেল! প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পার্কে হাঁটতে এসে বলা নেই, কওয়া নেই টুপ করে পড়ে গেলে অপ্রস্তুত হওয়ারই কথা। সারা গাঁ ধুলায় মাখামাখি! সেল ফোনটা পড়ে আছে মাটিতে। বাঁ হাত বাড়িয়ে ফোনটা টেনে নিয়ে যখনই উঠতে যাবে, টের পেল ওঠার শক্তি নেই। ডান হাতটা বুকের কাছে ‘ভি’র চিহ্নের মতো ভাঁজ করা। ব্যথায় হাতটা টনটন করছে। শরীরটাকে বাঁ দিকে পাস ফিরিয়ে, কনুইর ওপর ভর দিয়ে টলতে টলতে কোনো রকমে উঠে দাঁড়াল ও। কালো রঙের সুতির কার্ডিগানটা বারবার জড়িয়ে যাচ্ছিল পায়ের নিচে।
দিনটির কথা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠে বীথি! বুড়ো আঙুলের নখের কাছ থেকে দরদর করে রক্ত পড়ছে, রক্ত ঝরছে হাতের তালু থেকেও। মাঝের আঙুল আর তর্জনীর গোড়ার জায়গাটা ফুলে–ফেঁপে একটি মাঝারি সাইজের গোল আলুতে পরিণত হয়েছে। অসহ্য ব্যথায় হাত যেন অবশপ্রায়। অপ্রস্তুত ভাবটা উবে গেলে ভাবল, ‘হেল্প’ বলে চিৎকার করবে কি না? সামলে নিল নিজেকে। ৯১১–কে কল করার ভাবনাটাও নাকচ করে দিল। এ হাত দিয়ে গাড়ি চালানোর প্রশ্নই ওঠে না। দুই হাতের চেটোয় কোনোভাবে ফোনটা ধরে থুতনিতে আঙুল ছুঁয়ে স্বামীকে কল দিল বীথি। কাঁপা গলায় জানাল ‘স্কুলের পর পার্কে হাঁটতে এসেছিলাম, পড়ে গিয়ে খুব ব্যথা পেয়েছি, তুমি একটু আসো।
হাসপাতালে যাওয়ার পথে, আরিফ বারবার জিজ্ঞাসা করল ‘বেশি ব্যথা লাগছে?’ ‘হাতটা একটু সোজা রাখো। এই তো আর পাঁচ মিনিটের পথ।’ বীথির ব্যথার কষ্টটা ড্রাইভিং সিটে বসা আরিফ অনুমান করতে পারলেও চাপা স্বভাবের বীথি এ তীব্র ব্যথা নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে সামনের দিকে দৃষ্টি মেলে ঠায় বসে রইল। আরিফের মনে হলো ব্যথার দরজায় এভাবে তালা মেরে রাখা একমাত্র বীথির পক্ষেই সম্ভব।
পুরো আট দিন স্কুল থেকে ছুটি নিতে হলো বীথির। হাতের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকে ১৪–১৫ দিন! থেরাপির জন্য বারবার হাসপাতালে ধরনা দেওয়ার পরও ভাঙা বুড়ো আঙুলটি এখনো বাঁকা দেখায়। সুস্থ-সবল বীথি কোনো কারণ ছাড়াই কেন হাঁটতে গিয়ে পড়ে গেল? সারা দিন স্কুল সামলে ও কি খুব ক্লান্ত ছিল? নাকি জুতার নিচে কিছু পড়েছিল?
নভেম্বর ১৪
শনিবার, বেলা ১১টা
দ্বিতীয় ঘটনা
দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]
উইকএন্ডের জন্য কাজ জমা অনেক! গ্রোসারি সারার আগে বীথি গ্যারেজে ঢুকেছিল ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের চার্জার খুঁজতে। ক্যালিফোর্নিয়াবাসী অনেকের মতোই বীথিরা গ্যারেজে গাড়ি না রেখে তা ব্যবহার করে বাড়তি রুম হিসেবে। গ্যারেজের ভেতরটা বেশ অন্ধকার। চার্জারটা বের করে গ্যারেজের দরজা দিয়ে ও সামনে ঘুরেছে, মনে হলো পেছন থেকে কে যেন ওকে হ্যাঁচকা টান দিল। পড়তে গিয়েও কোনোমতে নিজেকে সামলে নিল। ছোট মেয়েটি মাঝেমধে৵ মায়ের সঙ্গে এ ধরনের মজা করে; কিন্তু সে–ও তো বেস্টফ্রেন্ড ‘এমিলি’র সঙ্গে খেলতে গেছে! সারা বাড়িতে এখন বীথি একাই! ঘাড় ঘুরিয়ে বীথি যা দেখল, তাতে স্বস্তির বদলে অস্বস্তি বোধ হলো বেশি! কালো কার্ডিগানের কোনা আটকে আছে গ্যারেজের কবজার সঙ্গে! এই মাত্র নিজ হাতে ও কবজা দিয়েছে। তখন তো এমন কিছু দেখেনি সে! হঠাৎ যেন অবসাদ সারা শরীরটাকে গ্রাস করে নিলো। প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ হতে লাগল। স্বামীকে টেক্সট করে অনুরোধ করল, সে যেন ফেরার পথে গ্রোসারিটা সেরে আসে। উইকএন্ডের দুটি দিন ঘরেই কাটাল। রোববার দাওয়াত থাকলেও গেল না।
শেষ মুহূর্তে দাওয়াত ক্যানসেল করায় বীথির স্বামী আরিফ একটু অসন্তুষ্টই হলো। কারণ, হিসেবে বীথি পায়ে ব্যথা পাওয়ার অজুহাত দিলেও কোনো রকম ব্যথার চিহ্ন আরিফের চোখে পড়ল না।
বারবার পড়ে যাওয়ার কারনে বীথি শারীরিকভাবে যত কষ্টই পাক না কেন, ওর মনের অস্থিরতা ওকে আরও বেশি বিচলিত করে তুলল। এবার বীথি ডাক্তারের কাছে গেল না বটে; কিন্তু দেহের অবসাদ কাটাতে তিন–চার দিন সময় লাগল। বীথি না চাইলেও সেদিনের সেই হ্যাঁচকা টানের বিচ্ছিরি অনুভূতিটা ওর বারবার মনে পড়ল। ব্যাপারটা আরও ভয়ংকর রূপ নিয়ে ওর স্বপ্নে হানা দিতে লাগল। আরিফ লক্ষ্য করল বীথি ঘুমের মধে৵ হঠাৎ কেঁপে উঠছে।
উইকএন্ড এলে বীথি আর আরিফ মিলে সাধারণত বাড়ির আশপাশে দু–তিন ব্লক হেঁটে আসত। আরিফের শত অনুরোধ সত্ত্বেও পার্কে পড়ে যাওয়ার পর বীথি আর হাঁটতে যায়নি। আরিফ বুঝল বীথির মনে ভয় ঢুকেছে, কম আঘাত তো পায়নি। আরিফ লক্ষ করল, বীথি আর আগের মতো ছোটাছুটি করে কাজও করে না। এই তো গত শনিবারে গ্যারেজ থেকে এটা–সেটা এনে দেওয়ার জন্য বীথি আরিফকে তিন–চারবার ডেকে পাঠাল। দুপুরে আরিফ গ্যারেজ থেকে টুলবক্সটা আনতে বললে বীথি উত্তর দিল, ‘আমি বড্ড টায়ার্ড।’ মেয়ে সুনিভা আস্তে ফোড়ন কাটল, ‘মা তুমি কি এই দিনদুপুরে গ্যারাজে যেতে ভয় পাচ্ছ?’ বীথি কোনো শব্দ না করলেও ওর মুখে অস্থিরতার ছোঁয়া আরিফের চোখ এড়াল না। আরিফের মনে প্রশ্নের পাহাড় জমা হলেও ও জানে, কোনো ব্যাপার বীথি যখন 'প্রাইভেট' রাখতে চায়; আরিফ তখন ঘাম, চোখের জল বা রক্ত যা–ই ঝরাক না কেন, বীথি কিছুতেই মুখ খুলবে না।
এপ্রিল ৭
বেলা দুইটা
তৃতীয় ঘটনা
স্কুল ছুটির পর ছেলেমেয়েরা ক্লাস টিচারকে অনুসরণ করে সারিবদ্ধভাবে গেটের দিকে এগিয়ে যায়। এদিনও নিয়ম মেনে ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে যাচ্ছিল। স্কুল বিল্ডিংয়ের কোনায় এসে বাঁ দিকে মোড় নেওয়ার সময় ক্লাসের সবচেয়ে শান্ত মেয়ে ‘ফিবি’ আচমকা চাকায় গড়ানো ব্যাকপ্যাকটি ঠিক বীথির সামনে এনে হ্যাঁচকা টান দিল। বীথির পরনের কালো সোয়েটারের নিচের কোনাটা যেন জীবন্ত হয়ে জড়িয়ে গেল ব্যাগের চাকায়! পরক্ষণেই নেমে আসা কার্ডিগানের টানে, হাতে ও বুকের কাছটায় প্রচণ্ড চাপ অনুভব করল ও। দড়াম করে পড়ল মাটিতে। নিজের ক্লাসের স্টুডেন্টদের মাঝখানে নিচে পড়ে আছে ও! যারপরনাই অপ্রস্তুত অবস্থা! হতচকিত ফিবি চোখের দৃষ্টি আড়াল করে জড়োসড়োভাবে হাত বাড়িয়ে দিল। ফিবি ও অন্যান্য স্টুডেন্টের হাতে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াল বীথি। মাথা ও চোখের ইশারায় কাউকে ঘটনাটা না জানাতে অনুরোধ করল ছাত্রছাত্রীদের। ...প্রথমে ব্যথা তেমন তীব্র মনে না হলেও ক্রমে তা অসহ্য হয়ে উঠল। রাতে বাধ্য হলো ইমার্জেন্সিতে যেতে!
