পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন
২৫ জুন চালু হয়েছে আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। চালুর পরপরই একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোর ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সেতু বিভাগের বরাত দিয়ে তথ্য অধিদপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
এ সিদ্ধান্তটা কি যৌক্তিক, না অযৌক্তিক। কাল যদি বাস বা অন্য কোনো গাড়ি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে, তবে কি সেগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে? নিশ্চয়ই সেটা করা হবে না, বা করা ঠিক হবে না। কোনো ঘটনা ঘটলে সেটা বন্ধ করে দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করা যায় না। কিন্তু কোনো যেন মাথাব্যথা হলে আমাদের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ মাথাটাই কেটে ফেলে দিতে চান। প্রকৃতপক্ষে মাথা না কেটে সহজ, সুন্দর ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাইক দুর্ঘটনার ঘটনায় পুলিশ বলছে, উচ্চগতির কারণে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। কাজেই কেউ যেন সেতুতে উচ্চগতিতে মোটরসাইকেল কিংবা অন্য কোনো যানবাহন চালাতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া সেতুতে ছবি তোলা, টিকটক করা, যানবাহন থেকে নেমে হাঁটাচলা করাসহ এ জাতীয় বিষয়গুলো বন্ধ করতে হবে।
এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনা নতুন কোনো বিষয় নয়। প্রতিবছরই হাজারো সড়ক দুর্ঘটনার সাক্ষী হচ্ছি আমরা। তার মধ্যে বাইক দুর্ঘটনার সংখ্যাই বেশি। ৯ জানুয়ারি ২০২২, গণমাধ্যমে প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন মতে, ২০২১ সালে দেশব্যাপী সংঘটিত ৫ হাজার ৩৭১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬ হাজার ২৮৪ এবং আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৮ জন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যায় ২ হাজার ২১৪ জন। কিন্তু তখন তো কোনো যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। মূলত বন্ধ করে দেওয়া কোনো যৌক্তিক বা কাজের কথা নয়। কারণ, অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
সেতু চালু হওয়ার পরপরই এমন একটি সিদ্ধান্ত সত্যি মেনে নেওয়ার মতো নয়। কাজেই এ রকম একটি সিদ্ধান্ত অতি দ্রুত প্রত্যাহার করার অনুরোধ করছি।
লেখক: মো. মিলন হোসেন, শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