ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার বন্দী মুক্তি দিবস উদযাপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার বন্দী মুক্তি দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা’ শীর্ষক আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের বিজয় কেতন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ঘাসফুল শিশু-কিশোর সংগঠন এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। আয়োজনে সহযোগিতা করে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা অভিযুক্ত পরিষদ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাংলাদেশকে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
পাকিস্তানের তৎকালীন সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার বিচার কার্যক্রমের জন্য ঢাকা সেনানিবাসের তখনকার সিগন্যালস অফিসার্স মেসে আদালত স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এ স্থান বিজয় কেতন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তানের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর বাঙালি কর্মকর্তা ও সৈনিক। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে পাকিস্তান সরকার ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুসহ সব অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি ছিল এ মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মুক্তি দিবস।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন সাংসদ ফরিদা খানম সাকী, আগরতলা মামলার ২৯ নম্বর অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আবদুল জলিল, বৈরী সাক্ষী আবুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীর প্রতীক ও মামলার ১৭ নম্বর অভিযুক্ত শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের ভ্রাতুষ্পুত্রী নাজনীন হক মিমি ।
গওহর রিজভী তাঁর বক্তব্যে ভারত বিভাগ ও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পটভূমি তুলে ধরেন। নাজনীন হক মিমি আগরতলা মামলার মুক্তি দিবস সরকারিভাবে পালনের দাবি জানান। অন্য বক্তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঘাসফুলের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান আবদুল্লাহ বিপ্লব। প্রধান অতিথিকে বঙ্গবন্ধুসহ অভিযুক্তদের সম্মিলিত ছবি উপহার দেন ফ্লাইট সার্জেন্ট আবদুল জলিল। এর আগে শিশুরা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। পুরস্কার বিতরণ করেন গওহর রিজভী।
আলোচনার পর ঘাসফুল শিশু-কিশোর সংগঠনের শিশুশিল্পীরা ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা নিয়ে জারি গানসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন তুষার চন্দন রায়। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মাসুদ হাবিব।
উল্লেখ্য, স্বাধীন বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবজনক অবদান। এ গৌরবগাথা সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে জানাতে ঘাসফুল শিশু-কিশোর সংগঠন নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিজ্ঞপ্তি