একটি সেতুর অভাবে
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে চোপড়াবাড়ি-শালগড়া এলাকার টাঙ্গন নদে একটি সেতুর অভাবে দুটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে যুগ যুগ ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। টাঙ্গন নদের ওপর সেতু না থাকায় নৌকায় চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে স্থানীয় ব্যক্তিরা। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টাঙ্গন নদে সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ও খনগাঁও ইউনিয়নের অবস্থান পাশাপাশি হলেও ওই দুই ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে টাঙ্গন নদ। ওই নদের ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০টি গ্রামের হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। নদী পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা বলতে একটিমাত্র নৌকা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সাত–আট শ মানুষ জীবিকার তাগিদে নদী পারাপার হন। মানুষের সঙ্গে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলও পারাপার করা হয়। নৌকায় নদী পারাপারে যাত্রীদের সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া নৌকাটি যাত্রী নিয়ে পূর্ব পাড়ে পৌঁছালে পশ্চিম পাড়ের মানুষকে অপেক্ষা করতে হয়, সেটি কখন আবার এসে দাঁড়াবে এ পাড়ে। এতে যেন দুর্ভোগের শেষ নেই কিষান-কিষানিসহ শ্রমজীবী মানুষের।
ভারতী রানী, দিলখুলী, বিশো বালা, আশন্তীসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তাঁরা প্রতিদিন কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে খনগাঁও ইউনিয়নে শ্রমিকের কাজ করতে যান। সারা দিন কাজ করে ১০০ টাকা মজুরি পান। নৌকা পারাপার হতেই তাঁদের ১০ টাকা দিতে হয়। এতে যেন তাঁদের দুঃখের পাশাপাশি দুর্ভোগের শেষ নেই। তাঁদের কষ্ট লাঘবে সেখানে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানান তাঁরা।
লিটন চন্দ্র নামের একজন জানান, নদীর পূর্ব পাড়ের চপড়াবাড়ী গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনিই খনগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কাজ করতে যেতে হয় তাঁদের। নদী পারাপারের জন্য প্রতিদিন জনপ্রতি গুনতে হয় ১০ থেকে ১৫ টাকা। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ অঞ্চলের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। জনপ্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’
নৌকার মাঝি ফজলে রাব্বি বলেন, ‘নদী পারাপারের জন্য ঘাটটি লিজ নিয়েছি। এ থেকে প্রতিদিন ভালোই আয় হয়। তবে মানুষের খুব কষ্ট হয় এভাবে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে। এখানে সেতু হোক এটা আমারও দাবি। তাহলে আর দুর্ভোগ থাকবে না।’
কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, রামদেবপুর-কোষাডাঙ্গীপাড়া এলাকায় সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সাংসদসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে পরের ধাপে চোপড়াবাড়ী-শালগড়া এলাকায় সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।