বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এ বছরের পরিবেশ দিবস
প্রতিবছরের মতো এবারও ৫ জুন বিশ্বজুড়ে পালিত হবে পরিবেশ দিবস। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ভয়াবহ রূপ ধারণ করার ঝুঁকিতে থাকায় গত কয়েক বছর বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই সারা বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিবস। এ বছর দিবসটির বৈশ্বিক মূল আয়োজক পাকিস্তান।
এবারের পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’। কোনো একটি পরিবেশের অজীব এবং জীব উপাদানসমূহের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া, আদান-প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবেশে যে তন্ত্র গড়ে ওঠে, তাকেই সাধারণত বাস্তুতন্ত্র বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ বাস্তুতন্ত্র হলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্ত জীবন্ত জিনিস যেমন: উদ্ভিদ, প্রাণী এবং জীব, যেখানে জীবিত প্রাণীরা একে অপরের সঙ্গে এবং পার্শ্ববর্তী পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বাস্তুতন্ত্রকে তাই দেখা হয় জীব এবং তাদের পরিবেশের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার একটি শৃঙ্খল হিসেবে।
মানুষ নিজের স্বার্থে প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে অবজ্ঞা করে বাস্তুতন্ত্রকে নষ্ট করছে, ধ্বংস করছে বাস্তুতন্ত্রে থাকা উদ্ভিদ ও প্রাণীদের। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতাকে সামনে রেখে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাস্তুতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা। সে লক্ষ্যে মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে এবারের পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে বাস্তুতন্ত্রকে বেছে নিয়েছে জাতিসংঘ।
সংস্থাটি বলছে, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখায় বাস্তুতন্ত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা সম্ভব। একই সঙ্গে গণবিলুপ্তি ও দারিদ্র্যের মতো বৈশ্বিক বিপর্যয়ও এড়ানো সম্ভব বলে মনে করে জাতিসংঘ।
বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার নানাভাবে করা যেতে পারে। জাতিসংঘ সে বিষয়ে কিছু ধারণাও দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, গাছ লাগিয়ে, শহরের সবুজায়ন করে, পরিকল্পিত উপায়ে বাগান পুনর্নির্মাণ করে, উপকূল ও নদীগুলো পরিষ্কার করে বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় শামিল হতে হবে। জাতিসংঘ মনে করে, কোনো দেশ কিংবা প্রতিষ্ঠানের একার পক্ষে বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে, লড়াই করতে হবে যার যার অবস্থান থেকে। তবেই বৈশ্বিক এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
প্রতিবছর ৫ই জুন বিশ্বব্যাপী পালিত হয় পরিবেশ দিবস। মানুষ আর পরিবেশের দূরত্ব ঘুচিয়ে এক সবুজ নির্মল পৃথিবীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দিবসটিকে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ১৯৭৪ সালে প্রথমবার পালিত হয় দিবসটি। বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল জীববৈচিত্র্য, মূল আয়োজক ছিল কলম্বিয়া।
লেখক: তানভীর মাহতাব আবীর, শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়