পাঠ প্রতিক্রিয়া: আনিসুল হকের ‘সুদূরতমা’
হঠাৎ আনিসুল হক নামটা সামনে এল। ফেসবুকেই দেখলাম। এবং তাঁর ফেসবুক ওয়ালে একটা লেখা পড়লাম। ভালো লাগল। ভালো বলতে বেশ ভালো।
এর মধ্যে ঢাকা থেকে বাসায় এসে বই ঘাঁটছিলাম পড়ব বলে। দেখি আনিসুল হকের দুটি বই। ‘দুঃস্বপ্নের যাত্রী’ ও ‘সুদূরতমা’ আমার কালেকশনে।
আশ্চর্য ব্যাপার! এই রাইটারের বই কই থেকে এল?
তখন মনে পড়ল, দুঃস্বপ্নের যাত্রী অনেক বছর আগে পড়েছিলাম, তবে পুরোটা শেষ করিনি। আবছা মনে আছে। কিন্তু আমি তখনো আনিসুল হককে ঠিকঠাক চিনি না। সদ্য পরিচিত হচ্ছি।
আগ্রহ থেকে ‘সুদূরতমা’ উপন্যাসটি পড়া শুরু করলাম, কোনো রকম এক্সপেকটেশন ছাড়াই। দুই পাতা পড়তে রেশে পড়ে গেলাম। বইয়ের পৃষ্ঠায় অটোমেটিক হাত চলতে থাকল। রাত জেগে বইটা শেষ করলাম। এবং ভাবলাম, আমার এত বড় ব্যর্থতা, আমি এই লেখককে চিনি না! একটা তীব্র খারাপ লাগা অনুভব হলো। অনুশোচনাও।
সহজ শব্দ, সাধারণ গল্প অসাধারণভাবে উপস্থাপন করার ক্ষমতা যাঁর আছে, সে নিশ্চয়ই সাধারণ কোনো লেখক নয়। বইটা পড়ে খুবই মুগ্ধ হয়েছি। গায়ে স্নিগ্ধ বাতাস বয়ে যাওয়ার মতো মুগ্ধতা...চোখ বন্ধ করলেই অনুভব করা যায়। বইয়ের নামটা বিশেষ করে। অসম্ভব সুন্দর। আমি নাম নিয়ে বরাবরই সচেতন, মানুষের নাম হোক বা বইয়ের নাম।
বইটা শেষ করে আনিসুল হকের একটা কবিতার কয়েক লাইন মুখস্থ করে ফেলেছি:
তুই কি আমার দুঃখ হবি?
এই আমি এক উড়নচণ্ডী আউলা বাউল
রুখো চুলে পথের ধুলো
চোখের নিচে কালো ছায়া।
সেইখানে তুই রাত বিরেতে স্পর্শ দিবি।
তুই কি আমার দুঃখ হবি?