সিলেটে বন্যার ভয়াবহতা এই প্রজন্ম নতুন দেখল

সিলেটে সবশেষ বড় বন্যা ২০০৪ সালে হয়েছিল। সেই বন্যার ভয়াবহ চিত্র আজও অনেককে তাড়া করে বেড়ায়। ২০০৪ সালের পর সিলেট জেলায় আরও কয়েকবার আকস্মিক বন্যা হয়েছে, তবে সেগুলোর প্রভাব নদীর তীরবর্তী স্থান ছাড়া অন্য কোথাও পড়েনি। সে বন্যাগুলোর স্থায়িত্ব ছিল মাত্র দুই বা এক দিন।

২০০৪ সালের বন্যার ভয়াবহতা ছিল তীব্র। ২০০৪ সালের বন্যায় সিলেটের প্রায় সম্পূর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ব্যাপক। তবে শেষ ১৮ বছরের মধ্যে সিলেটে সবচেয়ে বড় বন্যা হয়েছে এবার। ঠিক ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালে এমন বন্যা হয়েছিল। সিলেটে এবারের বন্যা পরিস্থিতি মনে করিয়ে দিল সেই স্মৃতি। গত ১৮ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় বন্যা হয়েছে। তাই এ বছরের বন্যার দুর্ভোগ মনে রাখবে সিলেটের মানুষ।

২০০৪ সালের পর যাদের জন্ম, তারা কেউই সেই বন্যার ভয়াবহতা দেখেনি। তারা শুধু গল্পই শুনেছে বড়দের কাছ থেকে। অথচ আজ তারা এমনই এক বাস্তবতার সম্মুখীন। বন্যা কী আর তার ভয়াবহতা কী, সবকিছুর নতুন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তারা। অনেক শিশু ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিলেটে বন্যার ভয়াবহতায় বিপর্যস্ত শিশুরা।

আলী আহমদ নামের ১০ বছর বয়সী পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু বলে, ‘আমার স্কুলই এখন আমার বাসস্থান। এখানে এত দিন বই আর ব্যাগ নিয়ে আসতে হতো কিন্তু এখন এটাই আমার বাসস্থান। আমার সব প্রতিবেশীর বাড়িতে পানি তাই কোনো উপায় না পেয়ে স্কুলে ঠাঁই নিয়েছি।’

জয় দায় নামের আরেক আট বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির এক শিশু বলে, ‘আমরা মাসীর বাড়িতে ছিলাম। বাড়িতে ফিরে দেখি ঘরে পানি ওঠেছে। তাই বাবার সঙ্গে পরিবার নিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। আমরা কাল এখান থেকে চলে যাব। আমাদের কষ্ট হচ্ছে এখানে অবস্থান করতে।’

জুমা আক্তার নামের ১২ বছর বয়সী এক শিশু বলে, ‘সে ক্লাস ফাইভে পড়ে। এখানের তৈরি খাবার তার ভালো লাগে না বলে জানায় সে। সে বলে আমি এসব খেতে পছন্দ করি না। কিন্তু কী আর করার, আব্বু বলছে এখান থেকে চলে যাওয়ার পর পছন্দ মতো খাওয়াবে। তাই এখান থেকে চলে যাওয়ার অপেক্ষা করছি। আল্লাহ যেন সবকিছু ভালো করে দেন।’