ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই

ইউপি নির্বাচনপ্রতীকী ছবি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম চর্চার কেন্দ্র। এখানে থাকবে নানান রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থীনা, যারা ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতির চর্চা করবে। যাদের নেতৃত্বের গুণাবলির মাধ্যমেই একেকজন হয়ে উঠবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রনেতা থেকে জাতীয় নেতা।

বর্তমানে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি করার একমাত্র অধিকার আছে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের। এ ছাড়া কোনো ছাত্রসংগঠনই ক্যাম্পাসগুলোয় বুক ফুলিয়ে হাঁটতে পারে না। চর্চা করতে পারে না গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতির। যার একমাত্র কারণ, যখন যারা ক্ষমতায় থাকে, তখন সবকিছু তাদের দখলে থাকে।

সবাই যে একটা রাজনৈতিক দলের অনুরাগী হবে, এটা মোটেও না। কেননা, যার যার ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে। আছে নিজস্ব চিন্তাচেতনা। আর এই নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করার জন্যই প্রয়োজন আলাদা আলাদা রাজনৈতিক সংগঠন।

দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবেই চলে আসছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একদলীয় রাজনীতিচর্চা। দুঃখের বিষয় হলো দলীয় রাজনীতি ছাড়াও যে রাজনীতি করার অধিকার আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভুলেই গেছে। কেননা, দশকের পর দশক ধরে এ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নেই।

এ ছাত্র সংসদ না থাকায় যেমন নষ্ট হচ্ছে ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক চিত্র, তেমনি অধিকার খর্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসগুলো থেকে তৈরি হচ্ছে না মানসম্মত ছাত্রনেতা। দলনির্ভর রাজনৈতিক সংগঠন অধিকাংশ সময়ই দলের হয়ে কাজ করে।

শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া অধিকাংশ সময়ই তারা মূল্যায়ন করে না। এ ছাড়া তাদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপিং-নির্ভর রাজনীতি হওয়ার দরুন শিক্ষার্থীদের যেকোনো ন্যায্য দাবি আদায়েও বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক সময়ই একপক্ষ সমর্থন করে, বাকিরা করে না। এভাবেই একটা সময় শিক্ষার্থীরা অভিভাবকশূন্য হয়ে যায়। তাদের দাবি ও অধিকার আদায়ের জন্য কথা বলার কেউ থাকে না।

সুতরাং, বর্তমান সময়ে ক্যাম্পাসগুলোয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আগামীর প্রজন্ম, তথা আগামীর নেতৃত্ব তৈরিতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক অবস্থা তৈরিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রতিটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।

*লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