ঘুরে দেখা নীরমহল
নীরমহল, ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে মেলাঘরের রুদ্রসাগর হ্রদের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন এক জলমহল। রাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য দেববর্মণ গ্রীষ্মকালে অবকাশযাপনের জন্যই ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ‘মার্টিন অ্যান্ড বার্ন’কে দিয়ে তৈরি করেন অনিন্দ্য সুন্দর স্থাপনাটি।
এটি ভারতবর্ষে দুটি দৃষ্টিনন্দন জলমহলের একটি। ১৯২১ সাল থেকে শুরু করে টানা নয় বছর চলে এর নির্মাণকাজ।
জলমহলটির দুটি অংশ। পশ্চিম দিকের অংশ রাজপরিবারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যা অন্দরমহল নামে পরিচিত। পূর্ব দিকে রয়েছে একটি উন্মুক্ত থিয়েটার, যেখানে মহারাজা ও রাজপরিবারের জন্য আয়োজন করা হতো নাচ, গান, নাটকসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। মোট ২৪টি কক্ষ রয়েছে নীরমহলে।
নীরমহলে ডিএসএলআর ক্যামেরা, ছবি তোলা, ভিডিও ধারণে রয়েছে তদারক কাজে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু আসলে কেউ তা মানলেই হয়। রুদ্রসাগর হ্রদের জলে অবতরণের জন্য নীরমহলের ভেতরে দুটি সিঁড়ি রয়েছে। একসময় মহারাজা রাজঘাট থেকে হস্তচালিত নৌকায় এ জলমহলে যেতেন।
মধ্যযুগীয় হিন্দু ও মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণ রয়েছে এর নির্মাণশৈলীতে, জানালেন নীরমহলের তত্ত্বাবধায়ক সুভাষ বর্মণ। তিনি আরও বলেন, ‘নীরমহলের ছাদে যে বাগানটি দেখছেন, তা ভারতের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন চত্বর বাগান। একসময় নীরমহলে সন্ধ্যায় “ওয়াটার অ্যান্ড লেজার শো” হতো। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হ্রাস পেয়েছে এর সৌন্দর্য ও জাঁকজমকপূর্ণ অবস্থা।’
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মী সুমন বাবু বলেন, ‘চারপাশে হ্রদের অথই জল, মাঝখানে চমৎকার এ জলমহল, অসাধারণ! ঘাট থেকে ২০ মিনিট নৌকায় চড়ে এখানে এসেছি। দেশের কাছেই দৃষ্টিনন্দন এমন জায়গা, দেখে ভালো লাগছে।’
পাসপোর্ট, ভিসা তৈরি থাকলে খুব সহজে ও স্বল্প খরচে বাংলাদেশের আখাউড়া দিয়ে ভারতের শিক্ষা–সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ সাদামাটা জীবনযাপনের ত্রিপুরা রাজ্যের এসব স্থাপনায় ঘুরে আসা যায় খুব সহজেই।