পরের দিন থেকে বসন্তকালীন ছুটি। প্রায় পুরো তিন দিন বিছানায় লম্বাভাবে শুয়ে কাটাতে হলো বীথিকে। আচমকা আঘাতে হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে না গেলেও টান পড়েছে বিপজ্জনকভাবে। শুয়ে শুয়ে বীথি অনেক ভাবল। দ্বিতীয় বার পড়ার পর ওর এক কাজিনকে বারবার পড়ে যাওয়ার ব্যাপারটা জানাতে কাজিন সতর্ক করে বলেছিল, ‘শোনো সারাক্ষণ স্কুল-সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকিস না, নিজের দিকে খেয়াল দে, তোর উচিত ডাক্তারকে পড়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো জানানো।’
জানিয়েও ছিল বীথি। গলায় কৌতুকের রেশ মিশিয়ে ডাক্তার রুবেন প্রশ্ন ছোড়েন, ‘কি টিচার, তুমি নিশ্চয় পড়ে গিয়ে মহাকর্ষণ শক্তি প্রমাণ করতে চাইছ?’ তারপর আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘এই গত মাসে তোমার ইয়ারলি চেকআপ করা হলো, তোমার সব রিপোর্টই ভালো। তাই মনটা আর কালো করে রেখো না।’
‘কালো’ শব্দটা বীথিকে বাধ্য করল সময়ের বিপরীতে হাঁটতে। আশ্চর্য, ও যতবারই পড়ে ব্যথা পেয়েছে, ততবারই ওর গায়ে কালো সোয়েটারটি ছিল। এ সোয়েটার কেনার আগে তো কখনো এভাবে ব্যথা পায়নি? বীথি শীত-গ্রীষ্ম সারা বছরই ওর টপসের ওপর কাপ্তান বা কার্ডিগান–জাতীয় কিছু গায়ে চাপায়। এগুলো সাইজ, ডিজাইন ও লম্বায় অনেকটাই কালোটার মতন। কিন্তু কেবল এই কালো সোয়েটারটা গায়ে চড়ালেই কেন এ বিপদ ঘটছে?
‘রাতের আঁধার’ দিনের ফরসা আলোকে ঢেকে দিয়ে যেমন সবকিছু রহস্যময় করে তোলে। কালো সোয়েটারটাও কি ওর গায়ে ভর করে ওকে বারবার ঠেলে দিচ্ছে অশুভ পরিস্থিতির মাঝে? এর শেষ কোথায়? বীথি এখন কী করবে?
