মাতৃত্বের সুরক্ষায় টিম গ্রুপের ‘মাদার কেয়ার’ কর্মসূচি
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। লাখো নারী শ্রমিক দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছেন নিরলসভাবে। মাতৃত্বকালীন এই পরিশ্রমী নারীদের যথাযথ যত্ন, সম্মান ও সহানুভূতি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়। এ দায়বদ্ধতা থেকেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে TEAM Group—‘Mother Care’ নামের একটি মানবিক কর্মসূচির মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন নারী কর্মীদের জন্য সম্মানজনক, স্বাস্থ্যসম্মত ও সহানুভূতিশীল কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণে একটি ভূমিকা রাখছে তারা।
প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন কিছু মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হয়। যেমন মাতৃত্বকালীন ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, চাকরিচ্যুতি থেকে সুরক্ষা, হালকা কাজের সুযোগ, চিকিৎসা ও কল্যাণ সুবিধা ইত্যাদি। টিম গ্রুপ এসব মৌলিক সুবিধা নিশ্চিতকরণের পরেও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে মাদার কেয়ার প্রোগ্রামের সূচনা করে, যা মূলত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ হীল রাকিবের একটি উদ্যোগ। তিনি বলেন, ‘একজন মা শুধু কর্মী নন, তিনি একটি পরিবারের ভিত্তি, একটি জাতির ভবিষ্যৎ। তাঁদের যত্ন নেওয়া আমাদের সামাজিক দায়িত্ব এবং মানবিক নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।’
টিম গ্রুপ প্রায় ২৩ হাজার কর্মীর একটি পরিবার, যার প্রায় ৬০ শতাংশ মহিলা। মাদার কেয়ার প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতিবছর গড়ে টিম গ্রুপের প্রায় ৪০০ গর্ভবতী কর্মীকে মাতৃত্বকালীন এই বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়। এ কর্মসূচিতে একজন নারী শ্রমিক/কর্মকর্তা যে সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন, সেগুলো হলো—
• গোলাপি রঙের বিশেষ গাউন সরবরাহ, যা গর্ভবতী কর্মীদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। ফলে অন্য সহকর্মী ও সুপারভাইজাররা আরও যত্নবান হতে পারেন।
• অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের বিশ্রাম সময়, যাতে কর্মীরা স্বস্তির সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
• পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা: প্রতিদিন বেলা ১১টায় সব গর্ভবতী নারীকে একটি ডিম ও এক গ্লাস দুধ খেতে দেওয়া হয়।
• অভিজ্ঞ ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষিত নার্সদের মাধ্যমে লাইন পর্যায়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য ফলোআপ ও মনিটর করা হয়।
• গর্ভাবস্থায় নারীর জন্য অত্যাবশ্যক আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড সরবরাহ করা হয়।
২০১৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৬৯ জন গর্ভবতী কর্মী সেবা পেয়েছেন। এ উদ্যোগের সুবিধাভোগী সাজেদা বলেন, ‘আমার প্রেগন্যান্সির পঞ্চম মাস থেকে বিকেল পাঁচটায় ছুটি পাচ্ছি। প্রতিদিন কাজের ফাঁকে বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্রাম করার সময় পাই। আমি গর্ভবতী, তাই আমাকে কোনো অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া হয় না। ফলে আমি আরামে কাজ করতে পারি। এ ছাড়া শরীর খারাপ অনুভব করলে মেডিকেলের ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে পারি।’ বিজ্ঞপ্তি