দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যায় মনোমুগ্ধকর মরিচ ফুল
সৌন্দর্য ও ভালোবাসার প্রতীক ফুল। জন্মদিবস পালন থেকে মৃত্যুদিবস পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি আচার–অনুষ্ঠানে প্রয়োজন হয় ফুল। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে ফুল উপহার না দিলে ভালোবাসাই থাকে না, হয়ে যায় শ্রীহীন।
ফুলবাগানে প্রস্ফুটিত হলেও দোলা দেয় মানব হৃদয়ে। ফুলকে ভালোবাসে না এমন কে আছে? সেই ফুলে ঘুরে বেড়ায় প্রজাপ্রতি, মৌমাছি, অন্যান্য কীটপ্রতঙ্গ। সংগ্রহ করে মধু। সব ফুলেই বসে না মৌমাছি, এটি এ দেশের মানুষের মুখে মুখে বলা একটি প্রবাদ বাক্য। তবে, মধুর সন্ধানে আজকাল সব ফুলেই বসতে দেখা যায় মৌমাছি।
ফুলের ওপর প্রজাপতি বসলে তো তার সৌন্দর্যের তুলনাই হয় না। সে এক অপরূপ দৃশ্য। বাংলাদেশে নানা রকম ফুলের সমারোহ চোখে পড়ে, যা মানুষের মনকে করে পরিশুদ্ধ। বৈচিত্র্য চোখের অনুভূতিতে যে মন-প্রাণ সতেজ করে গরমের পর একপশলা বৃষ্টির মতো। দেশে বারোমাসই দেখতে পাওয়া যায় নানা রকম বাহারি ফুল। শখের বশে বাড়ির আঙ্গিনায়, ছাদে অথবা ঘরের সিঁড়ির কাছে ফুলের বাগান নাইবা হোক দু-একটি ফুলগাছ লাগানোর চেষ্টা করে ছোটবড় সবাই।
গোলাপ, হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা কতই না জানা-অজানা ফুলের সুগন্ধ বিমোহিত করে মানুষের মনকে। বিভিন্ন রকম ফুল, অতীতে বিভিন্ন সভ্যতার সঙ্গে নিজেকে নিবিরভাবে জড়িয়ে ফেলেছে, যা বর্ণনা করাই দুষ্কর।
ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কল্পনাতীত। কবি বলেছেন, জোটে যদি একটি পয়সা ফুল কিনিও তাহার তরে। আজ এমন একটি বাহারি ফুলকে অন্ধকার থেকে আলোয় উদ্ভাসিত করছি, যার গোলাপ, রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা ফুলের মতো সুগন্ধ নেই, অথচ আছে তার অপরূপ সৌন্দর্যের বাহার, খেতের গন্ধহীন মরিচ ফুল।
কাঁচা মরিচ কে না চেনে যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ। অথচ যে ফুল থেকে মরিচের সৃষ্টি, তাকেই মানুষ বেশি মূল্যে ক্রয় করেও রান্নার কাজে ব্যবহার করতে দ্বিধা করে না। অথচ সেই ফুল মানুষের মনকে আকৃষ্ট করে না। টাকি মাছের ভাজা, মলা-ডেলা রান্না, খাসির কলিজা ভুনা, মসুর ডাল রান্নাসহ, নানা ধরনের ভর্তা-ভাজাতে কাঁচা মরিচ না হলে বাঙালির মুখরোচক খাবারই হয় না, মরিচের জন্ম যে ফুল থেকে তাকে দৃষ্টিতে রাখে কয়জন। কবির ভাষার জগৎ ঘুরিয়া দেখি ফুলের বাহার বাড়ির আঙ্গিনায় মনোমুগ্ধ কাঁচা মরিচের ফুল দৃষ্টি দেইনি তাহার। অথচ সবার দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যায় এ বাহারি মরিচ ফুলগুলো।