অসহ্য -২য় পর্ব

অলংকরণ: আরাফাত করিম

প্রথম পর্বের ধারাবাহিতায়...

পরের দিন সকালে আমার কপালে আর নাশতা জুটল না। না খেয়েই অফিস গেলাম। অফিস শেষে বাসায় আসার সময় কেক নিয়ে এলাম। বাসায় এসে দেখলাম নিতুর বড় বোন মিতু আপা এবং দুলাভাই বাসায় এসেছেন। উনারা নিতুর সঙ্গে ড্রয়িংরুমে বসে গল্প করছেন। নিতুর বড় বোন মিতু আপা আমাকে দুচোখে দেখতে পারেন না। অবশ্য শুধু মিতু আপা নয়, আমার শাশুড়ি ছাড়া ওই পরিবারের কেউই আসলে আমাকে তেমন একটা পছন্দ করেন না। তাঁদের ধারণা আমার মাথায় সমস্যা আছে। আমি গুড ফর নাথিং টাইপের একজন মানুষ। বাসায় ঢুকতেই মিতু আপা বললেন,
—তুমি নাকি নিতুর জন্মদিন ভুলে গেছ?

—জি আপা। কথা সত্য। তবে পরে মনে পড়ছে।

—মিথ্যে বলো কেন? তোমার তো মনে পড়েনি। নিতু তোমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে।
—জি আপা, সে কথাও সত্য। ইদানীং কেন জানি অনেক কিছুই ভুলে যাই। মাঝেমধ্যে আমি যে বিবাহিত, সেটাও ভুলে যাই। যখন নিতু ঝাড়ি মারে, তখনই আবার মনে পড়ে আমি বিবাহিত। হা হা হা হা..

—খবরদার, বানায়ে বানায়ে আমার সঙ্গে ফালতু কথা বলবা না।

—না আপা বানায়ে বলছি না। তাহলে শোনেন, সেদিন কী হয়েছে। হঠাৎ মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেল। চোখ খুলে পাশে ঘুমিয়ে থাকা নিতুকে দেখে ভয়ে আঁতকে উঠলাম। মনে মনে বললাম, ছি ছি এই মহিলা আমার বিছানায় ঘুমায় ক্যান? এরপর হঠাৎ দেয়ালে টাঙানো আমাদের বিয়ের ছবি দেখে বুঝলাম, এটা আমার বউ। বোঝেন কী একটা অবস্থা? হা হা হা...

আমার কথা শুনে মিতু আপার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। তিনি নিতুকে জিজ্ঞেস করলেন,
—এই গাধা বানায়ে বানায়ে এত মিথ্যা কথা বলে কেমনে?

আরও পড়ুন

নিতু মুখ কালো করে বলল,
—এখন বোঝো আমি কী নিয়ে সংসার করতেছি। একেবারে অসহ্য। গত ৯ মাসে উল্টাপাল্টা কথা বলে বলে আমার মাথা পুরা খারাপ করে দিছে। ওর কথা শুনলে এখন আমার নিজেরই কেমন জানি পাগল পাগল লাগে।

—শোনেন আপা আপনারা ভাবছেন আমি মিথ্যে কথা বলছি। আসলে তা নয়। আমি গুগলে সার্চ করে দেখেছি। এটা একটা রোগ। এই রোগকে বলে আলঝেইমারস। আমার এখন প্রাথমিক অবস্থা। তাই এখন অল্প অল্প ভুলে যাই। সামনে যত দিন যাবে, তত বেশি ভুলতে থাকব। একদিন হয়তো দেখবেন আপনাকে বলব, খালাম্মা শরীর কেমন? করোনার টিকা নিছেন? না নিলে বলেন আমি ব্যবস্থা করে দেই। হা হা হা...

—খবরদার বোকার মতো হাসবা না।

—জি আপা, হাসব না। হা হা হা....

মিতু আপা আমার হাসি দেখে রেগে গিয়ে নিতুর দিকে তাকিয়ে বলল,
—আমি বুঝি না, মা কী দেখে এরে তোর জন্য পছন্দ করছে? এর তো সবই নেগেটিভ। একটা একটা দিন যাচ্ছে আর তোর জামাইয়ের নতুন নতুন সমস্যা বের হচ্ছে। আগে জানতাম মাথামোটা, বাচাল, স্বল্প বুদ্ধির মানুষ। আর এখন বলছে তার নাকি স্মরণশক্তিও কমে যাচ্ছে। এখন তো তোর জন্মদিন ভুলে গেছে। কয় দিন পর দেখবি তোর নামও ভুলে যাবে।

—না আপা, সেটা ভুলব না। আমি আমার ফোনে ‘আমার স্ত্রী নিতু’ লিখে ওর ফোন নম্বর সেভ করে রেখেছি। ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগই নাই। হা হা হা...
—তোমাকে না বলছি খামাকা হাসবা না।

—সরি আপা।

এবার মিতু আপা গলার স্বরটা মোলায়েম করে বললেন,
—রানা শোনো, বিয়ের পর এটা ছিল নিতুর প্রথম জন্মদিন। এই জন্মদিন শুধু তোমার সঙ্গে একাকী পালন করবে বলে ও আমাদের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে মানা করেছে। এমনকি আমাদের আসতেও মানা করেছে। আর তুমি কী করলা? আমার বোনের জন্মদিনটা শেষ করে দিলা।

—না আপা, কোনো কিছু শেষ হয়নি। আমরা এখন নিতুর জন্মদিনের কেক কাটব।

—ফাজলামি পাইছ? ওর জন্মদিন ছিল গতকাল আর তুমি কেক কাটবা আজ?

—আপা শোনেন, আমার কাছে প্রতিটা দিনই নিতুর জন্মদিন।

—খবরদার, হাওয়া দিয়া কথা বলবা না।

—জি আপা, বলব না।

অলংকরণ: আরাফাত করিম

অনেক বুঝিয়ে–শুনিয়ে নিতুকে কেক কাটতে রাজি করলাম। নিতু কেক কাটতে যাবে, ঠিক সে মুহূর্তে মিতু আপা বললেন,
—আচ্ছা রানা, তুমি কি বলতে পারবে এটা নিতুর কততম জন্মদিন?

এই মহিলা, আসলেই একটা কুটনি মহিলা। যেখানে একটু আগেই তাকে বললাম, আমার স্মরণশক্তিতে সমস্যা দেখা দিছে, সেখানে হঠাৎ এসব প্রশ্ন করে আমাকে বিপদে ফেলার কোনো মানে আছে? নিতুর জন্মসাল তো আমার মনে নাই। কিন্তু এটা বললে তো আবার আগুন লাগবে। ভাবলাম, তার চেয়ে বরং নিতুর চেহারা দেখে আইডিয়া করে কিছু একটা বলে দেই। নিতুর চেহারার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম,
—অবশ্যই বলতে পারব। এটা নিতুর ৩৭তম জন্মদিন।

আমার কথা শুনে দুই বোন হা করে আমার দিকে তাকাল।

আমি মিতু আপার দিকে তাকিয়ে বললাম,
—আপনারা এভাবে হা করে আছেন কেন! আমি একটা জিনিস খেয়াল করেছি, আমি যখনই কোনো কথা বলি, তখনই আপনারা দুই বোন মুখ হা করে ফেলেন। আচ্ছা আপনাদের মুখের মধ্যে কি কোনো সমস্যা আছে?

মিতু আপা ঝাঁজালো কণ্ঠে বললেন,
—সমস্যা আমাদের মুখে নয়। সমস্যা তোর মাথায়? তুই কি আমাদের সঙ্গে ফাজলামি করোস? আমার বোনের বয়স ৩৭?

—কেন হয় নাই?

