গাজালা মাহমুদ: প্রেম-বিরহের একগুচ্ছ কবিতা

অলংকরণ: তুলি

১.

ডুব
তুমি বলেছিলে, তুমি সমুদ্র—
আমি তাই টাইটানিকের ডুবন্ত জাহাজ।
ধ্বংসাবশেষ বুকে আগলে রেখো।

২.

হৃৎপিণ্ড
তোমারে না পাওয়ার দুঃখ বাদ দিলে জীবন খুব সুন্দর।
সমস্যা ওই একটাই, বাদ দিতে পারি না।
হৃৎপিণ্ড কাইটা বাদ দেওয়া যায়?
তুমি তো আমার হৃৎপিণ্ড।
না থাকা তোমারেই তাই বুকের মধ্যে নিয়া হাঁটি।
গান গাই, কথা কই, ক্লান্ত হইলে বুকে নিয়াই ঘুম দেই।
ঘুমের মাঝখানেও তুমি বড় ত্যক্ত করো।
বড় যন্ত্রণা দেও, যন্ত্রণায় বুকের পাঁজর বাঁকা হইয়া আসে।
তবু ফালাইতে পারি না।
তোমারে কথা দিছিলাম সারা জীবন বুকে বাইন্ধা রাখব।
আমি আমার কথা রাখছি।
তুমি নাই।
তোমারে না পাওয়ার দুঃখ বুকের ভেতর বান্ধা আছে।
তুমি যেদিকেই যাও, ভালো থাইকো...।

৩.

পাষাণ
একটা তুমি আগাগোড়াই পাষাণ,
বন্যা হলেও মাঠ ভেজে না প্রাণে।
তোমার মিথ্যে তোমার চাইতে ভালো,
তবুও সে দরদ পুষতে জানে।
কয় ফোঁটা জল শুকিয়ে গেছে চোখে,
কয় ফোঁটা জল বইছে নদীর মতো।
খবর তুমি সব শুনেছ তবু,
খামচে দিলে সারেনি যেই ক্ষত!  
তোমার আঘাত তোমার চাইতে ভালো,
অন্তত সে আপন করতে জানে।
নইলে তুমি এতই বেশি পাষাণ,
বন্যা হলেও মাঠ ভেজে না প্রাণে...।

৪.

শাপ
প্রেমের জন্য কী করিনি আমি!
তুলতুলে হাত লাল করেছি ভাঙতে গিয়ে বেড়ি।
এ হরতালে মরতে আছি রাজি,
তৈরি আছি শেষ প্রহরেও বলতে তোমার দেরি!  
তুমি বললে মুহূর্তে দেই ঝাঁপ,
জ্বালিয়ে দাও দ্রোহের চিতা পুড়িয়ে ফেলি পাপ।
সতীদাহ বিলীন হয়নি আজও,
জান নিয়ে নাও এই বাহানায় ঘুচিয়ে ফেলি শাপ।