আমরা কারা-নাগরিক

১৯ থেকে ২১ নভেম্বর, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া’য় ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিংয়ের ১ হাজার ২৫০তম ব্যাচের ট্রেনিং সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রশিক্ষণে ৩০ জন ইয়ুথ প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ওই ট্রেনিংয়ে উপস্থিত ছিলেন তুহিন আফসারী, প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর অ্যান্ড এসপিও, ট্রেনিং অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশ। তিনি তাঁর অসাধারণ অ্যাডভোকেসি ও শিক্ষণের মাধ্যমে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর মনে এক অনন্য শক্তি বিকশিত করেছেন। এই ট্রেনিংয়ে ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ‘দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশ’–এর অ্যাকাউন্টস অফিসার অধীশ দাশ ও ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার যশোর জেলার আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ফিরোজ আহমেদ পলাশ। সঙ্গে আরও ছিলেন ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক মোতালেব বিশ্বাস লিখন, প্রচার সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ ও তামান্না ইসলাম। ট্রেনিংয়ে সার্বিক আয়োজন ও সহযোগিতায় ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন ল’ অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড এনলাইটেন্ড সোসাইটি। সংগঠনটির সভাপতি এস এ এইস ওয়ালিউল্লাহর নেতৃত্বে ট্রেনিংয়ের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাঁদের সদস্যরা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে তুহিন আফসারী, অধীশ দাশ ও ফিরোজ আহমেদ পলাশ ভাইয়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সভাপতি এস এ এইস ওয়ালিউল্লাহ। ট্রেনিংয়ের প্রথম দিন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ট্রেনিংয়ের উদ্বোধন ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইউথ এন্ডিং হাঙ্গার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপদেষ্টা, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজমের শিক্ষক তন্ময় সাহা।

ট্রেনিংয়ের প্রথম দিন ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার ও দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের পরিচিতি, প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রুতি, ছাত্রসমাজের ভূমিকা, আমরা কারা-নাগরিক, কেমন আছি আমরা, সংবিধানে বর্ণিত নাগরিকের অধিকার ও চাহিদাগুলো, বাংলাদেশের ভিত্তিমূল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আমাদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ-তরুণদের ভূমিকা, গণতন্ত্র ও সুশাসন—এসব সেশন সম্পন্ন হয়। প্রথম দিন হলেও এবং অনেকের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হলেও সেশনে পার্টিশিপেন্টদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। প্রত্যেকের মধ্যে নতুন একটি স্বদেশপ্রেম জাগ্রত হয়েছে। তাঁরা যে দেশের নাগরিক, এ দেশ যে তাঁদের, এটা তাঁরা উপলব্ধি করেছেন। তাঁরা নাগরিক ও প্রজার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন।

ট্রেনিংয়ের দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মাদ নাজিমুদ্দিন এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল বারী স্যার। ল’ অ্যাওয়ারনেস কর্তৃক আয়োজিত ‘সংবিধান নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সম্মানিত শিক্ষকেরা। তারা বেশ কিছু সময় আমাদের মধ্যে কাটিয়েছেন এবং এই আয়োজনের গঠনমূলক প্রশংসা করেছেন। সেশনগুলো যথাক্রমে অ্যাডভোকেসি কী? অ্যাডভোকেসির কৌশল ও টুলস, অ্যাকাউন্টিবিলিটি টুলস–তথ্য অধিকার আইন, স্বয়ংক্রিয় নেতৃত্ব, কর্মশালা, দিন যাচাই, বাড়ির কাজ। পার্টিশিপেন্টরা প্রতিটি সেশনেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেছে, গ্রুপ ওয়ার্ক করেছে ও মতামত দিয়েছে।

তৃতীয় দিন ইউনিট গঠন, সোশ্যাল ম্যাপিং, স্যাপ নির্ধারণ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন অংশগ্রহণকারীরা। তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন ফ্যাসিলিটেটরা। ট্রেনিংয়ের সেশন শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের তিন দিনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া, টুকটুক পার্কের চিঠি পাঠ। প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং গ্রুপ ছবি তোলার মাধ্যমে তিন দিনের ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিংয়ের সমাপ্তি হয়।

*লেখক: তামান্না ইসলাম, শিক্ষার্থী, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া