হাফিজের মাঠ উন্মুক্ত করা হোক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দক্ষিণ সোনাইছড়ি গ্রামে হাফিজ জুট মিলের ভেতরে বিশাল খেলাধুলার মাঠে (হাফিজের মাঠ) খেলাধুলা নিষিদ্ধ! ভাবা যায়? সীতাকুণ্ডের ঐতিহ্যবাহী এবং সবচেয়ে বড় এ মাঠ। এখানে সীতাকুণ্ড উপজেলা এবং চট্টগ্রামের অনেক স্বনামধন্য টুর্নামেন্ট আয়োজন হয়েছিল। এসব টুর্নামেন্টে অনেক গণ্যমান্য ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকতেন। এলাকার ছেলেদের খেলাধুলা আর হাঁকডাকে মুখর থাকত এই মাঠ।

কিন্তু গত ১ জুলাই ২০২০ সালে সরকারি সিদ্ধান্তে দেশের সব সরকারি পাটকল বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই এই মাঠে খেলাধুলা নিষিদ্ধ। মিল কর্তৃপক্ষ এ মাঠে প্রবেশ ও খেলাধুলা নিষিদ্ধ করে। আশপাশের এলাকাগুলোর একমাত্র খেলার মাঠ এটি। এ রকম একটা সুবিশাল মাঠ হারিয়ে এলাকার তরুণ প্রজন্ম হয়ে গেছে মুঠোফোন গেমস আসক্ত। খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হয়ে তাদের শারীরিক গঠন আজ হুমকির মুখে। স্বাভাবিক যে চাঞ্চল্য তরুণ প্রজন্মের মধ্যে থাকার কথা, তা আজ দেখাই যাচ্ছে না। অবসর সময়গুলো তাদের আজ অনলাইন জগতে কাটিয়ে দিতে হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক বিকাশ। খেলাধুলার মাধ্যমে এলাকার ছেলেদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। একসঙ্গে খেলাধুলার ফলে সবাই মিলিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে যেকোনো ধরনের সামাজিক কাজও তারা একসঙ্গে করতে পারে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় এসব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই এলাকার তরুণ সমাজ। এ মাঠে কাটানো দুরন্ত বিকেলগুলো আজ তারা আবার ফিরে পেতে চায়। আজ তারা এই মাঠে আবার খেলাধুলার আসর বসাতে চায়।

তরুণ প্রজন্মকে খেলাধুলামুখী করার জন্য সরকারের অনেক উদ্যোগ চোখে পড়ে। কিন্তু সরকারি এ মাঠে আজ কয়েক বছর যাবৎ খেলাধুলা নিষিদ্ধ। এলাকার তরুণ সমাজ আজ একসঙ্গে দাবি তুলেছে এই মাঠ ফিরে পেতে। তরুণ প্রজন্মের এই যৌক্তিক দাবি আদায়ে হাফিজ জুট মিল কর্তৃপক্ষ, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, তবে আবার এই মাঠ মুখর থাকবে সব ধরনের খেলাধুলায়।

লেখক: মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।