—ওই তোর বয়স কত?

—আপা, আমার বয়স ২৮ বছর।

এবার নিতু চিৎকার করে বলে উঠল,
—ওই বদমাইস, তোর বয়স ২৮, আর আমার বয়স ৩৭?

—সরি, নিতু আসলে আমি তোমার জন্ম সালটা ভুলে গিয়েছি। এখন এ কথা বললে তো তুমি রাগ করবা। তাই তোমার চেহারা দেখে আইডিয়া করে তোমার বয়সটা বলেছি।
—তার মানে তুমি বলতে চাও আমাকে দেখতে ৩৭ বছরের মতো লাগে?

—শোনো তোমার জন্মতারিখটা মনে থাকলে তো এটা বলতাম না। আসলেই ভুলে গেছি।

—কেনো তুমি আমার জন্মতারিখ ভুলে যাবা? তুমি বেশি কথা বলো, সেটা মেনে নিছি। তুমি উল্টাপাল্টা কথা বল, তাও মেনে নিছি। কিন্তু তুমি আমার ব্যাপারে উদাসীন হয়ে যাবা। সেটা তো আমি মানব না। আমি বেশ কিছুদিন থেকে খেয়াল করছি, তুমি আমার ব্যাপারে আগের মতো সিরিয়াস নয়। তাই আমার সবকিছুই ভুলে যাও। শুধু তা–ই নয়, আগে দেখতাম সারাক্ষণ আমার দিকে তাকায় থাকতা। আর এখন কী? এখন সারাদিনে একবারও আমার মুখের দিকে তাকাও না। কেন?

—এটা কিন্তু ঠিক বললা না। আমি আগে যতক্ষণ বাসায় থাকতাম, ততক্ষণই তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তখন তুমিই বিরক্ত হয়ে বলতা, ‘সারাক্ষণ ছ্যাবলার মতো তাকায় থাকো ক্যান?’ তাই এখন তোমার ভয়ে সরাসরি তোমারে দেখি না। তবে আড়চোখে চুরি করে করে সারাক্ষণই তোমারে দেখি।

—তাই? তুমি আমাকে সারাক্ষণ দেখো!

—অবশ্যই। তোমাকে এত এত দেখি যে তোমার চোখ-নাক-মুখ সবই আমার মুখস্থ।
—তাহলে তো আমার চেহারায় বা শরীরে কোনো পরিবর্তন হলে, সহজেই তুমি তা ধরতে পারবে, তাই না?

—অবশ্যই। একটা তিলও আমার চোখ এড়াতে পারবে না।

নিতু এবার আমার সামনে এসে বলল,
—ঠিক আছে, তাহলে আমাকে ভালো করে দেখে বলত গতকালকের আমার সঙ্গে, আজকের আমার কি পরিবর্তন তুমি দেখতে পাও। বলতে পারলে বুঝব তোমার কথা সত্য।
আমি অনেকক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম, কিন্তু কোনো রকম পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম না। এরপর মুখ ছেড়ে নিতুর পুরো শরীরের দিকে তাকালাম। তারপর উচ্ছ্বসিত হয়ে বললাম,
—আমি পরিবর্তনটা ধরতে পেরেছি।
—তাই? কী সেটা?

—নিতু তোমার ভুঁড়ি বেড়ে গেছে?
—কি বললা!

