দেড় দশক পেরিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যাশার গল্প
শুভ জন্মদিন আমার প্রাণের ক্যাম্পাস। ৫৭ একর গ্রিন ক্যাম্পাস চারপাশে গ্রামীণ পরিবেশ যেন নতুন মাত্রা দিয়েছে জাতীয় কবির নামে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। যত দূর চোখ যায় শুধু নীলাচলের মতোই মন কাড়ে সবুজ গাছপালা আর গ্রামীণ ঘরবাড়ি। পাখির কিচিরমিচির শব্দ চারিদিক থেকে ভেসে আসে, যা মনে এক অজানা অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। গতকাল ৯ মে ১৫তম বছর পেরিয়ে ১৬তম বছরে পদার্পণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। নানা স্বপ্ন নিয়ে ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৬ সালের ০৯ মে।
ভালোবাসার এই ক্যাম্পাসটিতে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তিন বছরেও বেশি সময় এ ক্যাম্পাসে আছি। প্রথম দিকটাতে এত জমকালো না থাকলেও ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসটি বড় হতে চলেছে। আমাদের নজরুল পরিবারটাও অনেক বড় হচ্ছে। বর্ষপূর্তির এই দিনটাতে সবাই একসঙ্গে থাকতে পারলে হয়তো আনন্দ করা যেত। যেহেতু একসঙ্গে নেই, তাই করোনাকালে সবার সুস্থতাই কামনা করি। পাশাপাশি প্রত্যাশা করি, করোনা-পরবর্তী বিশ্বে প্রাণের বিদ্যাপীঠ হয়ে উঠুক একটি গবেষণামূলক শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আরও ভালো লাগা তৈরি হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষানবিশ সাংবাদিক হওয়ার সুবাদে ক্যাম্পাসের ভালো-মন্দ নিয়ে ভাবার সুযোগ হয়। সুযোগ হয় ভালো মানুষের সঙ্গে কথা বলার। এই ক্যাম্পাস থেকে পেয়েছি অনেক কিছু, স্বপ্ন দেখি ভালো কিছুর।
প্রাণের বিদ্যাপীঠ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মধ্যে আশার প্রদীপ জ্বলে ওঠে। প্রত্যাশা জাগে, নজরুলিয়ান নতুন করে তার অপূর্ণতাগুলো কাটিয়ে উঠবে। এ বছর সবকিছুর মধ্যে নিজের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াকেই প্রধান মুখ্য চাওয়া হিসেবে দেখতে চাই। কলেজে পড়াশোনা করার সময় থেকেই ইচ্ছে ছিল, এই ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করব। জাতীয় কবির নামে প্রতিষ্ঠিত নজরুল কলেজে পড়াশোনার মাধ্যমে নজরুলভক্ত হয়েছি তখনই।
শিক্ষার মান উন্নত করা ছাড়া ও গবেষণামূলক শিক্ষা ও বাস্তবমুখী ব্যাপক বিস্তার ঘটানো এবং পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করা উচিত। প্রতিটি মানুষের মধ্যকার সহানুভূতি এবং আন্তরিকতার বিস্তার ঘটুক। ধর্ম-বর্ণ, ভিন্ন রাজনীতি,ভিন্নমত—সবকিছুই সুসম্পর্কের মাধ্যমে ক্যাম্পাস হয়ে উঠুক সব ক্যাম্পাস থেকে আলাদা। বিশ্ববিদ্যালয় কিছু সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন আশার আলো ফোটাবে, এই আশায়। প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে খুব ভালো পর্যায়ে দেখতে চাই। শিক্ষা, গবেষণাসহ সব দিক থেকেই সমৃদ্ধ হবে নজরুল ক্যাম্পাস। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলবে সবকিছুকে পার করে, এটাই কামনা।
করোনাকালে বর্ষপূর্তিও এক অসম্ভব ব্যাপার। তবুও প্রিয় আঙ্গিনা নিয়ে ভাবনা থেমে নেই। আবার সেই দিন ফিরে আসুক ক্যাম্পাসে, বন্ধু-বান্ধবের আড্ডায় মুখরিত হোক ভালোবাসার এই ক্যাম্পাস।
লেখক: মো. ফাহাদ বিন সাঈদ, শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়