কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হোক সৈয়দ শামসুল হকের নামে

ফাইল ছবি

সম্প্রতি সংসদে পাস হলো কুড়িগ্রাম জেলার একমাত্র উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ পূরণের পথে। স্বপ্ন পূরণের এই পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।

এ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের শুরুতেই একটা ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়। কেমন সেই ভালো দৃষ্টান্ত? এই বিষয়ে আমাদের সাহায্য করবে অন্নদাশঙ্কর রায় রচিত একটি অপূর্ব রচনা পারী। রচনায় তিনি বলেছিলেন, ফ্রান্সের পথঘাটের নামগুলো দেখেই আপনি পৃথিবীর সব দেশের ইতিহাস ও ভূগোল সম্পর্কে ধারণা পাবেন।

স্বদেশের মহাপুরুষের নাম প্যারিসের সর্বাঙ্গে ছাপা। ফ্রান্সের লোকদের দেশাত্মজ্ঞান এমন করে হয় বলেই তাঁদের দেশাত্মবোধ আপনাআপনিই জন্মায়। শৈশব থেকেই তাঁরা পথ চলতে চেনেন তাঁদের জাতীয় পূর্বপুরুষদের, যাঁদের নিয়ে তাঁদের ইতিহাস লেখা হয়েছে। আর দেশের প্রতি জেলার প্রতি পর্বতের নাম, যাঁদের কোলে তাঁদের অখণ্ড জাতি লালিত হয়েছে। স্বদেশকে চেনেন বলেই তাঁরা বিশ্বকেও চিনতে পারেন।

অন্নদাশঙ্কর রায়ের এ লাইনগুলোর পর কৃতি সন্তানদের নামে কেন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া দরকার, এ ব্যাখ্যার আর প্রয়োজন পড়ে না।

কুড়িগ্রামে নতুন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। এই কুড়িগ্রামেই জন্মেছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। তিনি বাংলা সাহিত্যের কীর্তিমান কবি, গীতিকার, কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার। তাঁর নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করে তাঁকে সম্মান জানানো হোক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। আমরা জানি, কীর্তিমান লোককে সম্মান জানালে আরও কীর্তিমান লোক তৈরির পথ প্রশস্ত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে নিশ্চয়ই আবাসিক হল নির্মিত হবে। এ ক্ষেত্রেও নামকরণের ভালো উদাহরণ রাখা যায়। বীর প্রতীক তারামন বিবির নামে কোনো হলের নামকরণ করা যায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের এই বীর নারী মুক্তিযোদ্ধাও জন্মেছিলেন কুড়িগ্রামে।

লেখক: সঞ্জয় সরকার, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।