এভারেস্টের তিব্বত বেজক্যাম্পে শিখরের হাতছানি

বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় যখন পদচিহ্ন আঁকা শেষ, তখন সিদ্ধান্ত নিলাম মাউন্ট এভারেস্ট দেখব। কোথা থেকে দেখা যাবে? ভাবতে ভাবতেই পরিবারসহ চলে গেলাম নেপালের চন্দ্রগিরি পাহাড়ে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। অপেক্ষা করছি কখন আকাশ পরিষ্কার হবে। ১ ঘণ্টা, ২ ঘণ্টা অপেক্ষা। তারপর আস্তে আস্তে মেঘ সরে যেতে লাগল। দেখা মিলল পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের। মাউন্ট এভারেস্ট। ২৯ হাজার ৩০ ফুট। টপ অব দ্য ওয়ার্ল্ড। কিন্তু এত দূর থেকে দেখে কি মন ভরে? ছোট্ট একটা চূড়া। এত বিশাল শৃঙ্গের এইটুকু চূড়া দেখে আশা মিটল না। দেশে এসে সিদ্ধান্ত নিলাম, মাউন্ট এভারেস্টের বেজক্যাম্পে যাব, ফাইনাল। সে জন্য নিজেকে তৈরি করতে শুরু করি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার হাঁটা, ওজন কমানো। এভারেস্ট বেজক্যাম্পে যেতে হলে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ শক্ত থাকা দরকার। এভাবেই তৈরি করছি নিজেকে। পাশাপাশি খোঁজখবর রাখছি কীভাবে মাউন্ট এভারেস্টের বেজক্যাম্পে যাওয়া যায়। বেশি বেশি খোঁজখবর রাখছি।

জানলাম মাউন্ট এভারেস্টের বেজক্যাম্প দুটি। একটি নেপাল দিয়ে লুকলা হয়ে যাওয়া যায়, আরেকটি চীন দিয়ে তিব্বত হয়ে। নেপালের দিকের উচ্চতা ১৬ হাজার ৪০৪ ফুট এবং চীন হয়ে তিব্বত দিয়ে বেজক্যাম্পের উচ্চতা ১৭ হাজার ১৩০ ফুট। খোঁজখবর নিয়ে জানলাম, বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি কেউ চীন দিয়ে তিব্বত হয়ে এভারেস্ট বেজক্যাম্পে যায়নি। এই পথটা অনেক কঠিন ও দুরূহ। আমি যেহেতু অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করি, তাই সিদ্ধান্ত নিই চীন দিয়ে তিব্বত হয়ে মাউন্ট এভারেস্ট বেজক্যাম্প যাব। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। নিজেকে আরও মানসিক ও শারীরিকভাবে শক্ত করে তৈরি করতে লাগলাম। এমন সময় কাছের বন্ধু সরকার কবীরও তার মাউন্ট এভারেস্ট বেজক্যাম্প যাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করল। বন্ধু কবীরও অনেক দিন থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। মিলে গেল দুজনের পরিকল্পনা।

শুরু হলো অভিযান। অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলাম। বুঝতে পারলাম, তিব্বত দিয়ে মাউন্ট এভারেস্ট বেজক্যাম্প যেতে হলে তিব্বত ট্যুরিজম বোর্ডের অথোরাইজড কোনো এজেন্সির মাধ্যমে যেতে হবে। যোগাযোগ শুরু করলাম কয়েকটি এজেন্সির সঙ্গে। সবার বক্তব্য মোটামুটি একই রকম। তিব্বতে প্রবেশ করতে হলে চীনের ভিসা ও তিব্বত প্রশাসনের পারমিট লাগবে, তারপর মাউন্ট এভারেস্ট যাওয়ার অনুমতিপত্র মিলবে। বিশাল এক খরচের হিসাব দিল সবাই। ৪০ শতাংশ অ্যাডভান্স পেমেন্ট করতে হবে। পরিচয় না থাকা এজেন্সিকে ৪০ শতাংশ অ্যাডভান্স করা কঠিন। অবশেষে বন্ধু কবীরের চীনা এক বন্ধুর মাধ্যমে ৪০ শতাংশ অ্যাডভান্স করি। পাশাপাশি আমরা চীনের ভিসাও করে ফেলি।

শুরু হলো যাত্রা। তবে কি আমাদের স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে? ঢাকা-গুয়াংজু এয়ারের টিকিট কেটে ফেললাম। যেদিন যাব তার আগের দিন রাতে তো ঘুমই হলো না। সারা রাত মনে মনে মাউন্ট এভারেস্ট দেখছি।

চীনে পৌঁছে আমরা তিব্বত ভ্রমণের পারমিট পেয়ে পাই। আমাদের এজেন্সি তিব্বত থেকে কুরিয়ার করে আমাদের চীনের যে হোটেলে থাকব সেই হোটেলের ঠিকানায়। দেখি, মাত্র ৮ দিনের পারমিট। ৮ দিনের বেশি তিব্বতে থাকতে পারব না। পরে দেখি, আমাদের এজেন্সি সেভাবেই ট্যুর শিডিউল করেছে। পারমিট নিয়ে ফ্লাই করি তিব্বতের রাজধানী লাসার উদ্দেশে। লাসা পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু রাজধানী। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই রাজধানী। দালাই লামার শহর। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে দেখি আমাদের এজেন্সির এক সুন্দর স্মার্ট মেয়ে আমাদের নাম লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এক ঘণ্টার জার্নি করে হোটেলে পৌঁছালাম। এই এক ঘণ্টার জার্নিতে গাইড আমাদের অনেক কিছু জানাল। আশপাশে সুউচ্চ পাহাড়, আঁকাবাঁকা পথ। পাহাড়ে কোনো গাছপালা নেই। ধূসর রঙের। মাঝে মাঝে বিশাল টানেলের মধ্য দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। এরপর চলে এলাম হোটেলে। দারুণ হোটেল। ভীষণ ঠান্ডা। রাতে পরিচিতি পর্ব ও ডিনার। রাত বলতে এখানকার লোকজন সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নেয়।

ডিনারে পরিচিত হলাম আমাদের টিমের ১১ জনের সঙ্গে। আমরা ২ জন বাংলাদেশি, ৩ জন পর্তুগিজ, ১ জন জার্মান, ১ আমেরিকান, ১ জন ফ্রান্সিস, ২ জন ভারতীয় এবং ১ জন নেদারল্যান্ডসের। হাসি আড্ডা খাওয়াদাওয়া শেষ করে বিশ্রাম। লাসার বাতাসে অক্সিজেন কম থাকে। উচ্চতাজনিত অসুস্থতা হতে পারে বিধায় গাইড সব রুমে ৩টি করে পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে গেল। তিব্বতের পাহাড়ে যেহেতু গাছপালা নেই, তাই এখানকার বাতাসে অক্সিজেন কম থাকে। এর চেয়ে অনেক উঁচুতে আমি উঠেছি, কিন্তু শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয়নি; কিন্তু এখানে সমস্যা হলো। রাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাবহার করলাম। পরের দিন উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সবাই লাসায় থাকলাম। শহরে বেশ কিছু মনেস্ট্রি দেখলাম। পোতালা প্যালেস, যেখান থেকে দালাই লামা তাঁর ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। দালাই লামা তিব্বতিদের কাছে আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গুরু। বিশাল প্রাসাদ। পাহাড়ের মতো। হেঁটে হেঁটে দেখছি। খুব বেশি হাঁটাহাঁটি করা যাচ্ছে না। ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি। শহরজুড়ে অনেক মনেস্ট্রি। এরা খুব ধর্মভীরু। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। পরের দিন শুরু হলো মাউন্ট এভারেস্ট দেখার কর্মসূচি। এভারেস্ট বেজক্যাম্প যাওয়ার প্রস্তুতি।

সকালে ট্যুরিস্ট বাসে যাত্রা করে আমরা সন্ধ্যায় পৌঁছে যাই সিগাতছে নামের শহরে। সিগাতছে দারুণ শহর। ১৩ হাজার ফুট উঁচুতে। সিগাতছে তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। লাসা থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে। মূলত এখান থেকেই মূল ট্যুর শুরু। এখান থেকে মাউন্ট এভারেস্টের পারমিট নিয়ে যাত্রা শুরু করলাম পরের দিন। পারমিট নিতে পাসপোর্টসহ অনেক কাগজপত্র লাগল।

১১ জন যাচ্ছি। সবার ব্যাগে ৪ থেকে ৫টি করে পোর্টেবল অক্সিজেনের বোতল। যাচ্ছি সবাই একসঙ্গে। চারপাশে ধূসর পাহাড়। গাছপালা নেই। ভীষণ ঠান্ডা। আকাশচুম্বী সব পাহাড়। কেউ আগে কেউ পেছনে। মাঝে মাঝে সঙ্গে থাকা শেরপা ইংরেজিতে দারুণ করে বর্ণনা দিচ্ছে সব পাহাড়ের। পাহাড়ি নদীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। যেমন জানলাম, কৈলাস পর্বত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র নদের সৃষ্টি হয়েছে। দুপুর হতেই আগে থেকেই ঠিক করে রাখা এক পাহাড়ি গৃহস্থের বাড়িতে খাবার খেতে ঢুকলাম। ছোট ছিমছাম পাথুরে বাড়ি। ভুট্টার ছাতু, আঠালো ভাত, সবজি আর ইয়াকের মাংস দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিলাম। কিছুক্ষণ পর আবার যাত্রা শুরু। সন্ধ্যার আগেই নির্ধারিত কোনো বাড়িতে ঢুকে পড়ি, যা শেরপা আগেই ঠিক করে রাখে। এক কাপড়েই ঘুম। ভীষণ ঠান্ডা। পরদিন ভোর হতেই শেরপা সবাইকে দাঁড় করিয়ে দিনের প্ল্যান বলে। কতটুকু যাব সামনে, কোন কোন পাহাড় পড়বে, কত উঁচুতে উঠব, কতটুকু নিচে নামব—এসব। সবই পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে।

যাত্রার পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে থাকার ব্যাবস্থা করা থাকে। এ পথের গ্রামগুলো খুবই সুন্দর। ছোট ছোট গ্রাম। অল্প কয়েকটি ঘরবাড়ি। পাহাড়ের ঢালে সাজানো। এরা মূলত ইয়াক চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। মানুষের চেয়ে ইয়াকের সংখ্যা বেশি। পাহাড়ের ঢালে ছোট ছোট কৃষিজমিতে ভুট্টার আবাদ হচ্ছে। পাহাড়গুলো ধূসর। গাছপালা নেই। সারিবদ্ধভাবে যাচ্ছি পাহাড়ের বুক চিরে। সামনে বিশাল উঁচু পাস। অতিক্রম করতে হবে। তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে। গ্লেসিয়ার ভীষণ। আমরাও প্রস্তুত। আবহাওয়া হঠাৎ খারাপ হয়ে গেল। এখন আমরা প্রায় ১৯ হাজার ফুট উঁচুতে। চারপাশের পাহাড়গুলো বরফে মোড়ানো। মৃদু তুষারপাত হচ্ছে। বেশিক্ষণ থাকার সুযোগ নেই। নির্ধারিত গন্তব্য পৌঁছাতে হবে। আবার নিচের দিকে নামছি। এভাবে একবার উঠছি আবার নামছি। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পাথুরে পথ। পাহাড়ি ছাগলগুলো দেখতে অসাধারণ। গায়ে বিশাল পশম। খুবই শান্ত প্রকৃতির। কোলে নিয়ে ছবি তুললাম। ইয়াকগুলো পাথুরে পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা ধূসর বর্ণের ঘাস খাচ্ছে। দেখভাল করার জন্য রাখাল পাহাড়ের ভাঁজে ছায়ায় বসে আছে। আমরা যাচ্ছি কখনো নীলাভ কোনো হ্রদের পাশ দিয়ে। হ্রদটি এঁকেবেঁকে পাহাড়ের ভাঁজে ঢুকে পড়েছে।

তখন বিকেল, সন্ধ্যা নামতে আর কিছু সময় বাকি।

সকালের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা রাতে যেখানে থাকবে সেখানে পৌঁছাতে হয়তো আর ৩০ মিনিট মতো সময় লাগবে। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকার নেমে আসে। সবাই একটু দ্রুত যাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে থাকা শেরপা বেশ খানিকটা এগিয়ে আছে। তখন আমরা ১৫ হাজার ফুট ওপরে আছি। চারপাশে গাছপালাহীন ধূসর পাহাড়।

রাতে যেখানে থাকব সেটা একজন ইয়াকচাষির গৃহস্থ ঘর। এ পথের পরিব্রাজকেরা সাধারণত টাকার বিনিময়ে এ বাড়িতেই থাকেন। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই হঠাৎ আমার ভীষণ মাথাব্যথা শুরু হলো। যদিও কয়েক দিন থেকে মাথাব্যথা হচ্ছিল, এখন ব্যাপক আকার ধারণ করল। সঙ্গে বমিও হলো। এগিয়ে থাকা শেরপা দ্রুত দৌড়ে কাছে এল। আমি পাথুরে পথে বসে পড়লাম। পাশে থাকা বন্ধু কবীর ও সবাই মিলে ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেল। ১০ মিনিটের ব্যবধানে কয়েকবার বমিও হলো। শেরপা পকেট থেকে পালস অক্সিমিটার বের করে শরীরের অক্সিজেন লেভেল মাপল। আমার কানে অস্পষ্ট ভেসে এল ‘ওহ, সিক্সটি ফাইভ’। সবার চোখ দেখি বড় বড় হয়ে গেছে। আমিও কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। বুকে ভীষণ চাপ অনুভব করছি। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু কবীর ব্যাগ থেকে কয়েকটি অক্সিজেন বোতল বের করে মাক্সসহ আমার মুখে ধরল। ১০ মিনিট, ২০ মিনিট, ৩০ মিনিট। সবাই নিস্তব্ধ, কারও মুখে কথা নেই। সবাই আমার চারদিকে দাঁড়িয়ে। পুরো ব্যাগভর্তি পোর্টেবল অক্সিজেন বোতল। পরপর ৩টি বোতল শেষ। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে লাগল বুকের চাপ। আমি নিজে কিছুক্ষণ আরও ২ বোতল নিলাম। তাড়াতাড়ি গৃহিণী ইয়াকের স্যুপ সঙ্গে আলু দিয়ে তৈরি করে জোর করে খাওয়াল। মাথা টিপে দিল। মনে হলো এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম।

সুন্দর পরিপাটি গৃহস্থের আবাস। কিন্তু টয়লেটের অবস্থা বেমানান। ইয়াকের গোবর জমিয়ে রাখে রান্নার জন্য। এই গহিন গ্রামেও বিদ্যুৎ আছে।

এভাবে চলতে চলতে পঞ্চম দিনে বিকেল ৪টায় আমরা পা রাখি মাউন্ট এভারেস্টের বেজক্যাম্পে। এ এক অসাধারণ মুহূর্ত। ১৭ হাজার ১৩০ ফুট উঁচুতে আমরা। পরিষ্কার আকাশ। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে বিশাল দৈত্যাকৃতির বরফে মোড়ানো পর্বত। মাউন্ট এভারেস্ট। এত কাছে এত পরিষ্কার পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ দেখার অনুভূতি অন্য রকম। তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে। আমাদের জন্য যে তাঁবু নির্ধারণ করা ছিল সেখানে ব্যাগ রেখে এগিয়ে গেলাম যত কাছে যাওয়া যায়। সামনে হিমালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি নদী, ভীষণ বাতাস। এখানে সূর্য ডোবে অনেক পরে। ঠান্ডার মধ্যেই অপেক্ষা করছি সূর্যাস্ত দেখার জন্য। যত দূর চোখ যায় চারপাশে তাকাই, সাদা পাহাড় বরফে মোড়ানো। অবশেষে রাত আটটা নাগাদ সূর্য ডুবতে শুরু করল।

এ এক অপার্থিব সৌন্দর্য। মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া ধীরে ধীরে সাদা থেকে সোনালি আকার ধারণ করল। আমরা প্রাণভরে দেখছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যাবে। ঠান্ডায় আমরা জমে যাচ্ছি। সবাই দৌড়ে তাঁবুতে ঢুকলাম। তাঁবুর ওপরে ইয়াকের পশম লাগানো। ১১ জন এক তাঁবুতেই। সারা দিনের ক্লান্তি আর ঠান্ডায় যে যেভাবে ছিলাম সেভাবেই কিছু খেয়ে ঘুম। পরের দিন সূর্যোদয় দেখার জন্য ভোর পাঁচটায় উঠলাম। কম্বল মুড়ি দিয়ে নাক–মুখ পেঁচিয়ে গেলাম। অন্ধকার পর্বত আস্তে আস্তে সাদা হলো, তারপর সোনালি। কিছুক্ষণ থেকে চলে এলাম তাঁবুতে। এবার ফেরার পালা। বিকল্প পথে পথ কিছুটা কমিয়ে দুই দিনের মাথায় চলে এলাম লাসায়।

লেখক: মারুফ হোসেন, পর্যটক