ওয়েবিনারে বক্তারা: জলবায়ু পরিবর্তন ও তথ্যের অসঙ্গতি পানির সংকটকে তীব্রতর করছে
বিশ্বব্যাপী পানির সংকট দেখা দিচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনে যা তীব্রতর হচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি প্রাপ্তির ওপর ব্যাপক চাপের সৃষ্টি হচ্ছে। সংকটকে আরও জটিলতায় নিয়ে যাচ্ছে তথ্যের ঘাটতি, নজরদারির অভাব এবং গবেষণা ও জনসচেতনতায় বিনিয়োগের ঘাটতি।
বিশ্ব পানি দিবস ২০২৪ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পানিবিশেষজ্ঞ স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটি সম্মিলিত দায়িত্ব গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আজ ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস। এবার এ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শান্তির জন্য পানি’।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক আতিক রহমান ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান। আলোচক হিসেবে অংশ নেন বিসিএসের ফেলো দ্বিজেন মল্লিক, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মহাব্যবস্থাপক এ কে এম নুরুজ্জামান, বি-স্ক্যানের নির্বাহী পরিচালক সালমা মাহবুব, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খান, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক দিবালোক সিংহ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়রের অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ নিরাপদ পানির সংকটে রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক পানির সংকটে ভুগছে এবং ৮০ ভাগ বর্জ্যপানি অপরিশোধিত অবস্থায় পানিতে মিশে পানির মানকে আরও বিপন্ন করছে।
প্রবন্ধে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ হওয়া সত্ত্বেও এখানে পানির সংকট রয়েছে। ভূগর্ভে আর্সেনিক, উপকূলের পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি, খরা, মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, শিল্পকারখানার দূষিত পানি এই সংকটকে তীব্রতর করছে। আন্তর্জাতিক নদীগুলো বিভিন্ন দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি ভাগাভাগির বিষয়ে চুক্তি রয়েছে মাত্র গুটিকয় দেশের মধ্যে। যার ফলে পানি নিয়ে প্রায়ই দ্বন্দ্ব দেখা দেয় প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে, যা শান্তির অন্তরায়।
আলোচকেরা বলেন, শান্তির জন্য পানি নিশ্চিত করতে হলে স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে পানি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এ জন্য পানিসংক্রান্ত তথ্য, জ্ঞান, দক্ষতা ও অবকাঠামোগত সহযোগিতা দরকার। পাশাপাশি দরকার গবেষণা, শিক্ষা ও জনসচেতনতায় গুরুত্ব প্রদান ও পর্যাপ্ত বিনিয়োগ।