আসুন, বিবেকটাকে জাগিয়ে তুলি!
আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষদের কাছে ফলাফল মানেই হচ্ছে জিপিএ–৫ কিংবা এ প্লাস!
কোনো পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলেই, শুরু হয় প্রশ্ন এ প্লাস পেয়েছ? কিংবা জিপিএ–৫ পেয়েছ? জবাবে না–সূচক জবাব বললেই গোমড়া হতে শুরু করে তাঁদের মুখ, তাঁরা নানা কটুকথা শোনাতে শুরু করেন শিক্ষার্থীদের। তাঁরা ভাবেন না, তাঁদের প্রতিটি কথা তীরের মতো বিঁধে একজন শিক্ষার্থীর মনে। আপনার কটুকথার কারণে খালি হয় একজন মায়ের বুক, অথচ সেই সন্তান নিয়ে হয়তো তার মা–বাবা অনেক স্বপ্ন বুনেছিলেন। কে নেবে এসবের দায়ভার?
কোনো কারণে একজন শিক্ষার্থীর ফল খারাপ হতেই পারে, তাই বলে তাকে কটুকথা শোনাতে হবে?
দুর্বিষহ করে তুলতে হবে তার জীবন? জীবনে ফলাফলই কি সব? হ্যাঁ, আমি মানছি যে ভালো ফলাফল জীবন গড়তে সহায়ক! খারাপ ফলাফল করলে তাকে কটুকথা শুনিয়ে কী লাভ? শুধু তা–ই নয়, আমাদের দেশে এখন নবম শ্রেণিতে ভর্তি হলেই প্রশ্ন উঠে, তুমি কি বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করছ?
অনেকে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছাড়া কেউ হলেই তাকে ইচ্ছেমতো তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন, যেন সে বিজ্ঞান বিভাগ না নিয়ে বড্ড ভুল করে ফেলেছে। অথচ বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া মানুষদের মতো অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও সমাজ বিনির্মাণে অনেক অবদান রাখছেন।
একটি রাষ্ট্রের জন্য একজন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী যেমন প্রয়োজন তেমনি একজন মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী, বাণিজ্যিক বিভাগের শিক্ষার্থীসহ সব বিভাগের শিক্ষার্থীও তেমনি প্রয়োজন। বর্তমানে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের কেন পড়াশোনা করছ প্রশ্নের জবাবে তাদের উত্তর হবে ভালো ফলাফলের জন্য। অথচ আমাদের আমাদের মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ হওয়ার জন্য পড়াশোনা প্রয়োজন! অথচ বর্তমানে অধিকাংশ পরিবারে ভালো মানুষ হওয়ার থেকে ভালো ফলাফল করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু জীবনে ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষা অর্জনের থেকে নৈতিক শিক্ষা নেওয়াটা অধিক প্রয়োজন।
তাই আসুন, নিজেদের বিবেকটাকে জাগিয়ে তুলি, যেকোনো বিভাগ হোক ফলাফল যা–ই হোক, একজন শিক্ষার্থীকে অনুপ্রাণিত করি। তার স্বপ্নপূরণে তার মা–বাবার স্বপ্নপূরণে তাকে এগিয়ে দিই। শুধু ভালো ফলাফলের জন্য নয়, নৈতিক গুণাবলিতে গুণান্বিত একজন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা লাভ করি!
লেখক: মো.আবীর আল-নাহিয়ান, শিক্ষার্থী, মালিক নাহার মেমোরিয়াল একাডেমি, কানাইঘাট, সিলেট