টিকাবৈষম্য ও অব্যবস্থাপনার শেষ কোথায়

সিনোফার্মের করোনাভাইরাসের টিকা
ছবি: রয়টার্স

টিকাবৈষম্য ও হয়রানির শিকার জনসাধারণ। সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা অবধি দাঁড়িয়েও পাননি কেউ টিকা। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাস্থ্য বিভাগ যেকোনো দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু তাঁদের এই দায়িত্বহীনতা ও অপারদর্শিতার শেষ কোথায়? অথচ এর ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।

দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য বিভাগের অবদান কম নয়। কিন্তু চলমান করোনা পরিস্থিতি যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে, আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় কতটা অকাল। নানা ধরনের সমস্যা ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের কাছে পৌঁছাতে সরকারের সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম প্রথম দিকে ভালো চললেও এখন জনসাধারণকে মাঝেমধ্যে পোহাতে হচ্ছে নানা অসুবিধা। নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় অনেক সময়। নিবন্ধনের পর এক মাসেও মেসেজ আসছে না, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেড় মাসও পেরিয়ে যাচ্ছে। আবার নিবন্ধনের দুই ঘণ্টা বা এক দিন পরও কারও কারও মেসেজ আসার কথাও শোনা যাচ্ছে। আবার অনেক সময় জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী নিবন্ধন করতে পারছেন না। সামনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তাঁরা শঙ্কায় আছেন।

শুধু কি তা–ই? টিকার পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত না করেই পাঠানো হচ্ছে মেসেজ! টিকাকেন্দ্রে অতিরিক্ত ভিড়ে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। লক্ষ করলেই দেখা যায়, এসব সমস্যার মূলেই রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অসমন্বয়।

সম্প্রতি একদিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সকাল ছয়টা বা তাঁর আগ থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কেউ পাননি টিকা। অনেক ভোগান্তির পর দায়িত্বরত কর্মীরা জানান, টিকার পর্যাপ্ত মজুত নেই। অথচ টিকাকেন্দ্রে আসা সবাই মেসেজ পেয়ে এসেছিলেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের আগে খেয়াল করা উচিত ছিল। অনেকেই তাঁদের অফিস থেকে ছুটি নিয়েছেন কিংবা অন্য সব কাজকে ফেলে রেখে টিকা নিতে এসেছিলেন। এভাবে সব সময় ছুটি পাওয়া হয়তো বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সহজ নয়। দুঃখের বিষয় হলো, হাসপাতালের কর্মীরা তাঁদের পেশাগত জায়গায় এতটা দায়িত্বহীন কী করে হতে পারেন? এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আশা রাখছি। যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সব পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা যাবে।

সাবরিনা করিম, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়