জকসু নির্বাচন: ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রের প্রথম পদচারণ

ছবি: আলাইহিস শাওন

আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন, যা ঘিরে ক্যাম্পাসে চলছে নজরকাড়া প্রচারকার্য। ভিন্নধর্মী বিজ্ঞপ্তি, প্রচারণা কিংবা মজার ছলে সাধারণ শিক্ষার্থীর মন জয় করে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা।

মানচিত্র, প্রজাপতি, বিশ্বকাপ, পান্ডা, বুকমার্কসহ নানা প্রতিকৃতির আদলে লিফলেট ছাপিয়ে নিজেদের ইশতেহারের জানান দিচ্ছেন অনেকে। সৎ ও নিষ্ঠাবান হয়ে নিরলসভাবে শিক্ষার্থীর স্বার্থে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে বেশ প্রেরণা জুগিয়েছেন তাঁরা। প্যানেলগুলোতে কিছুটা পারস্পরিক অভিযোগ ও মতভেদের পাশাপাশি চলছে প্রাণবন্ত ও উদ্যমী প্রতিযোগিতা। তবে এ যাত্রায় সর্বোচ্চ প্রতিকূলতা পার করতে হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের, কেননা দলীয় কোনো সমর্থন ছাড়া সম্পূর্ণ নিজস্ব মতাদর্শ ও চিন্তাধারার ওপর অটল থেকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রচারকার্য চালাতে অনেক অপ্রাসঙ্গিক বাধাই পেরোতে হয়েছে তাঁদের। হয়তো প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর আত্মবিশ্বাসই তাঁদের এই দীর্ঘপথের সাহস জুগিয়েছে।

নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁদের সহপাঠী, অনুজ, অগ্রজরাও মাঠে নেমেছেন ভোট চাইতে। ব্যক্তি প্রার্থীর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও গৌরবের জায়গা থেকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করতে চেয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।

জরিপ বলছে অধিকাংশ পদে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনায় এগিয়ে আছে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত প্যানেলগুলোই। তবে শিক্ষার্থীদের আশা, রাজনীতি নয় সবকিছুর ঊর্ধ্বে ক্যাম্পাসকেই প্রাধান্য দেবেন যেকোনো দলীয় প্রার্থীই, কেননা দিনশেষে তাঁরাও শিক্ষার্থী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে উৎসব আমেজ বিরাজ করছিল ক্যাম্পাসে তার উত্তেজনা, উন্মাদনা ছুয়েছে প্রতিটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদেরও। প্রার্থী নির্বাচনে মতাদর্শের বিভেদ থাকলেও সবার প্রত্যাশা একটাই যে এই ভিড়ে যোগ্যদের উদয় ঘটবে যাঁরা হবেন শিক্ষার্থীবান্ধব এবং নতুন কিছু উপহার দেবেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।

বছর শেষের সঙ্গেই  ক্যাম্পাসে নির্বাচনী উৎসবেরও ইতি ঘটতে চলেছে, কিন্তু সূচনা হচ্ছে নতুন উদ্যম, প্রত্যাশার। প্রতিভা ও মেধার মূল্যায়নে পর্যাপ্ত যেসব সুযোগ-সুবিধা দিতে দীর্ঘদিন ব্যর্থ হয়ে আসছে প্রশাসন, সেসব অনিয়মের এবার অবসান ঘটবে বলে দৃঢ় প্রত্যাশা সবার।

*লেখক: সামিহা তাসনিম, শিক্ষার্থী, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা