মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে ক্যাসিয়া জাভানিকা

দেশে দুর্লভ ফুলের মধ্যে একটি হলো ক্যাসিয়া জাভানিকা বা লাল সোনাইল। সেই দুর্লভ ফুলের দেখা মেলে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে আছে গোলাপি ও গাঢ় লাল রঙের এই ফুল, যা সবার নজর কাড়ে।

গ্রীষ্মের খরতাপের মধ্যে সবুজ গাছগাছালি আর রংবেরঙের ফুলে সেজেছে রাজশাহী শহর। কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালুসহ নানা ধরনের ফুলে ভরে গেছে চারপাশ। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো লাল সোনাইল, যার বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া জাভানিকা (Cassia Javanica)।

এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। সারা পৃথিবীতে উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের বাগানে উদ্ভিদ হিসেবে এর জন্ম হয়। বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে এই ফুল ফোটে। তবে বিভিন্ন দেশে জলবায়ুভেদে এর ফোটার সময় ভিন্ন হয়ে থাকে। ক্যাসিয়া জাভানিকা দ্রুত বর্ধনশীল। একে লাল সোনাইল বলা হলেও ফুলটির মধ্যে গোলাপি রঙের আভাই বেশি। নান্দনিক সৌন্দর্যের ফুলগুলো ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা।

পথচারীরা একমুহূর্তের জন্য হলেও থমকে দাঁড়ান আর উপভোগ করেন এর অপরূপ সৌন্দর্য।

সৌন্দর্যের পাশাপাশি নানা ভেষজ উপকারিতা রয়েছে ক্যাসিয়া জাভানিকার। কোষ্ঠকাঠিন্য, কোলিক, ক্লোরোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো প্রাচীনকাল থেকেই। উদ্ভিদটির পাতা হারপিস সিমপ্লেক্সের (হারপিস সিমপ্লেক্স হলো একধরনের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ভাইরাল সংক্রমণ) বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে এবং এর ছাল বা বাকল আয়ুর্বেদিক ও অন্যান্য ঐতিহ্যগত ওষুধের অ্যান্টিডায়াবেটিক ফরমুলেশনের অন্যতম উপাদান। পাশাপাশি এর ছাল ব্যবহার করা হয় ট্যানারি শিল্পে।

ছোটবেলা থেকে শুনে আসা এক প্রবাদ ‘আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী’—এ যেন তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আপন সৌন্দর্যে একদিকে যেমন সবার মন জয় করছে, অন্যদিকে নানা গুণে ভরপুর এই দুর্লভ উদ্ভিদ।

*লেখক: ফারজানা ইসলাম, শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী

**নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]