যুদ্ধ নয়, হোক মানবতার জয়

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে দুই পক্ষের মধ্যে টানা কয়েকদিন গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।কার্টুন: সংগৃহীত

করোনার অভিঘাত এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব। নানা সংকটের ভেতর দিয়ে হাঁটছে রাষ্ট্রগুলো। অথচ এই সময়েই একের পর এক যুদ্ধ ও সংঘর্ষ যেন নতুন করে অস্থির করে তুলছে পৃথিবীকে। ইউক্রেন-রাশিয়ার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা—সব মিলিয়ে মানবতা আজ এক গভীর সংকটে।

ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শহর-বন্দর। শিশুর মুখে নেই হাসি, প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন অসহায় মানুষ। পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থন দিলেও সেই সহায়তা অস্ত্রনির্ভর; শান্তির কূটনীতি সেখানে অনুপস্থিত। গাজায় বর্বর হামলায় মৃত্যু যেন নিত্যদিনের খবর। এমনকি মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর নীরবতা এখন ব্যথা দেয়।

সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। সীমান্ত লঙ্ঘন করে বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যদিও এখনো পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়নি, তবে সেই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দুই পারমাণবিক শক্তির যেকোনো সংঘর্ষ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার চিত্রই পাল্টে দিতে পারে।

‘নাগরিক সংবাদ’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

ভারতের অভ্যন্তরেও নানা ধরনের রাজনৈতিক গুঞ্জন ঘুরছে। খ্রিষ্টান রাষ্ট্র গঠনের কথাও উঠে আসছে বিভিন্ন মাধ্যমে। যুদ্ধ সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি চীন—যে একাধিক সীমান্ত বিরোধে ভারতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে—এই উত্তেজনাকর পরিবেশকে ব্যবহার করতে চাইবে নিজের কৌশলগত স্বার্থে।

এখনো আমরা সরাসরি যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছি না। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন—রাষ্ট্রনেতাদের শুভবুদ্ধির উদয়। প্রতিশোধ নয়, আলোচনার পথেই হতে পারে সমাধান। যুদ্ধ নয়, মানবতার জয়ই হোক আমাদের কামনা।

লেখক: মো. ফজলুল করিম, অধ্যাপক, বিজিই বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল।