পাবজি, ফ্রি ফায়ার নিষিদ্ধ চাই

করোনাকালে মোবাইল গেমসের জনপ্রিয়তা বেড়েছে
ফাইল ছবি: কবির হোসেন

পাবজি ও ফ্রি ফায়ার অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার ব্যাটল ভিডিও রয়্যাল গেম। গেম দুটি সর্বকালের সেরা বিক্রীত গেমগুলোর অন্যতম। কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে প্রবলভাবে আসক্তি তৈরি করেছে এসব গেম। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসবের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করে খেলায় মজে থাকছে তারা। শারীরিক খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত ভার্চ্যুয়াল গেমে দীর্ঘক্ষণ সময় দেওয়ার ফলে তারা অলস জীবন যাপন করে। দীর্ঘ সময় ধরে খেলার ফলে মুঠোফোন, ল্যাপটপ থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর রশ্মি চোখের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, দৃষ্টিক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া তাদের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক চাপ, হতাশা, ব্রেনস্ট্রোক, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে খিটখিটে মেজাজ তৈরির মতো সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সাধারণ আড্ডা, খোশগল্প, বিনোদন থেকে তরুণেরা আজ বঞ্চিত। কম বয়সী ছেলেমেয়ের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও গেমসে আসক্তির বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা যায়।

ফ্রি ফায়ার, পাবজির প্রতি নেশার জন্য বহুজনের প্রাণ হারানোর খবর প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে। ব্রেন স্ট্রোকে মারা যাওয়া থেকে শুরু করে হত্যা ও আত্মহত্যা করার মতো অমানবিক ঘটনাও রয়েছে। ডেটা কেনার জন্য তরুণেরা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ছেন। স্বাভাবিক জীবন থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছেন। খেলায় পুরস্কার পাওয়া ও জেতার নেশায় সহজে গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে উঠছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। অনলাইন গেম খেলার জন্য ভার্চ্যুয়াল অর্থ লেনদেন হয় এমএমএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। মুনাফা অর্জনের দিক থেকে ২০২০ সালের সমীক্ষায় বিশ্বে এক নম্বরে ছিল পাবজি। এর ফলে দেশের একটা বড় অংশ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি ও পরিবার।

পাবজি গেম
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

নেপাল, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে পাবজি ও ফ্রি ফায়ার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশে সম্প্রতি গেম দুটি বন্ধ করা হলেও আবার চালু হয়েছে। তাই এর ক্ষতিকর দিক ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনতিবিলম্বে ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো গেম নিষিদ্ধ করা উচিত। দেশ ও জনগণের কল্যাণের স্বার্থে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণদের জন্য বিকল্প কাজকর্ম, খেলাধুলা, পারিবারিক ও সামাজিক বিনোদনের ব্যবস্থা করা, সবার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

*লেখক: ফারজানা আফরিন, শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