—বলেছি তোমার ভুঁড়ি বেড়ে গেছে।

আমি থামার সঙ্গে সঙ্গে মিতু আপা ধমক দিয়ে বললেন,
—চুপ কর বদমাশ। আমার বোন সব সময় জিম করে, আর তুই কস ওর ভুঁড়ি বাড়ছে? একজন মানুষ কতটা অসভ্য হলে বউয়ের ভুঁড়ি হয়েছে বলতে পারে।

আমি থতমত খেয়ে বললাম,
—সরি আপা। আসলে আমার কাছে একটু বড় মনে হয়েছে, তাই বললাম। নিতু শোনো ভুঁড়ি হওয়া কিন্তু খারাপ নয়।

এবার নিতুর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। সে চিৎকার করে বলল,
—এনাফ ইজ এনাফ। এইমাত্র আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, তোর মতো পাগলের সংসার আমি আর করব না।

এ কথা বলেই নিতু গট গট করে হেঁটে বেডরুমে চলে গেল। নিতু চলে যেতেই মিতু আপা বলল,
—রানা তোমার সমস্যা কী? তুমি কি আসলে বোকা, না বোকার ভান করে থাকো?
—এটা কেন বললেন আপা?

—শোনো, একটা মেয়ে যতই শুকনা হোক, ঢোলা মেক্সি পড়লে শরীরটা একটু ফোলা ফোলা লাগে। তাই বলে তুমি বলবা ভুঁড়ি হয়েছে? তুমি কি জানো না ওর পেটে কোনো মেদ নাই।

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

—তা জানি। কিন্তু আমি ভাবলাম, হয়তো জন্মদিনের খুশিতে সকাল থেকে উল্টাপাল্টা জিনিস খেয়ে খেয়ে, পেট ফুলায় ফেলছে।

অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে নিতু ছোট্ট একটা ব্যাগ নিয়ে বেডরুম থেকে বের হয়ে এল। তারপর আমার সামনে বাসার চাবিটি ছুড়ে দিয়ে মিতু আপাকে বলল,
—আপা চলো।

আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম,
—তু তুমি ক-কই যাও?

—আমি চলে যাচ্ছি। তোমার সঙ্গে আমি আর থাকব না।

আমি নরম গলায় বললাম,
—নিতু তুমি চলে গেলে আমি কি খেয়ে থাকব? তুমি তো জানো আমি রান্না করতে পারি না। আমার এসিডিটির সমস্যা আছে। যে কারণে হোটেলের খাবার খেলে আমার সমস্যা হয়।

—ওই আমি কি তোরে শুধু রান্না করে খাওয়ানোর জন্য তোরে বিয়া করছি।
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম। এ পর্যায়ে দুলাভাই নিতুকে বলল,
—এক কাজ করো, বেচারাকে আরেকটি সুযোগ দাও। দেখি এবার বলতে পারে কি না? আমার ধারণা ও এবার ঠিকই বলতে পারবে।

এরপর দুলাভাই আমার কাছে এসে বলল,
—রানা, পুরো শরীরের মধ্যে কিছু খোঁজার দরকার নাই। শুধু মুখের দিকে তাকালেই তুমি পরিবর্তনটি দেখতে পাবে। এখন ভালো করে দেখে বলো।

আমি নিতুর একেবারে কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। অনেকক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে উচ্ছ্বসিত হয়ে বললাম,
—ইউরেকা, পেয়েছি। নিতু তোমার বাম চোখের মনিটা একটু ছোট হয়ে গেছে। আমার ধারণা তুমি আস্তে আস্তে ট্যারা হয়ে যাচ্ছ।

বিস্ময়ে নিতুর চোখ বড় হয়ে গেল। সে চিৎকার করে বলল,
—আপা এ এগুলো কি কয়!

—নিতু শোনো, রেগে গেলে তুমি তুই-তুকারি করো, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তাই বলে গালি দিও না। শুনতে খারাপ লাগে।

—খবরদার ভাষণ দিবি না।

মিতু আপা এবার আমার সামনে এসে আমার চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
—ওই ফাজিলের ফাজিল, আমার বোন ট্যারা? আ-মা-র বোন ট্যা-রা?
এবার দুলাভাই আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
—আমি বুঝলাম না রানা, তোমার সমস্যা কী? ওই ছোট্ট চোখের মণি, ছোট না বড়, সেটা তোমার চোখে পড়ল। অথচ ও যে আজ ওর লম্বা চুল কেটে বয়কাট দিয়েছে, সেটা তোমার চোখে পড়ল না?

