১৭তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আমরা উত্তীর্ণ হয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে দেশের সেবা ও জাতি গঠনে সাহায্য করা। কিন্তু এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ গত ৩১ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা আছে, এ বছরের ১ জানুয়ারির মধ্যে বয়স হতে হবে ৩৫; এর বেশি হলে কেউ আবেদন করতে পারবেন না। আমরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও আমাদের বয়স ৩৫ পার হয়েছে। মানববন্ধন, এনটিআরসিএ ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া ইত্যাদি কাজ করার পরও আমাদের পক্ষে কেউ কথা বলছে না।
অতিশয় দুঃখের ব্যাপার হলো, ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বছরই পরীক্ষা শেষ করে ফলাফল দেওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। পরে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করতে পারেনি। তাই ২০২০ সালের নির্ধারিত পরীক্ষা ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হয় ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর। ফলাফলে ২৩ হাজার ৯৮৫ জন চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখন শূন্য পদ প্রায় ১ লাখ। কাজেই যাঁরা ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের সবাইকে নিয়োগ দিলেও ৭৫ হাজারের বেশি পদ ফাঁকা থাকবে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত সব উত্তীর্ণ প্রার্থী নিবন্ধন সনদ হাতে পাননি। ইতিমধ্যে এই পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে সনদ পাওয়া পর্যন্ত চার বছরের অধিক সময় লেগে গেছে। এমতাবস্থায় বিজ্ঞপ্তির সময় যাঁদের বয়স ৩১-৩২-৩৩-৩৪ ছিল, তাঁদের সবারই বয়স ৩৫ বছরের অধিক হয়েছে। উল্লেখ্য, করোনা মহামারির জন্য সব চাকরির আবেদনের জন্য বয়স ৩৯ মাস ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তাহলে আমরা কেন বয়সের ছাড় পাব না।
আমাদের দাবি হলো, আমরা যখন ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন আমাদের বয়স ৩৫–এর নিচে ছিল। ২০২০-২৪ সালের মধ্যে তিনটি গণবিজ্ঞপ্তি হয়েছে কিন্তু আমরা সে তিনটি গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারিনি। এখন চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও আমরা যদি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন না করতে পারি, তাহলে আমাদের এত বছরের অপেক্ষার ও চাকরিবিহীন কষ্টের জীবন থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব না এবং আমরা পরিবার ও সমাজের কাছে বোঝা হয়ে যাব। এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজার ৭৩৬টি পদে শিক্ষক নিয়োগের পঞ্চম বিজ্ঞপ্তি গত ৩১ মার্চ প্রকাশ করেছে এনটিআরসিএ। এনটিআরসিএ বলেছে, নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। স্কুল অ্যান্ড কলেজে পদসংখ্যা ৪৩ হাজার ২৮৬, মাদ্রাসা, ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫৩ হাজার ৪৫০টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। ৯৬ হাজার ৭৩৬টি পদে শূন্য পদে পদভিত্তিক তালিকা এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইটে ১৭ এপ্রিল দুপুর ১২টায় প্রকাশ করা হবে। ওই দিন থেকেই আগ্রহী নিবন্ধনধারী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী প্রার্থীর বয়স ১ জানুয়ারি ২০২৪ সালের ৩৫ বছর বা তার কম হতে হবে।
লেখক: ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবার পক্ষে মো. মাসুদ পারভেজ, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী