যে গ্রামের শিশু, কিশোর ও যুবকেরা সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে

ছবি: সংগৃহীত

আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমাদের গ্রামের শিশু, কিশোর আর যুবকদের সঙ্গে বসে কথা বলার। ইচ্ছা ছিল নতুন প্রজন্মের এই ছেলেরা গ্রাম আর তাদের নিজেদের সম্পর্কে কী ভাবে, তা খুব কাছে থেকে জানার। এ লক্ষ্যেই গত ২৫ ডিসেম্বর এশার নামাজের পর ৮টা ৪৫ মিনিটে ওদের নিয়ে বসলাম। কথা হলো প্রায় ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। খুব ভালো লাগলো ওদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে। ওরা এখন কী করছে, ভবিষ্যতে কী করতে চায়, গ্রামটাকে কেমন দেখতে চায়—এসব কথা আরকি। খুব আন্তরিক পরিবেশে অনেকক্ষণ কথা হলো। মজার বিষয় হলো ওরা আমার সঙ্গে একেবারে খোলা মনে কথা বলেছে। ওদের সঙ্গে কথা বলে আর ওদের ইতিবাচক চিন্তাধারা সম্পর্কে জেনে আমি সত্যি অভিভূত হয়েছি।

সবার সঙ্গে কথা বলে যা জানলাম, তা-ই আমি এখন শেয়ার করছি। ইয়াসিন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা মারা গেছেন। ইয়াসিনের স্বপ্ন, বড় হয়ে সে সরকারি চাকরি করবে। বর্তমানে পড়াশোনার পাশাপাশি সে খুব পরিশ্রম করে কৃষিকাজ করে। তার পড়াশোনার খরচ সে নিজেই জোগাড় করে। পাশাপাশি সংসারের খরচও জোগায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকে (সম্মান) অধ্যয়নরত রানা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। সে সরকারি চাকরির চেষ্টা করছে। সুবিধামতো সরকারি চাকরি না পেলে একজন উদ্যোক্তা হতে চায়। আনোয়ার হোসেন ইতিহাসে স্নাতকোত্তরে পড়ছে। স্বপ্ন বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে ঢুকবে। তার ছোট ভাই বেসরকারি চাকরি করে তাকে অর্থনৈতিক সাপোর্ট দিচ্ছে। ইমন এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। তার ইচ্ছা ডিফেন্সে চাকরি করবে, সৈনিক হয়ে দেশের সেবা করবে। ইমরান দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে কৃষি কাজ করে পড়াশোনার খরচ জোগায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। মাইনুল এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির চেষ্টা করছে। সেও কৃষিকাজে খুব পরিশ্রম করে। নবম শ্রেণির সিয়ামের ইচ্ছা সরকারি চাকরি করবে।

ছবি: সংগৃহীত

অষ্টম শ্রেণির নাহিয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলে ওর টাকার সমস্যা হবে না। ওর বোন স্পেনে থাকে। বোনই ওর খরচ জোগাবে। দশম শ্রেণির আরমান ইমনের মতো ডিফেন্সে চাকরি করতে চায়। সে কৃষিকাজে বাবাকে সাহায্য করে। আশরাফুল পড়ছে সপ্তম শ্রেণিতে। বাবার কাছ থেকে কাজ শিখে ইতিমধ্যেই সে ভালো মেকানিক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সেও উচ্চশিক্ষা নিতে চায়। মামুন বড় হয়ে সিঙ্গাপুর যেতে চায়। সাঈদ নূর, সালমান, মাহিন ও বাঁধন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়। তোফায়েল কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। সে আলিয়া মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষা নিতে চায়।

