স্মৃতিতে অম্লান ’৭১

মায়ের হাতে হাঁস, ছেলের হাতে রেডিও। তাঁরাও উঠবেন শরণার্থী বহনকারী ট্রেনে। কুমারখালী, কুষ্টিয়া, ৯ এপ্রিল ১৯৭১

১৯৭১–এর স্মৃতি আমায় সারাক্ষণ তাড়িয়ে বেড়ায়। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও অম্লান সেই গোবরা ক্যাম্পের কথা। ‘বাংলাদেশ নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ ৮/এ মহেন্দ্র রায় লেন, মোল্লাপাড়া  গোবরা, কলকাতা–৪৬–এর স্মৃতিকথা কখনো ভোলার নয়। আমরা গোবরা ক্যাম্পে ট্রেনিং নিচ্ছিলাম আর প্রস্তুত হচ্ছিলাম সম্মুখসমরে যাওয়ার। আমার ছোট বোন উষাসহ অনেকের নামই আমার স্মৃতিতে এখনো ভাস্বর। জানি তাদের কারও নামই ইতিহাসে লেখা থাকবে না। মনের মণিকোঠায় জ্বলজ্বলে নামগুলো একদিন হারিয়ে যাবে।

সেখানে ট্রেনিং নিচ্ছিল নওগাঁর মেয়ে অঞ্জলি মজুমদার, বীথি কুন্ডু (শিবগঞ্জ), মান্ডবী মনিগ্রাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), সুষমা (নবাবগঞ্জ), কল্পনা (শিবগঞ্জ), মিতা ভদ্র (শাঁখারীবাজার, ঢাকা), কল্পনা সাহা (গোপালগঞ্জ), জ্যোৎস্না বিশ্বাস (যশোর), দেবী (নড়াইল), রমাদি (খুলনা), কৃষ্ণাদি ও শিরিন আপা (খুলনা), লাইলী আপা (রাজশাহী)। অনেকের নাম মনে না থাকলেও শুধু চেহারাই মনে আছে। নবম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া—নানা বয়সী কিশোরী ও তরুণীরা সেখানে জড়ো হয়েছিল। দেশকে ভালোবেসে, দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে ট্রেনিং নিচ্ছিলাম আমরা। দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ আমরা এরপর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকেছিলাম।

আমার বাড়ি রাজশাহী শহরে। একাত্তরের সেই উত্তাল দিনগুলোতে আমি তখন সবেমাত্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আমার বোন উষা মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা স্মরণাতীত কালের মিছিল করেছে। চারদিকে থমথমে ভাব। ঘরে ঘরে কালো পতাকা উড়ছে। মিলিটারি গাড়ি টহল দিচ্ছে রাস্তায়। বাঙালিরা তখন ঐক্যবদ্ধ। বাড়ির সামনের রাস্তায় গাছ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হলো। পাড়ার কয়েকজনের সঙ্গে বাবাকেও পাকিস্তানি সেনাসদস্যরা ট্রাকে করে তুলে নিয়ে গেল। সেদিন যে কীভাবে কেটেছিল, তা বর্ণনা করতে আমি ভাষাহীন। পরদিন অলৌকিকভাবে বাবা ফিরে এল। কারফিউ চলতে লাগল। এর মধ্যে স্বনামধন্য আইনজীবী বীরেন সরকারকে এবং সর্বশ্রী সুরেশ পান্ডেকে পাকিস্তানের সেনারা মেরে ফেলল। হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়ে গেল। শহর থেকে গ্রামের দিকে লোকজন যেতে লাগল।

মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান। বাটম্যান কালেকশন থেকে ছবিটি সংগ্রহ করেছে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ

