‘ব্রাজিল’–‘আর্জেন্টিনার’ ফুটবল খেলা যেমন দেখলাম

কোটি কোটি ফুটবল ভক্ত-অনুরাগীদের মাতাতে ও আনন্দে ভাসাতে শুরু হতে যাচ্ছে কাতার বিশ্বকাপ-২০২২–এর জমজমাট আসর। ফুটবল–জ্বরে কাঁপছে সারা দুনিয়া, পিছিয়ে নেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও। ফুটবল দুনিয়ায় কোনটা প্রিয় দল কিংবা কোনটা হবে চ্যাম্পিয়ন—এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। হিসাব মেলাতে দেশের ফুটবলের সমর্থকেরা দিন–রাতকে যেন একাকার করে ফেলছেন।

বিশ্বকাপ ফুটবলে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এখনো অধরা থাকলেও ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-কে ঘিরে উন্মাদনার কমতি নেই একবিন্দুও। প্রিয় দল নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াইও চলে পুরোদমে। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলকে নিয়ে মাতামাতির অন্ত নেই এ দেশে। হবেই না বা কেন! সমর্থক কিংবা ভক্তসংখ্যা বিবেচনায় আনলে লাতিন আমেরিকার এই দুই জায়ান্ট দলের পাল্লাই ভারী।

সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র ঐক্য পরিষদ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের ‘আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিল সমর্থিত’ ব্যতিক্রমী প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছিল। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের মাঠে বিকেল পাঁচটায় এ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলার জন্য ক্যাম্পাসে প্রচারও চলেছে।

চলছে শ্রাবণ মাস। কিন্তু মনে হলো, গ্রীষ্মের এক তপ্ত দুপুর। আমাদের মাঝেমধ্যে প্রকৃতির রুক্ষ আবহাওয়া চোখরাঙানি দিলেও মাঠ ছেড়ে পালাননি ফুটবলপ্রেমী দর্শকেরা। হঠাৎ দখিনা হাওয়ায় মন জুড়িয়েছে। টান টান উত্তেজনায় ভরপুর ছিল খেলার মাঠ।

যা হোক, একাধিকবার সুযোগ পেয়েও ৩: ৩ গোলে অমীমাংসিত অবস্থায় শেষ হয় এ খেলা। বেশির ভাগ সময়ই আর্জেন্টিনা দলের পক্ষে মাঠ নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই দলের সমর্থকেরা উল্লাসে মেতে ওঠেন। খেলা শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পন্ন হওয়ায় উপভোগ করার ক্ষেত্রে যোগ করেছিল এক নতুন মাত্রা।

খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন সংগঠনের আইন সম্পাদক অপি করিম। খেলার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন সংগঠনের ক্রীড়া সম্পাদক নুরুল আলম। অতিথিদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন সংগঠনটির আপ্যায়ন সম্পাদক আরিফুল হাসান হিমেল। উপস্থিত ছিলেন স্লোগান ৭১, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নাজিমউদ্দীন হাসান শুভ এবং কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি খায়রুল ইসলাম।

পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। ক্রীড়া–সম্পর্কিত যেকোনো আয়োজনের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয় বলে মনে করি। আজকে আমরা যুবসমাজকে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে দেখছি। ইট–পাথরের শহরে অনুভূতিগুলো কৃত্রিম হয়ে যাচ্ছে।

সুতরাং যুবসমাজকে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করে তাদের রক্ষা করতে হবে। আমার বিশ্বাস, যুবসমাজকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে যেটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, তা হলো ক্রীড়াজগৎ। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো, খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো প্রকার ঝগড়া–বিবাদ হয়নি। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, এ খেলায় দুই দলই বিজয়ী হয়েছে!

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়