সেদিন বিকেলেই আরিফ ঘোষণা দিল ডোনেশনের কাপড় আলাদা করে রাখতে। অফিশিয়াল ট্যুরে সানদিয়াগো যাওয়ার পথে ও স্যালভেশন আর্মিতে কাপড়গুলো নামিয়ে যাবে। তাই তো! অমঙ্গল বিদায়ের উপায় বাতলানোর জন্য জন্য বীথি নীরবে স্বামীকে অনেক ধন্যবাদ দিল। সবার অগোচরে দ্রুত হাতে বীথি অন্য সব পুরোনো কাপড়ের সঙ্গে কালো সোয়েটারটিও পুরে দিল সিঁড়ির নিচে রাখা ডোনেশনের জন্য নির্ধারিত ঝুড়িটিতে।
শুক্রবার রাত প্রায় ১১টা। বীথির জন্য সপ্তাহের সেরা সময় এটা। শনি ও রোববার স্কুল বন্ধ! সুনিভাকে ও নামিয়ে দিয়ে এসেছে ওর বান্ধবীর বাসায়। আজ রাতটা সে ওখানেই কাটাবে। এমিলিও মাঝেমধে৵ আসে সুনির সঙ্গে উইকএন্ড কাটাতে। আরিফের কাজ শেষ হতে দেরি হয়ে যাওয়ায় ও জানিয়ে দিয়েছে পরদিন ফিরবে।। বীথি ঘণ্টাখানেক গল্প জুড়ল তার কাজিনের সাথে, বুধবার রাতে আরিফের এক বন্ধু হঠাৎ আসার কথা জানালে ও চটজলদি কেমন আয়োজন করেছিল, তার বর্ণনা দিল।
বীথি লেখালিখি করতে পছন্দ করে, গত কয়েক মাস কিছুই বেরোয়নি ওর কলম দিয়ে। আজ সে এসে বসল ওর ছোট্ট স্টাডিরুমে। টুলের ওপর পা তুলে দিয়ে কিবোর্ডটি টেনে নিল। ছয় মাস আগে শুরু করা গল্পটা আজ কি পারবে শেষ করতে? ঠান্ডায় মাঝেমধে৵ ওর আঙুলের ব্যথা মনে করিয়ে দেয়, পড়ে যাওয়ার ঘটনার কথা; কিন্তু ওর টাইপের গতির তোয়াক্কা না করে টেবিলের ওপরে দাঁড়ানো কালো বেড়ালের আকৃতির ঘড়িটি রাতকে টেনে নিতে লাগল গভীর থেকে আরও গভীরে।
বীথির হাতের টোকায় ডেস্কটপের কিবোর্ডে একঘেয়ে শব্দ ওঠে, র্যাট এ ট্যাট ট্যাট, যেন অশুভ কোনো সুর আছড়ে পড়ছে ঘরের দেয়ালে দেয়ালে। বীথি এখন প্রায় গল্পের শেষ প্রান্তে। যতই চাইছে শেষটা শুভ হোক, কেন যেন কল্পনা চাইছে বিশ্রী কিছুই ঘটাতে। হঠাৎ দুম দুম শব্দে বীথি আঁতকে উঠল। সামনের যন্ত্রবিড়াল, সাদা-কালো চোখ দুলিয়ে জানান দিল রাত আড়াইটা বাজে! আবার মৃদু দুম দুম শব্দ। শব্দটা দেয়ালে সাঁটা ক্লোজেট থেকেই আসছে, মৃদু হাসি ফুটল বীথির শুকনা ঠোঁটে। সেই রাতে তাড়াহুড়া করে ঘর গোছাতে গিয়ে বীথি হাতের কাছে যা পেয়েছে, তা–ই ঠেলেঠুলে ক্লোজেটে সেটেছে। তাই ভার আর সামাল দিতে না পেরে অতিরিক্ত জিনিসগুলো এখন বেরিয়ে আসতে চাইছে।
হঠাৎ গোঙানির মতো শব্দ হলো, ক্যাচক্যাচ শব্দ তুলে খুলে গেল ক্লোজেটের দ্বার। বীথির মনে হলো ক্লোজেট থেকে মিশমিশে কালো একটা কিছু বেরিয়ে এলো বুকের ওপর ভর করে! বোতামের মতো গোল চোখে চারটি গর্ত! সাটিনের পাড়ের মতো লকলকে জিহবা ঝুলে পড়ছে বিচ্ছিরিভাবে। যেন ছোটবেলায় দেখা কালী প্রতিমার লাল জিহ্বাটি তার সামনে প্রসারিত! অসাড় হাত বাড়িয়ে কোনোরকমে মাইনাস পাওয়ারের চশমাটা নাকে উঠাল বীথি। ওর হার্টের ধক ধক শব্দ যেন পুরো ঘরটাকে দোলাতে শুরু করল। ক্লোজেটের দরজার ফাঁক গলিয়ে এক হাত ছড়িয়ে পৈচাশিক হাসি নিয়ে উঠে আসছে একদিন আগে ডোনেট করা সেই সর্বনাশা কালো সোয়েটার!
লেখক: শবনম চৌধুরী, এলিমেন্টারি স্কুল টিচার, ক্যালিফোর্নিয়া, আমেরিকা