জীবন এক পদ্মপাতার শিশিরবিন্দু...
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের এক রূঢ় কিন্তু বাস্তব প্রতিচ্ছবি। রাস্তার ধুলাবালি আর কোলাহলের মধ্যে মিশে আছে বেঁচে থাকার এক অদম্য লড়াই।
আমাদের চারপাশের ব্যস্ত শহর বা মফস্সলের রাস্তাগুলোয় তাকালে আমরা এক অন্য রকম জীবনের দেখা পাই। এটি একটি সংগ্রামেরই জীবন্ত দলিল বললে ভুল হবে না। এখানে চাকা ঘোরে শুধু রাস্তার ওপর নয়, বরং জীবনের প্রয়োজনে।
জীবনধারণের জন্য যে মানুষটি তার সাইকেল-ভ্যানে বিশাল এক কাঠের বোঝা নিয়ে চলেছেন। সেই কাঠের স্তূপ তার সাধ্যের চেয়েও অনেক বড় মনে হচ্ছে। প্রতিটি প্যাডেলে মিশে আছে ঘাম আর পরিশ্রম। রোদে পোড়া মুখ আর শক্ত হাতে ধরা হ্যান্ডেল—এ যেন কেবল একটি যান নয় বরং তার পুরো পরিবারের স্বপ্ন আর অন্ন সংস্থানের ভার।
সহমর্মিতার হাতের শক্তিও কম নয়, যা অমানুষিক পরিশ্রমের মধ্যেও সুন্দর দিকটি হলো পাশে থাকা মানুষটির বাড়িয়ে দেওয়া হাত। যখন জীবনের বোঝা খুব ভারী হয়ে যায়, তখন কোনো এক অচেনা হাত পেছন থেকে একটু ধাক্কা দিয়ে পথ চলতে সাহায্য করে। এই সহমর্মিতাই মানুষের টিকে থাকার মূল শক্তি একটি বড় ধরনের প্রেরণা।
গতির বৈচিত্র্য অসীম ভাবনা, যা একপাশে যাত্রীবাহী রিকশা, অন্যপাশে মালবাহী ভ্যান—সব মিলিয়ে রাস্তার এই যানজট আসলে জীবনেরই এক অবিরাম প্রবাহ। কেউ গন্তব্যে পৌঁছানোর তাগিদে ব্যস্ত, আর কেউ জীবিকা নির্বাহের যুদ্ধে মগ্ন।
পরিশেষে: জীবন কারও জন্য বিলাসবহুল গাড়ির এসি রুম, আবার কারও জন্য তপ্ত রোদে ভারী বোঝা টানা। কিন্তু এই কঠিন লড়াইয়ের মধ্যেই মানুষ খুঁজে নেয় এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা, অসীম প্রার্থনাও। দিনশেষে এই মেহনতি মানুষের ঘামেই সচল থাকে সভ্যতার চাকা...।
লেখক: মোহাম্মদ মহসীন
নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]