মা শব্দের গভীরতা কতটুকু

প্রতীকী ছবি

মা! এই ডাকটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ডাক, যা কোনো মূল্যের বিনিময়ের পাওয়া যায় না। এই শব্দটা আমাদের জীবনে জীবনের সমান। কবি কাজী নজরুল ইসলামের উক্তিতে:
‘যেখানেতে দেখি যাহা
মায়ের মতো আহা
একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই,
মায়ের মতন এত আদর সোহাগ সে তো
আর কোনোখানে কেহ পাইবে না ভাই।’

মা আমাদের হৃদয়ের সেই কোনাটা, যেখানে আমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে এক স্বস্তির নিশ্বাস নিই। মাকে ছাড়া কোনো পরিবারই পূর্ণতা পায় না। একটি সংসারকে মা যতটা আগলে রাখতে পারে, ততটা সুন্দর করে কেউ আগলে রাখতে পারে না। আজ হাজারো মা পরিবারের দারিদ্র্য ঘুচাতে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছে।

আমার দেখা সেই মায়ের কথা বলতে চাই, যে তার গর্ভজাত সন্তান নিয়ে একটা লোকাল বাসের পেছনে ছুটছিল, শুধু সময়মতো অফিসে পৌঁছাবে বলে। বলতে চাই সেই মায়ের কথা, যে মা সন্তানের খাওয়া, পড়ালেখা, বিশ্রাম যেন ঠিকভাবে হয়, তার জন্য নিজের খাওয়াদাওয়া, বিশ্রামের কথা ভুলে যায়। আরও বলতে চাই সেই মায়ের কথা, যে সমাজের শত বাধা সত্ত্বেও নিজের মেয়েটাকে গড়ে তুলেছে অভিনেত্রী হিসেবে, নৃত্যশিল্পী হিসেবে, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার হিসেবে। মা হচ্ছে জীবনের শ্রেষ্ঠ চিয়ারলিডার, যার কোনো ইউনিফর্ম দরকার নেই।

তাই প্রয়াত শিল্পী ফকির আলমগীরের গানের ভাষায় বলতে চাই—
‘মায়ের এক ধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম,
পাপোশ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না,
এমন দরদি ভবে কেউ হবে না আমার মা গো।’

মা সবার ভালো-মন্দের বিষয়টি সবচেয়ে ভালো বোঝে। মায়ের মতো করে কেউ কখনো ভালোবাসতে পারে না। যত্ন নিতে পারে না। একজন সন্তানের কাছে সবচেয়ে ভরসার স্থল হলো তার মা। মা যেমন করে সন্তানদের আগলে রাখে, ঠিক তেমনিভাবে প্রত্যেক সন্তানের উচিত মাকেও আগলে রাখা। মায়ের সম্মান করা, সেবাযত্ন করা।

  • লেখক: অর্ণব সরকার, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ১৭তম আবর্তন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়