তরুণিকের শেষ যাত্রায় প্রাণে প্রাণে স্পন্দন

বুকভরা সাহস আর হাজারো ভয়কে পরোয়া না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কাউকে বন্ধু বানানো খুব একটা সহজ বিষয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কিংবা অনুষদে যে বন্ধুরা কাছের হন, তাঁদের সঙ্গেই মায়ার বন্ধনে আজীবনের সম্পর্কের বন্ধন তৈরি হয়ে যায়। একজন শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি সময় কাটান নিজ অনুষদের ক্লাসে, যেখানে তৈরি হয় এক অনন্য পরিবার। পরিবারের মতোই তাঁদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক যেমন থাকে, তেমনি কারও কারও সঙ্গে দূরত্বের বিষয়টা। তবে শেষ সেমিস্টারে দূরের মানুষটার জন্যও প্রাণে টান ধরে। এভাবে হয়তো ক্লাসে বন্ধুদের একসঙ্গে বসে আর শিক্ষককে ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেওয়া হবে না কিংবা প্র্যাকটিক্যালের ক্লাস বাদ পড়লে সবার সঙ্গে বসে চায়ের চুমুকে চুমুকে আড্ডা, গান বা ফাজলামো করা হবে না। এটাই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ৫৮তম ব্যাচের (তরুণিক) সি সেকশনের একসঙ্গে শেষ সফর।

শেষ সেমিস্টারে তরুণিকের শেষ যাত্রায় সবার প্রাণে প্রাণে আনন্দের স্পন্দনে কিছুটা বিষাদও ছিল। শেষ এক্সকারশন সফরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাড থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল। আট দিনের সফরে প্রথম গন্তব্য ছিল খাগড়াছড়ির আলুটিলা হয়ে সাজেক ভ্যালি। এরপর কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন ও বান্দরবান যাওয়া হবে ঠিক করা হয়েছে। সফরের সময়ে গাইড টিচার হিসেবে সঙ্গে ছিলেন অধ্যাপক মো জিয়াউল হক, প্রভাষক মো. হোসেন আলী ও প্রভাষক সাদিয়া জাফরিন।

আল শাহরিয়ার নাফিজ জানান, আট দিনের এ লম্বা সময়ে বন্ধুদের যেন নতুন করে আপন করতে শিখিয়ে দিল। অনার্স শিক্ষাবর্ষের এই শেষ স্মৃতি যেন আজীবনের মতো ভাসিয়ে নিয়ে গেল সমুদ্রতটে। সেন্ট মার্ন্টিনের স্বর্গে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেললাম বারবার। পাহাড় জয়ের তীব্র নেশায় আর বুদ্‌বুদ ওঠা সমুদ্রের ঢেউয়ে ঘটল সব দুঃখের অবসান। বিশালতায় হাজারোবার ফিরে আসতে চাই আবারও বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে।

আশিক, অনুপম, তন্নী, মোশতাক, মাসুদ, নওশীন, জয় আর বন্ধু ইফতি। তাঁদের সঙ্গে ক্লাসে ও ক্লাসের বাইরে রয়ে যাওয়া হাজারো মিষ্টি স্মৃতি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

*লেখক: শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।