দল বেঁধে পত্রিকা অফিসে
সাংবাদিকতা করার বদৌলতে নিজ নিজ পত্রিকা বা মিডিয়া হাউসে কমবেশি সবারই যাওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু দল বেঁধে একসঙ্গে পত্রিকা অফিসে যাওয়ার সুযোগ কতজনেরই ভাগ্যে থাকে!
সাংবাদিকতায় চার বছর পেরিয়ে এমন সুযোগ আর অভিজ্ঞতা অর্জনের সৌভাগ্য হয়। দল বেঁধে ঘুরে এলাম প্রথম আলো অফিস। ঘুরলাম, দেখলাম, শিখলাম, অভিজ্ঞতার ঝুলিতে যোগ হলো নতুন কিছু। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সাংবাদিক সমিতির বার্ষিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার অংশ হিসেবে এক দিনের পত্রিকা অফিস পরিদর্শন।
পত্রিকা অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল চলে এলাম সমিতির সামনে। সেখান থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল আমাদের যাত্রা। গাড়ি আসতে দেরি করায় ক্যাম্পাসেই সেরে নিলাম সকালের নাশতা। এরপর সাংবাদিক সমিতির অগ্রজ, বন্ধু, অনুজদের সঙ্গে রওনা হলাম ঢাকার পথে।
আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক ঘোরাঘুরি, কেনাকাটাও করে ফেলল কেউ কেউ।
তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে বেলা তিনটা নাগাদ পৌঁছালাম কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো অফিসে। সেখানে রিসিপশনে আমাদের জন্য যে দর্শনার্থী কার্ডের ব্যবস্থা আগেই করা ছিল, সেটি সংগ্রহ করলাম। ওপরে ওঠার সময় লিফটে দেখা হলো জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হকের সঙ্গে। শিশুসুলভ মনের মানুষ তিনি। সেলফি তোলার আবদারও মেটালেন হাসিমুখে।
প্রথম আলোর কনফারেন্স রুমে আমাদের সঙ্গে সময় দিলেন নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, সহকারী বার্তা সম্পাদক পার্থ শংকর সাহা। প্রথম আলো পত্রিকা নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিচারণা করি। এ সময় আমাদের প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মগ উপহার দেওয়া হয়। বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
এরপর পার্থ শংকর সাহা আমাদের পুরো পত্রিকা হাউস ঘুরে দেখান। দেশ, আন্তর্জাতিক, বিনোদন, ক্রীড়া, ভিডিও জোন, গ্রাফিকস, ই-পেপার প্রস্তুত— সবগুলো ডেস্কেই ঘুরলাম। তাঁদের কাজের ধরন, একাগ্রতা সবই ছিল শেখার মতো। আমাদের মতো মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকদের পাঠানো সংবাদ কীভাবে সম্পাদনা করা হয়, কীভাবে পাবলিশ করা হয় সেগুলোও দেখলাম।
একই ভবনের একটি ফ্লোর ছিল এবিসি রেডিওর, যারা প্রথম আলোর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান, সেটিও পরিদর্শন করলাম। অনেক দিন পর রেডিও স্টুডিও দেখে পুরোনো দিনের কথা মনে পড়েছিল, যখন আমিও রেডিওতে কাজ করতাম।
ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে দেখা হলো দেশের খ্যাতনামা ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্রর সঙ্গে। আমি অনেক আগে থেকেই খেলা ও তাঁর রিপোর্টের ভক্ত। তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়াটা তাই অন্য রকম আনন্দ দিয়েছিল।
সর্বোপরি অভিজ্ঞতা অর্জনময় একটি দিন ছিল, যেখানে প্রাপ্তি বলে শেষ করা যাবে না। দল বেঁধে একসঙ্গে পত্রিকা অফিস পরিদর্শন সত্যিই দারুণ একটি উদ্যোগ। হয়তো আগামী বছর অন্য কোনো পত্রিকা অফিসে আবারও যাব দল বেঁধে, জানব অনেক অজানা বিষয়, মজা করতে করতে শিখব—এমনটা প্রত্যাশা সবারই।
*লেখা: মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর, শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।