ছবি: লেখক

এখানেই কথা হয় কদমশ্রী গ্রামের সানোয়ার হোসেনের সঙ্গে। আনন্দ মোহন কলেজে ইতিহাসের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। সে একজন গীতিকারও। ২০২০ সালের মুজিব বর্ষে ময়মনসিংহ জেলার থিম সং রচনা করে সে। গানটি গেয়েছেন শিল্পী মিল্টন খন্দকার। কর্ণফুলী টানেল ও শহীদ শেখ রাসেলকে নিয়েও গান লিখেছে। তার আরও অনেক ভালো ভালো গান আছে। বাংলাদেশের অনেক সুপরিচিত শিল্পী তার লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গান লিখে সে কিছু অর্থও পায়, যা তার পড়াশোনার কাজে লাগে। তার আর্থিক অবস্থা খুব একটা সচ্ছল নয়। সে সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করছে। আপাতত সে টিউশনি করে তার খরচ জোগায়। তার সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগল। বেশ স্বনির্ভর ও সৃজনশীল ছেলে। আমার ধারণা, ভবিষ্যতে সে খুব ভালো কিছু করবে।

এখানে কথা হলো হায়দার আলী সুমনের সঙ্গে। সুমনের সন্তান একজন। সুমন খুব বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি। একসময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠাননে চাকরি করত। এখন বাড়িতে থাকে, মা-বাবার সেবা করে। সুমন বলল, যে তার জীবনে পড়াশোনাসহ অনেক কিছুর অপূর্ণতা আছে। সে গ্রামের ছেলেদের মধ্যে পূর্ণতা দেখতে চায়। খুব ভালো লাগল সুমনের কথা শুনে। আসলে সুমনের চিন্তাধারা খুব সুন্দর ও ইতিবাচক। গ্রামের ছেলেরাও খুব পছন্দ করে তাকে। এখানেই কথা হলো জাহাঙ্গীর আলম রোকনের সঙ্গে। রোকন গ্রামের বাজারে ব্যবসা করে। গ্রামের মসজিদ কমিটির সম্পাদক সে। বেশ ঠান্ডা মাথার মানুষ। দুটি সন্তান আছে তার। রোকনও গ্রামের ছেলেদের ভালো পরামর্শ দেয়। কথা হলো সোলেমানের সঙ্গে। সোলেমান কৃষিকাজ করে। সেও বেশ সুন্দর মনের মানুষ। সেও চায় গ্রামের সবাই যেন সুখে থাকে। এ আলোচনায় উপস্থিত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমার ভাতিজা ইমন রহমান ও ভাতিজির দিকের নাতি তাফহিমুল ইসলাম মোয়াজ। তারা দুজনেই আমাদের গ্রামের নবীন শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। সবার কথা শুনে মনে মনে খুব শান্তি পেলাম। সবাই যার যার মতো করে নিজের এবং গ্রামের মঙ্গল চায়।

ছবি: সংগৃহীত

পরদিন সকালে হাওরে একটু ঘুরতে বের হলাম। সঙ্গে ছিল ইমন, মোয়াজ ও কবির। আরও ছিলেন আমার ভাই মো. তারা মিয়া। জমিতে ধানের চারা রোপণের সময় তখন। বীজতলা থেকে (আমাদের এলাকায় বলে জালাক্ষেত) অনেকেই ধানের চারা তুলে রাখছিল পরদিন রোপণের জন্য। সেদিন মঙ্গলবার থাকায় কেউ ধানের চারা রোপণ করছিল না। সবার ধারণা, মঙ্গলবার চারা রোপণ করলে অমঙ্গল হয়। তাই সেদিন শুধু জমি প্রস্তুত করে রাখছিল তারা। তবে একটা ক্ষেতে কয়েকজনকে চারা রোপণ করতে দেখলাম। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পরের দিনগুলোয় তাদের অন্যত্র জরুরি কাজ আছে। তাই অমঙ্গলের দিনেই তাদের চারা রোপণ করতে হচ্ছে। হাওরে কথা হলো মিন্টু, ইমন, শুভ, সোলেমান, শাহবাজ, সোহেল মুজিবুর, ছোটন, জহর, সানাউল্লাহ ও বুরুজের সঙ্গে। তারা সবাই ধানের চারা সংগ্রহে ব্যস্ত ছিল। শীতের সকালে হাওরে কাজ করা বেশ কষ্টের বিষয়। কিন্তু তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আগামী দিনের সুখের কথা ভেবে কষ্টটা করে যেতে তাদের খুব অসুবিধা হয় না। এই কষ্ট করেই সংসার চালায় তারা। সন্তানদের মানুষ করার স্বপ্ন দেখে। তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তারা জমিতে শুধু ধানের চারা-ই রোপণ করে না, চারার সঙ্গে স্বপ্নের বীজও বপন করে।

বিলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখা হয় পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোদাব্বির, উসাহাবির, রাফি ও সাঞ্জিউরের সঙ্গে। মাছ ধরছিল তারা। দেখা হয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদাফের সঙ্গে। সে ধানের চারার বোঝা নিয়ে যাচ্ছিল। মেহেদী হাসান কোদাল নিয়ে যাচ্ছিল, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বাধীন মই আর তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী তার বাবার জন্য ভাত নিয়ে যাচ্ছিল।

একটা বিষয় চোখে পড়ার মতো। এখন স্কুলে যায় না এমন শিশুর সংখ্যা কম। তার চেয়েও বড় কথা গ্রামের ছেলেরা প্রায় সবাই কৃষিকাজে তাদের অভিভাবকদের সাহায্য করে।

নদীর ধারে গিয়ে আমাদের গ্রামের ওয়ায়েসকরণীকে তার জমিতে কাজ করতে দেখলাম। তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, সে ২ কাঠা জমিতে লাউ, দেড় কাঠা জমিতে পেঁয়াজ, রসুন ও ধনে এবং ১ কাঠা জমিতে কাঁচামরিচ চাষ করেছে। ফলন ভালো হলে তার অনেক লাভ থাকবে, এমনটাই সে আশা করছে।

ছবি: সংগৃহীত

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসিনকে জমিতে কাজ করতে দেখলাম। সে ৮ কাঠা জমিতে খিরা, ২ কাঠা জমিতে মরিচ, ১ কাঠা জমিতে আলু, দেড় কাঠা জমিতে ধনে, রসুন ও পেঁয়াজ, ২ কাঠা জমিতে শর্ষে এবং আড়াই কাঠা জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষ করেছে। সে আশা করছে, ভালো ফলন হলে এসব জমি থেকে দেড় লাখ টাকার মতো লাভ পাবে।

উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র নাদিমের সঙ্গে দেখা হলো হাওরে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে কৃষিকাজ করে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো। বড় হয়ে সে সরকারি কর্মকর্তা হতে চায়।

বিলপাড়ে এসে দেখা হলো মল্লিক মিয়া ফকিরের সঙ্গে। ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সে আমাদের গ্রামের বিলটি এক সিজনের জন্য লিজ নিয়েছে। এর সঙ্গে তার আরও কিছু টাকা খরচ হবে। সে বলল, লিজের টাকাসহ সর্বমোট তার খরচ হবে চার লাখ টাকা। এরপরও বিলের মাছ ভালোভাবে বিক্রি করতে পারলে লাভের মুখ দেখতে পারবে বলেই তার বিশ্বাস।

হাওরে আমি যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের সবার বক্তব্য থেকে বুঝলাম যে কষ্ট করতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে তারা চায় গ্রামে যেন শান্তি থাকে। তাদের ছেলেমেয়েরা যাতে মানুষ হয়।

বর্তমানে আমাদের এই ছোট গ্রামের দুজন (ইমন ও মোয়াজ) পড়াশোনা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তন্বী রহমান (আমার ভাতিজি) পড়ছে চীনের বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের দেখে গ্রামের ছোটরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখবে, এটাই তো স্বাভাবিক। শুধু স্বপ্ন দেখা কেন, আমার তো মনে হয়, আজ যারা স্কুল–কলেজে পড়ছে, আগামী দিনে ওদের মধ্য থেকে কেউ না কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেই।

ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশের মতো আমাদের এলাকায়ও মাদকের ভয়াবহ ছোবল আছে। তবে একটি বিষয় আমি লক্ষ করলাম, আমাদের গ্রামের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে বেশ সচেতন। তাদের মধ্যে মাদক থেকে দূরে থাকার একটা চিন্তা আছে, যা দেখে আমি খুব আশান্বিত হয়েছি। আমার মনে হয়েছে, ওরা এগিয়ে যেতে পারবে।

আমি শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে। সেখানকার অভিভাবকেরা অনেক সচেতন। এরপর দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছি নেত্রকোনা শহরের আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখানকার অভিভাবকেরাও সচেতন। এ দুটি স্কুলের অভিভাবকদের আর্থিক সামর্থ্যও ভালো। ৯ মাস কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও চার বছর মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছি। এ দুটি স্কুলও উপজেলা সদরে থাকায় অভিভাবকেরা সচেতন এবং তাঁরা তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য খরচ করতে পিছপা হন না। সে তুলনায় আমাদের বাউশা নেত্রকোনার মদন উপজেলার নিতান্তই প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটা খুব সাধারণ গ্রাম। এখানকার মানুষের সচেতনতার যেমন অভাব আছে, তেমনি অভাব আছে আর্থিক সামর্থ্যের। খরচ জোগাতে না পেরে অনেকেই তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এমন একটা গ্রাম থেকে উঠে আসা যে কতটা কষ্টের, তা আমার ভালো করেই জানা আছে। এরপরও শত বাধাবিপত্তি পেরিয়ে কেউ কেউ উঠে আসছে। কিন্তু তাদের অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে উঠে আসতে হচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামের শিশু–কিশোর, যুবকদের সঙ্গে কথা বলে আশার নতুন আলো দেখতে পেয়েছি। প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অনেকে শিক্ষার্থীই সেখানে ছিল। বিশেষ করে শিশুদের কচি মুখগুলোর কথা ভুলতে পারছি না। কী আশা নিয়ে তারা আমার কথাগুলো শুনেছে! কত স্বপ্ন ওদের বুকে আছে কে জানে! সত্যি কথা বলতে কী আমাদের এলাকাটা খুব ঝামেলাপূর্ণ। ঝগড়াবিবাদ এখানে খুব সাধারণ বিষয়।

যেসব শিশু–কিশোরের সঙ্গে আমি কথা বলেছি তাদের সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য তো পরিবেশ দরকার। আমরা তো ওদের সে রকম একটি পরিবেশ দিতে পারছি না। সামাজিক সাপোর্টটা ওরা পাচ্ছে না বললেই চলে। একেবারেই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রচেষ্টায় ওরা উঠে আসার চেষ্টা করছে। আহারে! আমরা সামাজিকভাবে যদি ওদের জন্য কিছু করতে পারতাম তবে ওদের কত যে উপকার হতো তা বলা বাহুল্য।

আমাদের গ্রামের শিশু, কিশোর ও যুবকেরা বিভিন্ন সময় খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে আয়োজনের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে। আমার ধারণা, ওদের এই মননশীলতাকে পরিচর্যা করতে পারলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের পুরো গ্রামের পরিবেশটাই বদলে যাবে। আমি সে রাতে আলোচনায় ওদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছি। আমার কথাগুলো সবাই খুব মন দিয়ে শুনেছে। আমি লক্ষ করেছি, ওদের দৃষ্টিভঙ্গি খুব সুন্দর ও ইতিবাচক। সবাই নিজে যেমন আত্মনির্ভরশীল হতে চায়, তেমনি গ্রামটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে চায়। আমারও এমনটাই চাওয়া। আমরা বড়ড়া যা পারিনি ওদের দিয়ে যদি তা হয় ভালোই তো হবে। আমি চাই আমাদের সব অপূর্ণতা ওরা ঘুচিয়ে দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করে আমাদের গ্রামটাকে, আমাদের এলাকাটাকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে গড়ে তুলুক। মহান আল্লাহ তায়ালা ওদের সবাইকে সাহায্য করুন। আমিন।

*লেখক: মো. মোতাহার হোসেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক, মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা

*নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস [email protected]