ভোরের শ্রমবাজারে দাঁড়িয়ে টিকে থাকার গল্প

ছবি: লেখকের পাঠানো

প্রতিদিন ভোরে বসে এক অদ্ভুত হাট। শ্রম বিক্রির হাট। এখানে পণ্য নয়, দরিদ্র পুরুষ-নারী নিজেরাই নিজেদের শ্রম বিক্রি করেন।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার কর্ণফুলী বাজারে পাওয়া যায় ধানকাটা, নির্মাণকাজ, রংয়ের কাজ, কাঠমিস্ত্রি, কৃষিক্ষেতের দিনমজুর। যাঁর কাজে যত দক্ষতা, শরীরের যত শক্তি, সেই অনুযায়ী ঠিক হয় মজুরি। কেউ হাতুড়ি-করাত হাতে দাঁড়ান, কেউ কাস্তে, আবার কেউ শুধু শরীরের জোর নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন খরিদ্দারের।

ভোরের ঘনকুয়াশার মধ্যে শ্রমিক আর নিয়োগদাতাদের দরদাম এখনো টিকে আছে পুরোনো দিনের মতোই। আধুনিক সমাজেও। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে জীবন–জীবিকার একমাত্র ভরসা হয়ে আছে এই ভোরের হাট।

শুধু পুরুষ নন, কাজের খোঁজে প্রতিদিন ভোরে হাজির হন নারীরাও।

ধান কাটার মৌসুমে শ্রমিকের সংকট দেখা দিলে কৃষক, ঠিকাদার ও মালিকপক্ষ ছুটে আসেন এখানেই।

রুহিয়া অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র ঠান্ডায় কাঁপছে চারপাশ। তবু থেমে নেই শ্রমবাজার।

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

দাঁড়িয়ে থাকা শ্রমিক মাসুদ বলেন, আমরা সমাজে সম্মান পাই না। শ্রমিক বলেই নিচে থাকতে হয়। গরমে মরার মতো অবস্থা, শীতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু কাজ না করলে পেট চলে না।

ছবি: লেখকের পাঠানো

প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বসে এই শ্রম বিক্রির হাট। কুয়াশার ভেতর সারি সারি শ্রমিকের অপেক্ষা। পেশিশক্তি, শ্রম আর টিকে থাকার লড়াইয়ে ভরসা শুধু একটি দিনের কাজের ওপর।

এখানেই জীবিকার সংগ্রাম, টিকে থাকার গল্প আর প্রতিদিনের আশা–ভরসা মিশে যায় ভোরের আলোয়।