সম্ভবত ২৬ মার্চ পুলিশ লাইনস আক্রমণ করল মিলিটারিরা। আমি ও উষা তখন শহরতলির গ্রামে। কিন্তু আমার অন্য ভাইবোন, মা, বাবা, ঠাকুমা তখনো শহরের বাড়িতে। আমাদের বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে পুলিশ লাইনস। ঘরের মধ্যে প্রায় বন্ধ থেকে ওরা যুদ্ধ দেখল। পুরো দুই দিন যুদ্ধ হয়েছিল। সবাই মনে করেছিল আমাদের বাড়ির ও পাড়াতে যে কজন আছে, তারা কেউ বেঁচে নেই। আসলে পাড়ার একটা বড় ঘরে সবাই বন্দী জীবন কাটিয়েছিল। যতটুকু মনে পড়ে, ২৯–৩০ মার্চ মা, ভাইবোনেরা অনেক কষ্টে গ্রামে পৌঁছাল। ওদের চেখেমুখে তখন যুদ্ধের বিভীষিকা। বাবা কিন্তু বাড়ি ছেড়ে এল না তখনো। পুলিশ লাইনসে অনেক পুলিশ মারা গিয়েছিল সেদিন।

মায়ের মুখে শোনা, ২৭ তারিখ দুপুরে কিছুক্ষণ যুদ্ধ থেমে ছিল। তখন জিপে করে মিলিটারিরা বাঙালি কাউকে দিয়ে বলিয়েছিল, ‘যুদ্ধ আর হবে না, যার যার ব্যারাকে ফিরে যাও।’ কিন্তু যুদ্ধবিরতির সময় অতর্কিত হামলা করে অনেক পুলিশ হত্যা করেছিল পাকিস্তানের সেনারা। একসময় বোঝা গেল, গ্রামও নিরাপদ নয়। তখন ঝাঁকে ঝাঁকে জেট প্লেন থেকে বম্বিং শুরু হয়ে গেল। শুধু গোলাগুলি আর বোমার শব্দ। শহর থেকে দলে দলে মানুষের ঢল পদ্মায়। পদ্মার ওপারেই প্রতিবেশী দেশ ভারত। ৯ এপ্রিল আমরাও অজানা, অচেনা দেশ ভারতে চললাম। বাংলাদেশ শরণার্থীদের ভারতীয়েরা সাহায্য করল। আমরা পরদিন বহরমপুর থেকে মালদহে চলে গেলাম। শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিলাম। মৌলপুর শরণার্থীশিবির, (ব্লক নম্বর এ/২-৭, পোস্ট: বাচামারী) মালদা হলো আমাদের অস্থায়ী ঠিকানা। আমাদের শিবিরে ১০০টি শিক্ষিত পরিবার ছিল। বেশির ভাগ চাকরিজীবী মানুষেরা থাকতেন ওই শিবিরে। রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ—এসব এলাকার লোকজন ছিল ওই শিবিরে। আমাদের পাশের ঘরেই থাকত দীপক মুসতাফীর পরিবার। দীপকের সঙ্গে সেখানেই পরিচয়। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। দীপকই ছিলেন আমার যুদ্ধে প্রস্তুতি নেওয়ার অন্যতম অনুপ্রেরণা। আমরা দুই বোন যখন কলকাতার গোবরা ক্যাম্পে গেলাম, তিনি সর্বতোভাবে আমাদের উৎসাহ দিতেন, সহযোগিতা করতেন। পরে স্বাধীন দেশে ১৯৭৯ সালের ৩ ডিসেম্বর শুভ পরিণয় হয় আমাদের। ২০২১ সালের ১১ মে তিনি ওপারের পথিক হলেন। সে গল্প আরেক দিন হবে। আজ যুদ্ধদিনেরই কথা হোক।

শরণার্থীশিবিরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানের ছাত্র মো. আবদুল হাইয়ের (দাদা) সহযোগিতা আর অনুপ্রেরণায় আমরা মেয়েরা সংঘবদ্ধ হলাম। শুরু করলাম মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক ট্রেনিং। ডা. মুকুল (রাজশাহী মেডিকেল কলেজ) আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করলেন। সবার নাম মনে নেই, তবু মনে আছে হাসি গোস্বামী, সুমিত্রা প্রসাদ, অঞ্জলি, তনুজা, ছায়া, সুফিয়া, মুক্তি, বুলবুলি, মিনা, উষা—আমরা সবাই ট্রেনিং নিতাম। মালদা শহরের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে আরও মেয়ে আসত। শহর থেকে একজন আমাদের আর্মস ট্রেনিংও দিতেন। যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি জোরেশোরেই চলতে লাগল। আমরা মাঠে আর্মস ট্রেনিং নিচ্ছিলাম, সেই সময় একদিন বিখ্যাত চিত্র পরিচালক জহির রায়হান দলবল নিয়ে এলেন আমাদের ক্যাম্পে। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা অনেক ছবি তুললেন আমাদের। এর মধ্যে আমার বাবা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আঞ্চলিক প্রশাসনিক সংস্থায় রাজশাহী অফিসে যোগ দেন। সেই সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন সরদার আমজাদ হোসেন। বাবা একদিন বললেন, উমা কলকাতা যাবি? সেখান থেকে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়া সহজ হবে। সেখানে মেয়েদের একটি নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছে। বাবার উৎসাহে আমি, উষা আর যারা ওখানে ট্রেনিং নিচ্ছিলাম, তাদের মধ্যে আরও দুজন অঞ্জলি ও মান্ডবী সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলাম। আমাদের ক্যাম্পের অদূরে মুকাতিপুর শরণার্থীশিবিরের আরও চারজন (সুষমা, বীথি, কল্পনা, মমতা) ওরাও রাজি হয়ে গেল।

মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র পর্বটি নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরে এসে প্রচণ্ড গতি পায়

আমরা আটজন মালদা থেকে সরদার আমজাদ হোসেন সাহেবের সহায়তায় কলকাতার দিকে রওনা দিলাম। পরদিন গোবরা ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছালাম। অনেককে পেলাম ট্রেনিং সেন্টারে। নেত্রী সাজেদা চৌধুরী আপার নেতৃত্বে ওই সেন্টার পরিচালিত হতো। রানীদি (ভারতীয়) ওই সেন্টারের তত্ত্বাবধান করতেন। সেখানেই পরিচয় হলো লাইলা আপা (রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী), শিরিন আপা (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী), রমাদি, কৃষ্ণাদি, মিতাদি, কল্পনা, জ্যোৎস্না দেবীসহ অনেকের সঙ্গে। বেলাদি (ভারতীয়) আমাদের কাজের তদারকি করতেন। আমরা যাওয়ার পরপরই একটি ব্যাচ আগরতলার পথে পাড়ি জমাল। আরেকটি ব্যাচ সম্মুখসমরে যুদ্ধস্থলে গেছে বলেও জানলাম। বি আর সিং হসপিটালের আওতাধীন আমাদের প্রশিক্ষণ শুরু হলো। সম্ভবত আমরা ৪র্থ ব্যাচ ছিলাম। যাঁর কথা আমার খুব মনে আছে, তিনি ডা. বলাই। তিনি আমাদের ক্লাসে যত্ন করে শেখাতেন ও প্রেরণা দিতেন। মনে আছে, প্রতিদিন ভোরে আমরা পুকুরপাড়ে ও মাঠে রাইফেল ট্রেনিং নিতাম। সারা দিনের আমাদের রুটিন করা থাকত। আমাদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেওয়া ছিল। গ্রুপভিত্তিক। কোনো গ্রুপের কাজ ছিল চাল বাছা, ডাল বাছা, রুটি বানানো, রান্না করা খাবার পরিবেশন করা। সেলাইয়ের জন্যও একটি মেয়ে ছিল। এগুলোর পর রাইফেল ট্রেনিং নেওয়া, পিটিও করতে হতো। আমরা সকালে দুটি রুটি, ভাজি আর এক মগ চা পেতাম। দুপুরে ও রাতে মাছ, তরকারি ও ভাত। কত রকমের মাছ খেয়েছি, চিনতামও না। চালও যে কত রকমের খেয়েছি। চাল বাছতে বাছতে চোখে আঁধার দেখতাম। বাথরুমে লাইন ধরে যেতে হতো। পুকুরের জল ব্যবহারের অযোগ্য ছিল। বাড়িটি দোতলা ছিল। চারদিকে সীমানাদেয়াল ছিল। ছাদে ওঠায় বাধা ছিল না। একসঙ্গে দুজন করে ঘুমাতাম; আমাদের মশারি, বিছানা, কম্বল দেওয়া হয়েছিল।
ঘুমাতে যাওয়ার আগপর্যন্ত প্রতিদিনই সবাই দেশের স্মৃতিচারণা করতাম। স্বাধীন বাংলা বেতার শুনতাম। স্বজনহারা, গৃহহারা, দেশছাড়া সংঘবদ্ধ কয়েকটি মেয়ে ওখানে একই লক্ষ্য নিয়ে দিন গুনতাম আর ট্রেনিং নিতাম। এর মধ্যে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা ছিল মা-বাবা আর দীপকের চিঠি।

আমাদের সবার প্রিয় সাজেদা আপা (সাজেদা চৌধুরী) ক্যাম্পে এসে মাঝেমধ্যেই উৎসাহ দিতেন। নভেম্বর মাসে মিত্রবাহিনীরা মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করল এবং ৩ ডিসেম্বর একযোগে যুদ্ধ ঘোষণা করল। প্রতিবেশী দেশ ভারত তখন আমাদের মনোবল, জনবল, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা আর অস্ত্র দিয়ে যেভাবে সাহায্য করেছিল, তা কখনো ভুলবার নয়। আর মিত্রবাহিনীর সহযোগিতা আমাদের যুদ্ধ জয়কে আরও ত্বরান্বিত করেছিল। মনে আছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের কোনো এক দিন কলকাতার রাজপথে গোবরা ক্যাম্পের মেয়েরা প্রতিবাদ মিছিল করেছিলাম। আমরা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করেছিলাম কলকাতার রাজপথ। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; সোনা মানিক মুজিব ভাই, ভুলি নাই ভুলি নাই; ইন্দিরা গান্ধী যুগ যুগ জিয়ো; আমেরিকা, সপ্তম নৌবহর ফিরিয়ে নাও, ফিরিয়ে নাও; মিত্রবাহিনী, মুক্তিবাহিনী জয়ী হও, জয়ী হও—এমন সব স্লোগান দিয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেছিলাম। অনেক হেঁটেছিলাম সেদিন। ক্যাম্পে ফিরে জ্বরে শরীর পুড়লেও উৎসাহে ভাটা পড়েনি এতটুকু। এখন এই জীবনসায়াহ্নে এসে এসব কথা ভাবতে গিয়ে, লিখতে গিয়েও সেই রক্তঝরা ’৭১ এই বাস করছি যেন আমি, ‘পুরোদমে যুদ্ধের ট্রেনিং চলছে, যুদ্ধ চলছে দেশে।’

এরপর এল ’৭১–এর সেই পরম কাঙ্ক্ষিত দিন, বিজয়ের দিন। পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করল, সারা কলকাতা আনন্দমুখর হয়ে উঠল। গোবরা ক্যাম্পের আমরা আনন্দের প্লাবনে ভেসে গেলাম, ছাদে উঠে পতাকা নিয়ে জয় বাংলা ধ্বনি দিতে লাগলাম। সন্ধ্যা থেকে সারা কলকাতা আতশবাজিতে আলোকময় হয়ে উঠল। আমাদের চোখে আনন্দাশ্রু। পরদিন সাজেদা আপা এসেছিলেন। সেদিনের আনন্দ, উচ্ছ্বাস, বেদনা অশ্রু, উত্তেজনা, কী যে সেই অনুভূতি, তা প্রকাশের ভাষা আমার অজানা! কত জন কত কী হারিয়েছে। তবু স্বাধীন দেশ পেয়েছি, তাই হারানোর সব কষ্ট যেন তুচ্ছ হয়ে গেল সবার কাছে। এখন সবার ফেরার পালা। ফেরার পালা আমার স্বাধীন জন্মভূমিতে, আমার প্রিয় স্বদেশে।

বাংলাদেশে ফেরার আগে সাজেদা আপা আমাদের সার্টিফিকেট দিলেন। বি আর সিং নার্সিং হোম থেকেও আমাদের সার্টিফিকেট দেওয়া হলো। সব মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট এখনো আমার কাছে সযতনে রাখা আছে। মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় আমাদের মতো নগণ্য ব্যক্তিদের নাম না থাকলেও আমাদের সব উপলব্ধিতে আছে স্বদেশের কথা। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পেলেও হতে পেরেছি স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। দেশের জন্য সব ছেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পেরেছিলাম, দেশকে ভালোবাসতে পেরেছি—এ গর্ব নিয়েই প্রিয় মাতৃভূমিতে যেন শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে পারি। এখন এটাই আমার প্রার্থনা।