নানা পদক্ষেপের পরও ময়মনসিংহে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন বেহাল
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন জনপদ। শিক্ষার নগরী হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ বর্তমানে বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন। কিন্তু নানা নাগরিক অসুবিধায় শহরটি জর্জরিত। অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট ও শহরের মধ্যে দিয়ে ট্রেন লাইন থাকায় ব্যাপক যানজটের সম্মুখীন শহরটি কয়েক দিন আগে দেশের অন্যতম ধীরগতির শহর বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। আরেকটি বড় সমস্যা হলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
পর্যাপ্তসংখ্যক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব, নাগরিক অসচেতনতা, যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখায় শহরটির পরিবেশ–পরিস্থিতি ও নাগরিক হয়রানি দিন দিন বেড়েই চলছে। যদিও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তবু সেগুলোর সুফল এখনো এলাকাবাসী ভোগ করতে পারছে না।
এখানে ব্যবহৃত ছবিগুলো ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের সামনে, আকুয়া হৃদয়ের মোড়, মোহাম্মদ আলী রোড, আমলাপাড়া এলাকা থেকে তোলা হয়েছে। এভাবে উন্মুক্ত স্থানে ও ড্রেনে ময়লা–আবর্জনা পড়ে থাকা ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১’–এর সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এতে নিশ্চিতভাবে নাগরিক সমস্যা তো বটেই, সেই সঙ্গে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ ক–এর অনুচ্ছেদে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্য প্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’ যা সরকারের পরিবেশবান্ধব নীতির প্রতিফলন হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
ময়মনসিংহে কেবল সিটি করপোরেশনের মনিটরিংই যথেষ্ট নয়। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নাগরিক সচেতনতা প্রয়োজন। শহরের রাজনৈতিক নেতারা, পেশাজীবী, সিভিল সোসাইটিকে অবশ্যই এটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে ময়মনসিংহ সিটির অধিবাসীদের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
মো. রিয়াদুল আহসান নিপু, ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা, ব্যাংকার