তৈরি পোশাকশিল্পে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে শুরু হচ্ছে ‘ইনস্পায়ার চ্যালেঞ্জ ফান্ড’

ইনস্পায়াার চ্যালেঞ্জ ফান্ড উদ্যোগ চালু বিষয়ে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন সুইডিশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মিস মারিয়া স্ট্রিডসমানছবি: সমষ্টির সৌজন্যে

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শক্তি-দক্ষতার ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। এ জন্য সুইডেন দূতাবাসের সহায়তায় সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ চলতি মাসের শেষে ‘ইনস্পায়ার চ্যালেঞ্জ ফান্ড’–এর প্রথম ধাপ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান সমষ্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ইনস্পায়ার (ইনেশিয়েটিভ টু স্টিমুলেট প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ফর রিসোর্স এফিসিয়েন্সি) উদ্যোগ নিয়ে সম্প্রতি এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। কর্মশালায় সুইডিশ দূতাবাস, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এইচঅ্যান্ডএম, ইন্ডিটেক্স, মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সবুজ জ্বালানিতে বেসরকারি বিনিয়োগে ঝুঁকি হ্রাস করতে ফ্যাক্টরিগুলোকে প্রকল্প ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হবে। বাকি ৬০ শতাংশ ব্যয় ফ্যাক্টরিগুলোকে যৌথভাবে বহন করতে হবে। প্রকল্পভেদে চ্যালেঞ্জ ফান্ডের অনুদানের পরিমাণ এক থেকে পাঁচ লাখ সুইডিশ ক্রোনার।

সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর সুইডেন দূতাবাসের ইনক্লুসিভ ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ইকরামুল এইচ সোহেল কর্মশালায় বক্তব্য দেন।

সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মিস মারিয়া স্ট্রিডসমান তাঁর বক্তব্যে সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক খাত অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এবং এর সবুজ রূপান্তর পরিবেশ ও সমাজের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইনস্পায়ারের মাধ্যমে আমরা এমন কার্যকর সমাধানকে উৎসাহিত করতে চাই, যা কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।’

এই চ্যালেঞ্জ ফান্ড কোনো ঋণ নয়, এটি একটি পারদর্শিতাভিত্তিক অনুদান। যেটা মাঝারি ও অপেক্ষাকৃত ছোট কারখানাগুলো ও এনার্জি সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দূরত্ব পূরণে সহায়তা করবে। সুইসকন্ট্যাক্টের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সৈয়দা ইসরাত ফাতেমা বলেন, ‘আমরা চাই, ফ্যাক্টরিগুলো অনুধাবন করুক যে টেকসই হওয়া কেবল খরচ নয়, এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাও।’ ইনস্পায়ারের টিম লিডার বিদৌরা তাহমিন খান জানান, এই অনুদান দুটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে: ছোট প্রকল্প (৬–১২ মাস) এবং মাঝারি প্রকল্প (২৪ মাস পর্যন্ত), যার মাধ্যমে পরীক্ষামূলক প্রকল্প ও বড় ধরনের প্রভাব রাখতে পারে, এমন উদ্যোগকে সহায়তা দেওয়া হবে।

চলতি মে মাসের শেষ দিকে ধারণাপত্র চেয়ে জন্য প্রথম ধাপ শুরু করা হবে। ধারণাপত্র জমা দেওয়ার জন্য আগ্রহী কারখানাগুলো চার সপ্তাহ সময় পাবে। সৌরবিদ্যুৎ, বায়োমাস প্রযুক্তি, শক্তিসাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি বা পানি সংরক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলো অগ্রাধিকার পাবে। ধারণাপত্র অবশ্যই বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাওয়ার জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে মিল থাকতে হবে।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সুইসকন্ট্যাক্টের কর্মকর্তারা।