—ও মাই গড, আসলেই তো। আমি তো এটা খেয়াল করিনি। তাই তো বাসায় ঢোকার পর থেকেই ওকে কেমন জানি অন্য রকম লাগছিল।

এরপর নিতুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
—বিশ্বাস করো নিতু, তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। তোমাকে একদম আমার বন্ধু জব্বারের মতো লাগছে।

—কি বললা! আমাকে কার মতো লাগছে!

—আরে আমার বন্ধু জব্বার। তোমার মনে নাই? ওই যে সারাক্ষণ নেশা করে।

আমার কথা শেষ হওয়া মাত্র নিতু চিৎকার করে বলল,
—কীর বললি? আমাকে তোর নেশাখোর বন্ধু জব্বারের মতো লাগছে? আমি জব্বার?
—রাগ করছ কেন? শুনো, নেশা করলেও জব্বারের চেহারা কিন্তু কিউট আছে।

—থাক তুই তোর সংসার নিয়া। আমি এই সংসারে আর থাকব না। লাথি মারি তোর সংসারে। পাগলের গুষ্টি পাগল।

বলেই নিতু গটগট করে বাসা থেকে বের হয়ে গেল। মিতু আপা এবার আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। তারপর আমার চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বললেন,
—আমার বোন রে তোর কাছে জব্বারের মতো লাগে? আমার বোন জব্বার? আর তুই কী? তুই কি টমক্রুজ? মা মনে করে তুই সহজ–সরল। কিন্তু আমি তোরে প্রথম দেখেই বুঝেছিলাম, তুই একটা বদমাইশ। তুই একটা জিএমটিটি।

—আফা জিএমটিটি কি?

—তুই গুগলে গিয়া সার্চ কর।

এ কথা বলে উনিও নিতুর মতো গটগট করে বাসা থেকে বের হয়ে গেলেন। দেখলাম, দুলাভাই আমার দিকে হতাশ হয়ে তাকিয়ে রয়েছেন। আমি দুলাভাইকে বললাম,
—দুলাভাই জিএমটিটি মানে কি?

—জাতে মাতাল তালে ঠিক।

—তাই? আচ্ছা দুলাভাই একটা জিনিস বুঝলাম না, ওরা দুজন আমার কথায় রাগ করল কেন?

—রাগ করবে না? নিজের বউকে দেখতে জব্বারের মতো লাগছে, এ কথা কেউ বলে?
—আরে এটা কী বললেন? ওকে যদি জব্বারের মতো লাগে, তো আমি কী করব? আগে তো এমন লাগত না। চুল কাটার পর আসলেই ওকে জব্বারের মতো লাগছে। দাঁড়ান আমার ফোনে জব্বারের ছবি আছে। আপনাকে দেখাই। তাহলেই বুঝবেন।

—জব্বার সাহেবকে দেখার কোনো শখ আমার নাই। রানা শোনো, তোমাকে একটা পরামর্শ দিই। সম্ভব হলে রেখো।

—বলেন দুলাভাই।

—তুমি একজন ভালো ডাক্তার দেখাও।

—এটা অবশ্য আমিও ভাবছি। আসলেই ডাক্তার দেখাতে হবে। বেশ কিছুদিন থেকে আমার পেটের অবস্থা খুবই খারাপ। টয়লেটে যেতে যেতে আমি একেবারে ক্লান্ত হয়ে গেছি। আচ্ছা দুলাভাই আপনার পরিচিত পেট খারাপের কোনো ভালো ডাক্তার আছে?

দুলাভাই কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে হতাশায় মাথা নাড়তে নাড়তে বাসা থেকে বের হয়ে গেলেন। চলবে...

**আগামীকাল পড়ুন এর তৃতীয় পর্ব

*লেখক: ইমদাদ বাবু, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র। [email protected]