বাংলাদেশের মাইক্রোবায়োলজি সমাচার!
সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে প্রতিবছর শত শত মাইক্রোবায়োলজিস্ট পাশ করে বের হচ্ছে। কেউ বা সরকারি চাকরি, কেউ বা বেসরকারি চাকরি আর বেশিরভাগ তো দেশের বাইরেই পা দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় গন্ডি পেরিয়ে একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে যায় কি করবে আর কি করা উচিত এই ভেবে ভেবে। কারণ বাংলাদেশের চাকরি সম্পর্কিত কোন কাউন্সেলিং বডি বা সংগঠন এখন পর্যন্ত তেমনভাবে আলোর মুখ মাইক্রোবায়োলজিস্টদের কেউ দেখাতে পারেনি। যা হয় সেটা শুধুমাত্রই সিনিয়র বড় ভাই আপুদের ধরে কিংবা নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। কারণ একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়েই এতো দূর আসছে। সবাই যোগ্য, শুধু যোগ্য গাইডলাইনের অভাবে পথ হারিয়ে ফেলছে। ফার্মেসি কাউন্সিল অভূতপূর্ব কাজ করে যাচ্ছে। নিবন্ধনসহ একটি সম্পূরক গাইডলাইন হিসেবে কাজ করছে সব স্তরের ফার্মাসিস্টদের জন্য। মাথার উপর একটি ছাতা হিসেবে সবসময়েই কাজ করে যাচ্ছে। সময়ের দাবি যেমন হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট, মডেল ফার্মাসি তে বাধ্যতামূলক ফার্মাসিস্ট নিয়োগ ইত্যাদি দেশের জন্য অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে এবং তা সবই ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে, এটি খুবই আশাবাঞ্জক।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে এই বিষয়গুলো খুবই সুন্দরভাবে আসছে। মাইক্রোবায়োলজিস্ট দের ভূমিকা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, তাছাড়া কিভাবে এদের গুরুত্ব প্রকাশ পাবে। একমাত্র DUMAA নামক একটা মাইক্রোবায়োলজি সংগঠনের নাম দেখা গেছে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের লিস্টে। হয়তো অন্যন্যা সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। সব কিছু যে প্রকাশিত হতেই হবে তেমন কোন কথা নয়। ধীরে ধীরেই অগ্রগামী হবে।সম্প্রতি কোরিয়া থেকে একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট জানায়,তার একটি মেম্বারশিপ সার্টিফিকেট লাগবে ঐখানে জব এর জন্য। কার সাথে যোগাযোগ করবে আর কিভাবে করবে? কি দিবে এই উত্তর, কারও কি সঠিকভাবে জানা আছে। আজ নিবন্ধন নং থাকলেও সেটা দিয়েই সে জবের কাজ করতে পারতো। কি দিবে এই নিবন্ধন নং! আছে কি কোন মাইক্রোবায়োলজি কাউন্সিল! কোন সংগঠন থেকে দিলেই কি সেটা সারাবিশ্বে সমাদৃত হবে? উত্তর জানা নেই, চেষ্টা করে যাচ্ছি জানার। আবারও করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়ে গেছে। টিকা বা করোনা দেখে ভয় পাওয়া বা না পাওয়ায় কিছু আসে যায় না, আগের মতোই মাইক্রোবায়োলজিস্টদের এই বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা আর কাজের সুযোগ দিতে হবে। আমার যতটুকু জানা আছে, সরকারী- বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এলামনাই সহ বিভিন্ন জব রিলেটেড ফোরাম রয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মাইক্রোবায়োলজিস্ট ( BSM), ISBM, DUMAA, DUMDAA, GMS ইত্যাদি সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে যেমন ছাত্র বৃত্তি, ইন্টারেস্ট ফ্রি লোন,স্পনসরশীপ, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং আর চাকরির সুযোগদানে। সবার একটাই উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থী আর এলামনাইদের মেল বন্ধন তৈরী করা, পাশে দাঁড়ানো আর একটি গাইড হিসেবে কাজ করে। খুব সাবলীলভাবেই সকল বিশ্ববিদ্যালয় আর সংগঠনগুলো নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ২২ জুন, রোজ রবিবার ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন (DUMAA) শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২৫ সালে ১২ লক্ষ টাকার স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করলো যা কিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন হল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক সহ সারা বিশ্বের গণ্য মান্য ব্যক্তি, এলামনাই আর শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে। প্রতি বছর এমন উদ্যোগ চলতেই থাকবে। আগ্রহী শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন আর নির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমেই যাচাই বাছাই করে এই স্কলারশিপ হস্তান্তর হবে।সারা বিশ্বের এলামনাই আর দাতাদের মাধ্যমে এই অর্থ সংগৃহীত হয়েছে । এ এক অভূতপূর্ব উদ্যোগ! শুভ হোক সবার উদ্যোগ।সর্বশেষ মাইক্রোবায়োলজি কাউন্সিল এর দিকে এগিয়ে যাক সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।*লেখক: মনোজিৎ কুমার রায়, মাইক্রোবায়োলজিস্ট