পাত্রী

‘নাগরিক সংবাদ’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

আম্মা এক ভাবিকে আমার জন্য মেয়ে দেখতে বলেছেন। ভাবি এই দায়িত্ব পেয়ে মহাখুশি। খুশির কোনো অন্ত নেই। ভাবি আমারে চুপি চুপি ডাকলেন। আমি দোতলার বারান্দা থেকে হাত নেড়ে জানান দিলাম আছি।

মেয়ের ফটো দেখিয়ে বলল, এই তুই নিচে আয়। তোর সঙ্গে প্রাইভেট কথা আছে।

আমি একমুহূর্ত দেরি না করে সিঁড়ি ভেঙে তরতর করে নিচে নেমে এলাম। ইচ্ছে করছিল দোতলা থেকেই লাফ দিই। পরে ভাবলাম আমার কিছু হয়ে গেলে মেয়েটার কী দশা হবে!

ভাবি বললেন, দ্যাখ, মেয়ে ঠিক আছে কি না। আমি মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখলাম। নাহ, মেয়ে মাশা-আল্লাহ যথেষ্ট সুন্দরী। চুলগুলো বেশ বড়সড়। চোখ দুটিও হরিণীর চোখের মতো। ঠোঁট দুটি গোলাপের পাপড়ির মতো পিনপিনে। সবই তো ঠিক আছে ভাবি। বললাম, সবই দেখলাম। দাঁতের ছবি নাই? দাঁত বড় না ছোট। ইঁদুরের দাঁত না বানরের দাঁত। বড়ই দেখতে ইচ্ছে করতাছে।

ভাবি ছবিটা আমার হাত থেকে বাজপাখির মতো ছুঁ মেরে নিয়ে বললেন, এইটে আমার বোন। পছন্দ হয়েছে কি না, আগে ক। দাঁত বিয়ের পরও দেখা যাবে। ওটা কোনো বিষয়ই না।

আমি নিরাশ হয়ে বললাম, পছন্দ হয়েছে। কিন্তু...

কোনো কিন্তুটিন্তু নাই। পছন্দই সবচেয়ে বড় জিনিস। আমি তাহলে কথা পাকা করে ফেলি?

এখনই? পরিবারের আরও তো সদস্য আছে। ওদের সঙ্গে আলোচনা-সমালোচনা করতে হবে না?

বিয়ে করবি তুই। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করার দরকার কী? তা ছাড়া তোর ভাইকে যা বোঝানোর, আমি গতকাল রাতেই বুঝিয়ে ফেলেছি।

আমি একটু ট্যারা চোখে তাকালাম। তাকিয়ে বললাম, আয়হায়, তাহলে তো কাম আরেকটা হয়ে গেছে।

কী কাম?

আপনে ভাইয়াকে যখনই বোঝাতে যান, তার কিছুদিন পরই আমাদের ভাস্তে-ভাস্তির আগমনের খবরটবর চলে আসে। এই টেকনিকটা আমি আজও বুঝলাম না ভাবি।

ভাবি অন্য দিকে ফিরে বলল, যাহ, দুষ্ট কোথাকার!