জকিগঞ্জের আমলশীদের ‘ত্রিমোহনা’
সিলেটের প্রান্তসীমায় জকিগঞ্জ উপজেলা। জকিগঞ্জের পশ্চিমে বিয়ানীবাজার, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য, উত্তরে কানাইঘাট উপজেলা এবং দক্ষিণে আসামের করিমগঞ্জ উপজেলা। এখানে একটি বিশেষ আকর্ষণীয় স্থান হলো ‘ত্রিমোহনা’, যা সুরমা, কুশিয়ারা এবং ভারতের বরাক নদের মিলনস্থল হিসেবে পরিচিত। এটি জকিগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর বারঠাকুরী ইউনিয়নের আমলশীদ এলাকায় অবস্থিত এবং স্থানীয়রা একে ‘তি-গাঙ্গা’ নামেও অভিহিত করেন।
ত্রিমোহনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। এখানে সুরমা, কুশিয়ারা এবং বরাক নদের মিলনে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য দৃশ্য। সামনের দিকে ভারতের বরাক নদ, ডান দিকে কুশিয়ারা নদী এবং বাঁ দিকে সুরমা নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদীর মাঝখানে সবুজ গাছপালা দ্বারা আচ্ছাদিত একটি দ্বীপসদৃশ উঁচু বালুচর দেখা যায়। ত্রিমোহনা শান্তি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। নদীর তীরে ছোট ছোট নৌকা বাঁধা থাকে। নদীর চরের মধ্যে স্থানীয়রা নানা রকম সবজি চাষ করেন।
ত্রিমোহনায় পৌঁছানোর জন্য সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের আমলশীদ এলাকায় একটি বাঁকের দক্ষিণমুখী রাস্তা ধরে এগোতে হয়। সিলেট থেকে জকিগঞ্জগামী বাসে চড়লে হেল্পারকে বললে ত্রিমোহনার রাস্তায় নামিয়ে দেবে। এ ছাড়া সিলেট শহর থেকে নির্দিষ্ট যানবাহন বা প্রাইভেট কার দিয়েও ত্রিমোহনায় আসা যাবে।
ত্রিমোহনার পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও মনোরম। নদীর পাড় ধরে কিছুটা হাঁটলেই ভারতের সীমান্ত দৃশ্যমান হয়। মাঝির নৌকা চালানোর দৃশ্য এবং নদীর স্রোতের শান্তি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। চারপাশের সবুজ গাছপালা, নদীর ধারে প্রবাহিত শীতল বাতাস এবং নদীর পানির কলকল ধ্বনি ত্রিমোহনার সৌন্দর্যকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলে। স্থানীয়রা এখানে অবসর সময় কাটাতে এবং প্রকৃতির অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে আসেন।
তবে পর্যটকদের জন্য কিছু সমস্যা রয়েছে। এখানে পর্যাপ্ত বসার স্থান ও রেস্তোরাঁর অভাব রয়েছে, যা পর্যটকদের কিছুটা অসুবিধায় ফেলতে পারে। স্থানটির সুযোগ-সুবিধা আরও উন্নত করার দাবি পর্যটকদের।
*লেখক: আবীর আল নাহিয়ান, আটগ্রাম, জকিগঞ্জ, সিলেট
নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]