আগামীর বাংলাদেশে রাষ্ট্র সংস্কারে প্রবাসী শিক্ষার্থী ভাবনা–২
...পর্যটন শিল্পেও আমাদের দেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। বাইরের বিভিন্ন পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য আমাদের দেশের ব্র্যান্ডিং বাড়াতে হবে।
নিপীড়নমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। সবার মতামতের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। তবে সোশ্যাল মিডিয়া বা পত্রপত্রিকায় এমন কিছু প্রকাশ করা যাবে না, যা অন্য কারও কোনো অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারে। এ ছাড়াও অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যা কোনোভাবে কাম্য নয়। গণমাধ্যমের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমগুলোকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না রেখে কোনো একটি ট্রাস্টের অধীনে নিয়ে যেতে হবে। জনগণ তাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতি মাসে এ ট্রাস্টে টাকা প্রদান করবেন। এতে করে গণমাধ্যমগুলোতে গণমানুষের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। ইউরোপের অনেক দেশে মিডিয়াগুলো এভাবে তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতি এ যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন করে সাজাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের বিপক্ষে এখন চীন ও রাশিয়ার জোট আরেকটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে। বিশ্ব এখন আবারও কয়েকটি মেরুতে ভাগ হতে চলেছে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বেশিরভাগ আসে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশের মানুষের কাছে পছন্দের গন্তব্যের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ডেনমার্ক, সুইডেন যেগুলোর প্রতিটি পশ্চিমা দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও মালয়েশিয়া এখনো দেশের নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। তাই পশ্চিমের সঙ্গে অথবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হলে তা আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন ও জাপান সবচেয়ে বড় অংশীদার। বিভিন্নভাবে এ দুই দেশ আমাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে থাকে। চীনের সঙ্গে জাপানের বৈরিতা রয়েছে। আমরা এ দুই দেশের ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে পারব না। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ। একেবারে কোনো দেশের দিকে হেলে পড়া যাবে না। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হবে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। তবে বহু মেরুর বিশ্বে আমরা কতটুকু স্বকীয় পররাষ্ট্র নীতি বজায় রাখতে পারব, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
ভারত আমাদের প্রতিবেশী। উত্তর, পূর্ব, পশ্চিম এমনকি দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরেও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ রয়েছে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্টের পূর্বে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান এক দেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও ভারতের অবদান অস্বীকার করার মতো নয়। এ ছাড়া ভারত দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল সুপারপাওয়ার। সামরিক দিক থেকে যেমনভাবে দেশটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারত পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তর অর্থনৈতিক শক্তি। বিশ্ব রাজনীতিতে ভারত ও তুরস্ক এখন দুই প্রভাবশালী রাষ্ট্র। ভারতকে আমরা কোনোভাবে ফেলে দিতে পারব না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ভারতের ওপর নির্ভরশীল। যেহেতু বাংলাদেশ একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র এবং ভারত একটি বৃহৎ রাষ্ট্র, তাই ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে অসামঞ্জস্যতা থাকবে এটা স্বাভাবিক। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হতে হবে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের সম্পর্ক যেমনটি হয় তেমন। সেভেন সিস্টার্সের রাজ্যগুলোর নিরাপত্তার জন্য ভারত আমাদের দেশের মুখাপেক্ষী। ভারতের নীতি-নির্ধারকদের বাংলাদেশ তো বটে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে তাঁদের পররাষ্ট্রনীতি নতুন করে সাজাতে হবে। ভারতকে বুঝতে হবে যে ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সম্পর্ক হবে জনগণের ওপর ভিত্তি করে, কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের দিকে তাকিয়ে নয়। ভারত গ্লোবাল সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখে এবং ভারতের মধ্যে সে সম্ভাবনা প্রবল। ভারতকে বুঝতে হবে, প্রতিবেশি দেশগুলোর জনগণের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করে ভারত কোনো দিন এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না। একই সঙ্গে বিগত সাড়ে ১৫ বছরে ভারতের সঙ্গে যে সকল দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে, সেগুলোকে আপাতত সাসপেন্ড করতে হবে। এ সব চুক্তিকে পুরনায় বিবেচনা করতে হবে এবং চুক্তির যে সকল ক্লজ বা ধারা এ দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থের বিপক্ষে সেগুলোকে বাতিল করে দিতে হবে। কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে ভারত থেকে আমাদের ন্যায্য পাওনা আদায় করতে হবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের কূটনৈতিক সখ্য বাড়াতে হবে। যদি প্রয়োজন হয় মিয়ানমার সীমান্তে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ সামরিক শক্তির ব্যবহার করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সহায়তা ছাড়া রোহিঙ্গাদের কখনো আরাকানে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না।
আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। আইনের চোখে সবাই সমান। সব জায়গায় জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। গত সাড়ে ১৫ বছর যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িয়েছিলেন, তাঁদের জন্য আলাদা কমিশন গঠন করতে হবে এবং তাঁদের দ্রুত বিচারের আওয়াতায় আনতে হবে। যাঁরা বাইরের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গিয়েছেন, কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। যাঁদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে না, কমিশনের মাধ্যমে তাঁদের অপরাধের বিষয়টি লিপিবদ্ধ রাখতে হবে যাতে তা ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে না। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা চলবে না।
নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্র সংসদগুলোতে নির্বাচন হতে পারে, তবে সেটা কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নয়। পিএইচডি ও স্বীকৃত জার্নালে পাবলিকেশন ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এ ছাড়া কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চান, তাহলে মাস্টার্স পাসের পর প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁকে কোনো শিক্ষকের অধীনে গবেষণায় অংশ নিতে হবে। প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে সেকেন্ডারি স্কুলসহ সকল পর্যায়ে শিক্ষকদের বেতন বাড়াতে হবে। শিক্ষকদের গুণগত মান বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। তাঁরা এ জাতির কারিগর। বিসিএস পরীক্ষার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন ফরেন অ্যাফেয়ার্সে যাঁদের পছন্দ, চান তাঁদের মধ্য থেকে যদি কারও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ওপর পড়াশোনা থাকে বা এ–সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে তাঁকে চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। প্রয়োজনবোধে প্রতিটি আলাদা ক্যাডারের জন্য কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পৃথক পরীক্ষাপদ্ধতির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
নীতিনির্ধারকদের নিশ্চিত করতে হবে যেসব নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। কোনো বিশেষ পরিচয় কোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হতে পারে না। এ বিষয়টি সবার প্রথমে উল্লেখ করা উচিত ছিল। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ অথবা যাঁদের বেড়ে ওঠা একেবারে প্রান্তিক কোনো পরিবারে বা বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর যাঁরা স্থায়ী বাসিন্দা তাঁদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য কোটা রাখা দরকার। প্রতিবন্ধীদের কোটাও শতকরা এক ভাগ থেকে আরেকটু বাড়িয়ে দুই ভাগ করা যেতে পারে।
আরও একটি বিষয় যেটা নিয়ে নীতিনির্ধারকেরা এখনো তেমনভাবে চিন্তা করেনি। বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। ফলে দেশে প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৬০ সালের পর এ দেশে তরুণ প্রজন্মের তুলনায় প্রবীণরা সংখ্যায় হবে অনেক বেশি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের তুলনায় প্রবীণেরা সংখ্যায় বেশি। এর ফলে প্রতিবছর যত সংখ্যক মানুষ অবসরে যাচ্ছেন, সেটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন করে ট্যাক্স পেয়ার তৈরি হচ্ছে না। কল-কারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সার্ভিস খাত কর্মী সংকটে ভুগছেন। ফলে এ সকল দেশের অর্থনীতিতে বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। স্পেন ও পর্তুগালের মতো ইউরোপের অনেক দেশ এ সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটাতে আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসী নিচ্ছে। ইউরোপের মতো আমরা কী বাইরের বিভিন্ন থেকে অভিবাসী এনে অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে সামাল দিতে পারব কি না, সে প্রশ্ন থেকে যায়। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কোনোভাবে যাতে ১.৫ এর ওপরে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তরুণদের বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং মাদক দ্রব্যের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।
এ ছাড়া কিছু বিষয় আছে, যেগুলো না লিখলে নয়। বন্যা, নদীভাঙন, লবণাক্ততা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের কিছু জমি প্রতিবছর বসবাস ও চাষের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা দেশের ভবিষ্যৎ অস্তিত্বের জন্য এক বড় হুমকি। এ বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার যাতে একটি টেকসই সমাধানের দিকে আমরা এগোতে পারি।
১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারত। দুর্ভাগ্যবশত এরশাদের পতন ছাড়া আমরা এ গণঅভ্যুত্থান থেকে তেমন কোনো কিছু অর্জন করতে পারি নি। রাষ্ট্রপতি এরশাদ ক্ষমতা ছেড়েছেন ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর। ওই সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রধানত তিনটি জোট ছিল। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থীদের নেতৃত্বাধীন পৃথক ওই জোট তখন পরিচিতি পায় ‘তিন জোট’ হিসাবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে তিন জোট একটি রূপরেখা তৈরি করে। পরবর্তী সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে, সেটাই ছিল এ তিন জোটের রূপরেখার মূলকথা। সেই রূপরেখা সম্পর্কে দেশের নতুন প্রজন্মের বেশির ভাগ মানুষ খুব একটা জ্ঞাত নয়। কেননা, ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত যে সকল রাজনৈতিক দল এ দেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের কেউই এ রূপরেখা বাস্তবায়নে কার্যত উদ্যোগ দেখায়নি।
অতীতের সকল ভুল থেকে তাই আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা রিয়া গোপের মতো যাঁরা বুকের রক্ত দিয়ে এ বিপ্লবকে সফল করেছেন তাঁদের রক্ত যাতে বৃথা না যায় সে দিকে আমাদের সবার প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে। এখন একটি ক্রিটিক্যাল জাঙ্কচারের মধ্যে আমাদের দেশ দাঁড়িয়ে আছে এবং এখনই রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হলে, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে না। নতুন বাংলাদেশ হবে সকলের বাংলাদেশ। এ দেশে ধনী-গরীবে কোনো বৈষম্য থাকবে না। নতুন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলে কোনো শব্দ থাকবে না। রাজনৈতিক মতাদর্শ বা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কাউকে কোনও ধরনের হেয় প্রতিপন্নের শিকার হতে হবে না। এ দেশ হবে সব মানুষের। জানি সব কিছু একদিনে অর্জন করা সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে জমে থাকা মরিচা সাফ করাটা মোটেও সহজসাধ্য নয়। আমাদের ধীরগতিতে ক্রমাগত পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মধ্য দিয়ে কণ্টকাকীর্ণ বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হবে। দেশকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসতে শিখি এবং একটি সুন্দর বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে এখন থেকে কায়মনোবাক্যে একযোগে কাজ করতে শুরু করি। রাষ্ট্রীয় সংস্কারের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাক আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ এবং এ বিপ্লবের সূর্য যাতে বাংলার প্রতিটি ঘরে উদিত হয়, সে স্বপ্নকে সামনে রেখে আজ এখানে ইতি টানছি। শেষ...
*লেখক: রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিসা, স্লোভেনিয়া।
**দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]